খুলনা | শুক্রবার | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৩ পৌষ ১৪৩১

সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার, গুজব ছড়ালে ব্যবস্থা

শুভ বড়দিন আজ

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৩ এ.এম | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪


খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’ আজ (বুধবার)। এই ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্ট এদিনে বেথলেহেমে জন্মগ্রহণ করেন। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা এ দিনটিকে ‘শুভ বড়দিন’ হিসেবে উদ্যাপন করে থাকেন। খ্রিস্টান স¤প্রদায়ের মানুষরা বিশ্বাস করেন, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচারের মাধ্যমে মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতেই প্রভু যিশুর পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের খ্রিস্টান ধর্মানুসারীরাও এ দিন যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্য, আচারাদি, আনন্দ-উৎসব এবং প্রার্থনার মধ্যদিয়ে ‘শুভ বড়দিন’ উদযাপন করবেন। এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গির্জাগুলোকে সাজানো হয়েছে নতুন-আঙ্গিকে। এছাড়াও সোমবার সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন গির্জা এবং তারকা-হোটেলগুলোতে ব্যবস্থা করা হয়েছে আলোক সজ্জার।  
এদিকে বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বড়দিন উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি। অপর দিকে দিনটি উপলক্ষে অনেক খ্রিস্টান পরিবারে কেক তৈরি করা হবে, থাকবে বিশেষ খাবারের আয়োজন। এছাড়াও দেশের অনেক অঞ্চলে আয়োজন করা হয়েছে কীর্তনের পাশাপাশি ধর্মীয় গানের।
খ্রিস্টান স¤প্রদায়ের অনেকেই আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য বড়দিনকে বেছে নেন। পরিবারের সদস্যদের সাথে আনন্দ ভাগ করে নিতে অনেকেই রাজধানী ছেড়ে গিয়েছেন গ্রামের বাড়িতে।
সারাদেশে তারকা হোটেলগুলোতে আলোক সজ্জার পাশাপাশি হোটেলের ভিতরে কৃত্রিম ভাবে স্থাপন করা হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি ও শান্তাক্লজ। বড়দিনের প্রাক্কালে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিভিন্ন গির্জায় বিশেষ প্রার্থনাও অনুষ্ঠিত হয়। আর বুধবার সকাল থেকে শুরু হবে বড়দিনের প্রার্থনা।
সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার: খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ উপলক্ষে সারাদেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গীর্জাগুলোর প্রবেশ মুখে বসানো হয়েছে বা আর্চওয়ে মেটাল ডিটেক্টর ও সিসি ক্যামেরা। এছাড়া গির্জার আশপাশে মোতায়েন থাকছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য। ভার্চুয়াল জগতে যেকোনও ধরনের গুজব বা মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অপচেষ্টা করলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানায়, বিশেষ নিরাপত্তায় থাকবে ঢাকা ও বিভাগীয় শহরের গুরুত্বপূর্ণ গীর্জাগুলোতে। একই সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বাড়তি নজরদারি করবে। বড়দিনকে কেন্দ্র করে কেউ যেন কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে, সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এসব উদ্যোগ নিয়েছে।
পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, বড়দিনকে ঘিরে কোনও নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। তবুও দিনটি নির্বিঘেœ উদ্যাপনে সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সব ইউনিটকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে নজরদারি করতে থাকছে সাইবার মনিটরিং টিম।  
এছাড়া দিনটিকে ঘিরে সার্বিকভাবে সব ধরনের ঝুঁকি পর্যালোচনা করে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।
সংস্থাটি জানিয়েছে, দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। র‌্যাব ডগ স্কোয়াড ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সার্বক্ষণিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ গির্জা, উপাসনালয় ও গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান স্থলে প্রয়োজনীয় স্যুইপিং কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছে। যেকোনও উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় র‌্যাব স্পেশাল ফোর্স-এর কমান্ডো টিমকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ভার্চুয়াল জগতে যেকোনও ধরনের গুজব বা মিথ্যা তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধে র‌্যাব সাইবার মনিটরিং টিম অনলাইনে সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রাখছে। যারা সাইবার জগতে মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে উসকানি দেওয়ার মাধ্যমে সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি বিনষ্ট করার অপচেষ্টা করবে, তাদেরকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, নিরাপত্তা বিঘিœত হবে, এমন কোনও তথ্য এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে নেই। নিরাপত্তা নিয়ে কোনও শঙ্কা ও নেই। তবু আমরা সতর্ক থাকছি, যেন কোনও ঝামেলা না হয়। সারা দেশে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতনসহ এসব বিষয়ে ইন্টারনাল মিটিং করা হয়েছে। দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আশা করি, সবার সহযোগিতায় অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে বড়দিন উদযাপন হবে।  

্রিন্ট

আরও সংবদ