খুলনা | বুধবার | ০১ জানুয়ারী ২০২৫ | ১৮ পৌষ ১৪৩১

দক্ষিণ কোরিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ১৮১ আরোহীর মধ্যে ১৭৯ জনই নিহত

খবর প্রতিবেদন |
১১:৪২ এ.এম | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪


দ. কোরিয়ায় বিমান দুর্ঘটনা: পাখির কারণে ল্যান্ডিং গিয়ারের ত্রুটি, গেল ১৭৯ জনের প্রাণ

দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান বিমানবন্দরে একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৭৯ জন নিহত হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত বিমানটি থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে মাত্র দুজনকে। স্থানীয় সময় আজ রোববার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, বিমানটিতে পাখির কারণে ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইয়ুনহাপের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ইয়ুনহাপের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যে যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে কর্তৃপক্ষের মতে, বিমানটির ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটি দেখা দেওয়ার পর হয়তো বিমানটি ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করতে বাধ্য হয়। তবে স্থানীয় অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থার প্রধানের অনুমান, সম্ভবত পাখির সংঘর্ষ এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়েছিল।

স্থানীয় সময় আজ রোববার সকালে একটি যাত্রীবাহী বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে পাশের দেয়ালে আঘাত হানলে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেজু এয়ারের ফ্লাইট ৭ সি-২২১৬ স্থানীয় সময় আজ রোববার সকাল ৯টা ৭ মিনিটে মুয়ান বিমানবন্দরে অবতরণের সময় এ দুর্ঘটনার শিকার হয়। উদ্ধারকারীরা দুজনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।

বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ার পর বিমানটি দেয়ালে আঘাত করলে সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায়। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, বিমানটির ল্যান্ডিং গিয়ার কাজ না করায় এটি রানওয়ে বরাবর অনেক দূর পর্যন্ত ছেঁচড়ে যায় এবং দেয়ালে আঘাতের ফলে বিমানটিতে আগুন ধরে যায় এবং এর ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন দিকে।

মুয়ান বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানের অবতরণ গিয়ার বা ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটির কারণে এটি ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করার চেষ্টা করে এবং তখনই দুর্ঘটনাটি ঘটে। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, প্রথমবার বিমানটি অবতরণ করতে ব্যর্থ হয় এবং এরপর বিমানটি ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করতে বাধ্য হয়। কর্তৃপক্ষের মতে, বিমানটি সম্ভবত রানওয়েতে নামার পর গতি কমাতে ব্যর্থ হয় এবং শেষ পর্যন্ত বিমানবন্দরের বাইরের প্রান্তের দেওয়ালের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার ফলে বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। তারা জানিয়েছেন, বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারের টায়ারগুলো খাপ থেকে বের হয়ে আসতে দেখা যায়নি। এ কারণেই সম্ভবত পাইলট বিমানটিকে ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করানোর প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, পাখির সংঘর্ষের কারণেই ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটি দেখা দিয়েছিল।

স্থানীয় মুয়ান ফায়ার স্টেশনের প্রধান লি জং-হিউন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে অনুমান করা হচ্ছে, একটি পাখির আঘাত এবং খারাপ আবহাওয়া। তবে, সঠিক কারণ জানতে যৌথ তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষেই আসল কারণ জানানো হবে।’

উল্লেখ্য, দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটল। শুক্রবার নতুন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করা চোই সুং-মোক এই প্রথম এমন একটি জাতীয় সংকট মোকাবিলা করছেন। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উদ্ধারকাজ শেষ হলে নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করে তাঁদের পরিবারের কাছে খবর দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

এদিকে, দুর্ঘটনার পর দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে কম খরচের বিমান পরিবহন সংস্থা জেজু এয়ার ক্ষমা চেয়েছে। তারা জানিয়েছে, তারা এই দুর্ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট সবাইকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, ‘জেজু এয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা এ দুর্ঘটনার জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা এ ঘটনায় সম্ভাব্য সবকিছু করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। উদ্বেগের কারণ হওয়ায় আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

্রিন্ট

আরও সংবদ