খুলনা | শনিবার | ০৪ জানুয়ারী ২০২৫ | ২১ পৌষ ১৪৩১

ইউক্রেনের ওপর দিয়ে ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস পাঠানো বন্ধ

খবর প্রতিবেদন |
০১:৩০ পি.এম | ০১ জানুয়ারী ২০২৫


ভয়াবহ যুদ্ধের মধ্যেও ইউক্রেনের ওপর দিয়ে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ করে আসছিল রাশিয়া। আর এই অসাধ্য সাধন হয়েছে কেবল দেশ দুটির দুই গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তি থাকার কারণে। কিন্তু চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই ইউক্রেনের ওপর দিয়ে ইউরোপের দেশগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেল। খবর বিবিসির।

এর ফলে নতুন বছরের শুরুতেই ইউরোপীয় গ্যাস বাজারে মস্কোর দীর্ঘ সময়ের আধিপত্যের পর্দা নামল।

বুধবার (১ জানুয়ারি) ইউক্রেনের গ্যাস ট্রানজিট অপারেটর নাফটোগাজ এবং রাশিয়ার গ্যাজপ্রমের মধ্যে পাঁচ বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনবাসীর রক্তের বিনিময়ে রাশিয়াকে বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ উপার্জনের অনুমতি দেবে না তার দেশ। ইউরোপীয় কমিশনকে গ্যাস সরবরাহ লাইন প্রস্তুতির জন্য এক বছর সময় দিয়েছে ইউক্রেন।

এদিকে ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট শেষ হওয়ার পরও মহাদেশের গ্যাস ব্যবস্থা স্থিতিস্থাপক এবং সহনীয় রাখার পর্যাপ্ত ক্ষমতা তারা রাখে। ইউক্রেনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও রাশিয়া এখনো কৃষ্ণ সাগরজুড়ে তুর্কস্ট্রিম পাইপলাইনের মাধ্যমে হাঙ্গেরির পাশাপাশি তুরস্ক এবং সার্বিয়াতে গ্যাস পাঠাতে পারবে।

২০২২ সালে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ শুরু পর থেকে রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করেছে ইইউ। তবে বেশ কয়েকটি ইইউ সদস্য রাষ্ট্র এখনো সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল, যার ফলে রাশিয়া বিপুল অর্থ উপার্জন করছে।

পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২১ সালে ৪০ শতাংশ রাশিয়ান গ্যাস আমদানি করলেও ২০২৩ সালে তা কমে ১০ শতাংশেরও কম ছিল। তবে স্লোভাকিয়া এবং অস্ট্রিয়াসহ বেশ কয়েকটি ইইউ সদস্য রাশিয়া থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে গ্যাস আমদানি অব্যাহত রেখেছে।

অস্ট্রিয়ার জ্বালানি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছে, কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়া সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়াতে সংকট তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। ইউক্রেনের সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে স্লোভাকিয়ার সঙ্গে প্রচণ্ড উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। শুক্রবার স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনার জন্য মস্কোতে হঠাৎ সফর করে ইউক্রেনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার হুমকি দিয়েছেন।

উল্লেখ্য ইউরোপে রাশিয়ার প্রাচীনতম গ্যাস রফতানির রুট ছিল ইউক্রেন। সোভিয়েত আমলে নির্মিত একটি পাইপলাইন দিয়ে এই গ্যাস সরবরাহ করা হতো।

রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে পাঁচ বছরের ট্রানজিট চুক্তির মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা।

ইউক্রেনের গ্যাস ট্রানজিট অপারেটর মঙ্গলবার যে তথ্য সরবরাহ করেছে, তাতে দেখা গেছে, রাশিয়া ১ জানুয়ারি থেকে কোনো গ্যাস পাঠানোর অনুরোধ করেনি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিকল্প গ্যাসের উৎস খোঁজার মাধ্যমে রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরতা ব্যাপকভাবে হ্রাস করে। রাশিয়ার গ্যাসের অবশিষ্ট ক্রেতা, যেমন-স্লোভাকিয়া ও অস্ট্রিয়া বিকল্প সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ