খুলনা | রবিবার | ০৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ২১ পৌষ ১৪৩১

বিদায় ২০২৪ স্বাগত ২০২৫

|
০১:৫৪ এ.এম | ০১ জানুয়ারী ২০২৫


এক দুই তিন করে ফুরিয়ে গেল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দের সবগুলো দিন। আমাদের জীবন থেকে, পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেল একটি বছর। ভালো-মন্দ মেশানো ২০২৪, বিদায়। কিন্তু এ বিদায় জানানোর ভাষা সবার এক নয়। কেউ কেউ বছরটা জীবন থেকে নীরবেই চলে যেতে দেয়, কেউ কেউ বছরের শেষদিনে হাতড়ে বেড়ায় পুরনো স্মৃতি। কেউবা আনন্দ-উল­াসের মধ্য দিয়ে পুরনো বছর বিদায় জানায়। আর বরণ করে নেয় নতুন বছর। পৃথিবীর দেশে দেশে ভিন্নভাবে আধুনিক আর ঐতিহ্যবাহী উৎসবের মাধ্যমে পুরনো বছর বিদায় আর নতুন বছরটা স্বাগত জানানোর রীতি প্রচলিত আছে। এটা পালিত হয় কোথাও সরকারিভাবে, কোথাও কোনো দল বা গোষ্ঠী।  
নতুন বছরের আগমনী গান ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। দেয়ালে দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখার জন্য বের করা হয়েছে ক্যালেন্ডার, যেখানে সারা বছরের প্রতিটি দিনের হিসাব আর বারের নাম নিখুঁতভাবে লেখা থাকে। একটি বছর বারোটি নামের বারোটি মাসে ভাগ করে নতুন বছরটা গুছিয়ে কর্মমুখর করে তুলতে এখন সবাই ব্যস্ত। তবে এ ক্যালেন্ডারের ধারণা প্রথম আসে গ্রহ-নক্ষত্র স্থানান্তরের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে। প্রাচীনকালে মানুষ লক্ষ্য করেছিল সূর্য, চাঁদ, তারা নিজস্ব পথে চলাচল করে। দীর্ঘদিন পর্যবেক্ষণ করে মানুষ এ গতিপথগুলো বুঝতে শেখে। তারা আরও লক্ষ্য করে, গ্রহ-নক্ষত্রগুলো নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে। কখন, কোন তারাটি কোথায় অবস্থান করলে ফসল বুনতে বা কাটতে হবে, এসব তারা জেনে ফেলে। বিভিন্ন ঋতুর শুরু বা শেষটাও তারা এভাবেই জেনেছিল। আর ক্রমে এ ধারণা থেকে বর্ষপঞ্জির প্রচলন ঘটে। পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র সূর্য এবং উপগ্রহ চাঁদকে লক্ষ্য করে শুরুতে দু’ধরনের ক্যালেন্ডারের প্রবর্তন হয়। প্রায় ছয় হাজার বছর আগে মিসরীয়রা প্রথম লক্ষ্য করেছিল, ৩৬৫ দিনে এক সৌরবছর ধরা যেতে পারে। আমাদের দেশে দু’ধরনের ক্যালেন্ডারের হিসাব প্রচলিত। ইংরেজি বর্ষের হিসাব ধরা হয় যীশুখ্রিস্টের জন্মদিন থেকে আর বাংলা বছরের ক্যালেন্ডারের প্রচলন করেন মোগল সম্রাট আকবর। এছাড়া আরবি বর্ষপঞ্জির চলও এ দেশে আছে। আরবি বর্ষপঞ্জি চান্দ্রমাসের হিসাবে গণনা করা হয়। এ হিসাবে ৩৫৪ দিনে এক বছর। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যেদিন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন, সেদিন থেকেই আরবি বছরের গণনা শুরু হয়। ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ত্রয়োদশ পোপ গ্রেগরির নামানুসারে প্রচলন করা হয় গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। এ বর্ষপঞ্জি এত নিখুঁত যে, প্রতি বছর মাত্র ২৬ সেকেন্ডের পার্থক্য দেখা যায়। হিব্র“ ভাষার বর্ষপঞ্জি মনে করা হয় বিশ্বের প্রাচীনতম ক্যালেন্ডার। বলা হয়, যীশুখ্রিস্টের জন্মের ৩৭৬০ বছর আগে এর সূচনা হয়েছে। ৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার জ্যোতিষী সোসিজিনিসকে দিয়ে যে বর্ষপঞ্জির প্রবর্তন করেন, সেটি জুলিয়ান ক্যালেন্ডার নামে পরিচিত। এটি চালু ছিল প্রায় ১৫০০ বছরের কিছু বেশি সময় ধরে। চীনা বর্ষপঞ্জি অনুসারে, প্রতি বছর চিহ্নিত করা হয় নানা প্রাণির নামে। পুরানো জরা-জীর্ণ পেছনে ফেলে ইংরেজি নববর্ষ আমাদের ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ এই কামনা করি। সেই সঙ্গে একটি সুখী, সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে নতুন বাংলাদেশ জোর কদমে সামনে এগিয়ে যাক এই প্রত্যাশা আমাদের সকলের হোক।

্রিন্ট

আরও সংবদ