খুলনা | বৃহস্পতিবার | ০২ জানুয়ারী ২০২৫ | ১৯ পৌষ ১৪৩১

সেই বাস চালক করতেন নেশা, লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ দুই বছর আগে, ছিল না ফিটনেস সনদ

খবর প্রতিবেদন |
০১:২১ এ.এম | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪


ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের টোলপ্লাজায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেলের ৬ আরোহী নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার বাস চালক গাঁজা সেবন করতেন। এমনকি, তার ড্রাইভিং লাইসেন্সও নবায়ন ছিল না।
র‌্যাব জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে নূরুদ্দিন র‌্যাবকে বলেছেন ১০ বছর ধরে বাস, ট্রাক, পিকআপসহ নানা ধরনের গাড়ি চালিয়ে আসছেন। তবে তার ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ দুই বছর আগে শেষ হয়ে গেছে। তিনি যে বাসটি চালাচ্ছিলেন, সেটির ফিটনেস সনদ ছিল না।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবের কাছে বাসচালক মোহাম্মদ নুর উদ্দিন এসব তথ্য দেয়। র‌্যাব-১০ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার তাপস কর্মকার (মিডিয়া অফিসার) বাস চালকের বরাতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তাপস কর্মকার জানান, বাসটি অনেকদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়েছিল। মেরামতের পর সেদিনই সড়কে নামানো হয়। বাসচালক প্রথম থেকেই বুঝতে পেরেছিল বাসের ব্রেকে সমস্যা ছিল। বাস মালিককে সেটা জানালে, তিনি সড়কে আস্তে আস্তে চালিয়ে যেতে বলেন।
তিনি আরো জানান, দুর্ঘটনার সময় বাসটিকে অনেকবার ব্রেক কষেও থামানো যায়নি বলে আমাদের কাছে চালক দাবি করেছেন।
র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘‘বাস চালক স্বীকার করেছেন, তিনি গাঁজা সেবন করতেন। তবে, শুক্রবার বাস চালানোর সময় গাঁজা সেবন করেননি বলে দাবি করেছেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় দাঁড়িয়ে থাকা তিনটি গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া যাত্রীবাহী বেপারী বাসের চালক মোহাম্মদ নূরুদ্দিনকে আটক করে র‌্যাব। ঘটনার পরপরই কৌশলে বাস থেকে নেমে পালিয়ে যান তিনি। 
র‌্যাব সদর দফতরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা, র‌্যাব-১০ ও র‌্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজ এলাকা থেকে নূরুদ্দিনকে (২৯) আটক করেছে। 
তার বাড়ি ভোলার দৌলতখানের মধ্য জয়নগরে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি র‌্যাবকে বলেন, দুর্ঘটনার পর কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে অটোরিকশায় করে আবদুল­াহপুরে যান। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে নারায়ণগঞ্জে ফুফাতো বোনের বাসায় যান। ওই বাসা থেকে তাকে আটক করে র‌্যাব।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় দাঁড়িয়ে থাকা তিনটি গাড়িতে ধাক্কা দেয় বেপারী পরিবহনের একটি বাস। এতে একই পরিবারের চার জনসহ দু’টি গাড়ির ছয় আরোহী নিহত ও চার জন আহত হন। নিহতরা হলেন মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নন্দনকোনা গ্রামের বাসিন্দা ও দুর্ঘটনা কবলিত প্রাইভেটকারের মালিক নুর আলমের স্ত্রী আমেনা আক্তার (৪০), তার বড় মেয়ে ইসরাত জাহান (২৪), ছোট মেয়ে রিহা মনি (১১), ইসরাত জাহানের ছেলে আইয়াজ হোসেন (২), মোটরসাইকেলের চালক সুমন মিয়ার স্ত্রী রেশমা আক্তার (২৬) ও তার ছেলে মোঃ আবদুল­াহ (৭)।
গাজীপুর অঞ্চলের হাইওয়ে পুলিশের সুপার আ ক ম আখতারুজ্জামান বসুনিয়া বলেন, ‘দুর্ঘটনার বিষয়ে কেরানীগঞ্জ থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। শুধু বাস চালকের বিরুদ্ধে নয়, দুর্ঘটনায় অন্য যারা সংশ্লিষ্ট তাদের বিরুদ্ধেও মামলা হবে।’

্রিন্ট

আরও সংবদ