মেহেরপুরে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাসলিমা খাতুনকে (৫০) ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার ভাইদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে মেহেরপুরের চাঁদবিল গ্রামের একটি বিল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তাসলিমা খাতুন চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ড বাগানপাড়া এলাকার আব্দুল হান্নানের স্ত্রী। তিনি তার বাবার বাড়ি চাঁদবিলে এসে মাঝে মাঝে বসবাস করতেন।
তার স্বামী আব্দুল হান্নানের অভিযোগ, মা-বাবার সম্পত্তির ১২ বিঘা জমির মধ্যে সাড়ে ১০ কাঠা জমি মুখে মুখে তার স্ত্রীকে দিলেও রেজিস্ট্রি করে দেয়া হয়নি। তার বাবার অবশিষ্ট জমির প্রাপ্য ভাগ চাওয়ায় তাসলিমার ভাই আব্দুল বারেক, মন্টু আলী, লাল্টু হোসেন, আব্দুল হক, কান্টু হোসেন মিলে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে হত্যা করেন।
তাসলিমার ছেলে রনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে একটি জমি নিয়ে তার কয়েক মামার সাথে বিবাদ চলে আসছিল। জমির বিষয় নিয়েই তা মা তাছলিমা তার বাবার বাড়িতে এসেছিলেন। এটি একটি ‘নৃশংস হত্যাকাণ্ড’ বলে অভিযোগ করেন তিনি। একই সাথে দ্রুত এর সাথে জড়িতদের আটক করে বিচারের আওতায় আনার দাবিও জানান তিনি।
প্রতিবেশী আলেয়া খাতুন জানান, তাসলিমা খাতুনের স্বামীর বাড়ি চুয়াডাঙ্গায় হলেও বছর তিনেক আগে থেকে তার বাবা মরহুম বরকত আলীর জমিতে চাঁদবিলে এসে মাঝে মাঝে বসবাস করতেন। বাবার জমির ভাগ নিতেই তিনি এখানে থাকতেন। আবার চুয়াডাঙ্গাতেও যেতেন।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবা উদ্দিন জানান, তাছলিমা দু’দিন আগে চুয়াডাঙ্গা থেকে চাঁদবিল গ্রামে তার বাবার বাড়িতে আসেন। বুধবার দুপুর থেকে তার আর সন্ধান মেলেনি। সন্ধান না পেয়ে তার ছেলে রনি মেহেরপুর সদর থানাকে বিষয়টি অবহিত করেন।
ওসি আরো জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় লোকজন বিলের একটি কচুরিপানার মাঝে সন্দেহজনক কিছু দেখে তার ছেলেসহ পরিবারের লোকজনকে খবর দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে সদর থানার একটি দল। কচুরিপানা সরিয়ে লাশটি উদ্ধার করা হয়। জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ভাইদের হাতে তিনি নিহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।
এদিকে তাসলিমা খাতুনের লাশ উদ্ধারের পরপরই তার ভাইদের পরিবারের সবাই পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।