খুলনা | রবিবার | ০৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ২১ পৌষ ১৪৩১

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনীতে ড. ইউনূস

‘মানুষের পথ হলো উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা শ্রমিক হওয়া নয়’

খবর প্রতিবেদন |
০১:৩৩ এ.এম | ০২ জানুয়ারী ২০২৫


দেশের তরুণ থেকে বৃদ্ধ সবাইকে উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগানো ও উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করতে আহŸান জানিয়েছেন অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, মানুষের পথ হলো সৃষ্টি করা, উদ্যোক্তা হওয়া। শ্রমিক হওয়া মানুষের পথ না। বুধবার ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। রাজধানীর পূর্বাচলে বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে মাসব্যাপী এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশের বিপুল জনগোষ্ঠী থাকাটা অপার সম্ভবনার জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, দেশটি অপূর্ব সুযোগের দেশ। আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি অসংখ্য মানুষ। বেশির ভাগ তাজা তরুণ। এ রকম শক্তি খুব বেশি দেশের কপালে আসেনি। তাই জোর দিচ্ছি তারুণ্যের শক্তিকে উন্মোচিত করার।
তিনি বলেন, মানুষ মাত্রই উদ্যোক্তা। শ্রমিক হওয়া মানুষের পথ না। মানুষের পথ হলো সৃষ্টি করা। অন্যের হুকুমে চলা না। এই মেলা একটা সুযোগ দেয় সৃষ্টি করার। এ সুযোগটা যেন আমরা গ্রহণ করি।
বাণিজ্য মেলায় অসংখ্য তরুণ-তরুণী, নারী, বয়স্ক মানুষের অংশগ্রহণকে সাধুবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অসংখ্য রকমের কাজ করে এই তরুণরা। কিন্তু কোনো স্বীকৃতি নাই। শুধু ছেলে তরুণ না, মেয়ে তরুণও আছেন। গৃহিনী, বয়স্ক নারী, চার পাঁচ ছেলে মেয়ের মা ব্যবসা করছেন। ক্যাটারিং ব্যবসা করছেন। কিন্তু স্বীকৃতি নাই। যারা নানান ব্যস্ততার মাঝেও তারা সময় বের করে ব্যবসা করছেন।
ড. ইউনূস বলেন, এই মেলার উদ্দেশ্য হচ্ছে উৎসাহ দেওয়া। এই মেলা সারাদেশে চলবে। ভবিষ্যতের মেলা সারা দেশজুড়ে হবে। জায়গায় জায়গায় হবে। জেলায় জেলায় উপজেলায় হবে। সেখান থেকে বাছাই করে এই মেলায় (ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা) জায়গা পাবে। যারা জায়গা পাবে তাদের সব খরচ সরকার বহন করবে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আন্তর্জাতিক তরুণরা বাংলাদেশ আসবে, দেখতে আসবে। শিখতে আসবে।
ড. ইউনূস বলেন, দেশের তরুণরা ঘরে বসে আন্তর্জাতিক ব্যবসা করছে। সফটওয়্যার বিক্রি করে দিচ্ছে। দেশ আর দুনিয়ার সীমারেখা এখন আর নাই। তরুণরা আমাদের যে পর্যায়ে নিয়ে এসেছে তাতে সব একাকার হয়ে গেছে।
মানুষকে উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা হওয়ার উৎসাহ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, একবার যদি বুদ্ধিটা খেটে যায় তাহলে সারা দুনিয়ায় কাজে লেগে যাবে। তরুণদের সঙ্গে বিশ্বের যোগাযোগটা করে দেওয়াই মেলার উদ্দেশ্য।
বয়স্ক নাগরিকদের মূল্যায়ন করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, একজন মানুষ মৃত্যু পর্যন্ত সচল। তাই রিটায়ার্ড বলতে কিছু নাই। যতক্ষণ পর্যন্ত চিন্তা করতে পারি, বুদ্ধি দিতে পারি ততক্ষণ পর্যন্ত আমি সচল। বয়স্কদের জন্যও মেলায় সুযোগ থাকবে। সেটাই হবে মেলা, যেখানে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার সম্মিলন হবে।
প্রধান অতিথি বলেন, টাকা বুদ্ধির পিছে পিছে ঘুরবে। আমাদের মানুষ তার নিজের দেশ নিজেই সৃষ্টি করবে। উদাহরণ সৃষ্টি করবে দুনিয়ার জন্য।
এদিন ফিতা কেটে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিনসহ আরও অনেকে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথ আয়োজনে চতুর্থবারের ন্যায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই মেলা।  
দেশীয় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিদেশি ৭ দেশের ১১ প্রতিষ্ঠান এবারের মেলায় অংশ নেবে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হলো ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া।

্রিন্ট

আরও সংবদ