খুলনা | রবিবার | ০৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ২১ পৌষ ১৪৩১

কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দুই যুবদল নেতা খুন

খবর প্রতিবেদন |
০১:৩৬ পি.এম | ০২ জানুয়ারী ২০২৫


বরগুনায় দিনেদুপুরে যুবদলের এক নেতার হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার মেহেরপুরে সংগঠনটির আরেক নেতাকে গলাকেটে হত্যার খবর পাওয়া গেছে। দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে। প্রথম হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে বরগুনার পাথরঘাটায়। ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠান শেষে শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার পথে বুধবার দুপুরে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হন যুবদল নেতা নাসির উদ্দিন ওরফে কাটা নাসির। এর কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে মেহেরপুরের গাংনীতে মারা যান আলমগীর হোসেন নামে সংগঠনটির আরেক নেতা। রাতের কোনো এক সময় তাকে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বরগুনা : বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে বরগুনার পাথরঘাটায় ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠান শেষে শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হন যুবদল নেতা নাসির উদ্দিন ওরফে কাটা নাসির। উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ঘুটাবাছা এলাকায় তাকে হত্যা করা হয়।

নাসির উদ্দিন বরগুনার পাথরঘাটা পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে এবং ওই ওয়ার্ডের যুবদল নেতা ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী আনছার মোল্লা জানান, দুপুর দেড়টার দিকে হঠাৎ করে চিৎকার শুনে বাড়ি থেকে রাস্তায় বের হয়ে দেখি নাসিরকে কুপিয়ে দু’জন পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও জানান, অন্তত ৮ থেকে ১০ জন লোক ছিল। কোপানোর পর অন্যরা পালিয়ে গেলেও রাব্বি ও হাসান নামে দু’জনকে চিনতে পেরেছেন তিনি।

হত্যাকাণ্ডের আগে সকালে পূর্ব শত্রুতার জেরে পাথরঘাটা নতুন বাজার ব্রিজের উত্তর পাড়ে খাদ্য গুদামের সামনে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে নাসির মোটরসাইকেল চালক হাসানকে থাপ্পড় মারেন। ওই জের ধরেই নাসিরকে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

পাথরঘাটা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হাফেজ আলমগীর বলেন, নাসির হাসানকে চড় থাপ্পড় মারলে আমরা স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে দেই।

কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহাদাত হোসেন বলেন, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম রয়েছে এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। হাসপাতালে আসার আগেই মারা যায় নাসির।

পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক বলেন, আমরা যতদূর জানতে পেরেছি ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অপরাধী যেই হোক না কেন দ্রুত গ্রেফতার করে তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

পাথরঘাটা থানার ওসি মো. মেহেদী হাসান বলেন, কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মেহেরপুর: আজ বৃহস্পতিবার সকালে জেলার গাংনী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আলমগীর হোসেনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। উপজেলার শহড়াবাড়িয়া-কামারখালী মাঠের কাঁচা রাস্তার ডান পাশের একটি ট্রেনের মধ্যে থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

আলমগীর হোসেন এক নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি ও সদ্য প্রবাস ফেরত এবং গাংনী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড বাঁশবাড়িয়া বাজার পাড়ার মইনুদ্দিনের মেজো ছেলে। গাংনী থানা ওসি বানী ইসরাইল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহত আলমগীর হোসেনের ছোট ভাই আলামিন হোসেন জানান, দুই মাস আগে তার মেজ ভাই আলমগীর হোসেন দুবাই থেকে বাড়িতে ফিরেছে। সে গাংনী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে বের হয় এবং রাত দশটার মধ্যে আবারও বাড়িতে ফিরে আসে। বুধবার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। পরে কল দিলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ  পাওয়া যায়। এরপর থেকে বিষয়টি আত্মীয়-স্বজন এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার সহড়াবাড়িয়া এলাকায় একজনের গলাকাটা মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে সেখানে যাই। পরে গিয়ে দেখি আমার ভাইয়ের নিথর দেহ পড়ে আছে।

তিনি আরও জানান, তার মেজ ভাই একটা সাদামাটা, সহজ-সরল মানুষ। জানামতে তার কোনো শত্রু নাই। সংবাদ পেয়ে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা, ডিবি ওসি গোপাল কুমারসহ পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

গাংনী থানার ওসি বানি ইসরাইল জানান, উপজেলার সহড়াবাড়িয়া-কামারখালী কাঁচা রাস্তার পাশে এক ব্যক্তির গলাকাটা মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে এ বিষয়টি এখনও জানা সম্ভব হয়নি। তবে রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ মাঠে রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ