খুলনা | মঙ্গলবার | ০৭ জানুয়ারী ২০২৫ | ২৩ পৌষ ১৪৩১

বিডিআর বিদ্রোহ

সেদিন সেনাকুঞ্জে শেখ হাসিনাকে জুতা ছুড়ে মারেন সেনা অফিসাররা

খবর প্রতিবেদন |
১২:৪৬ এ.এম | ০৪ জানুয়ারী ২০২৫


২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্র“য়ারি সেই সময়ের বিডিআর সদরদপ্তরে ঘটে যাওয়া বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন নিহত হন। দেশের সীমানা পেরিয়ে গোটা বিশ্বে ওই ঘটনা আলোড়ন তোলে। এ হত্যাকাণ্ডের পরপরই  সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যান সেনাকুঞ্জে। সেই সময় তার সঙ্গে যা ঘটে তার বর্ণনা দিয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবঃ) আমিন। গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষৎকারে সেই দিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। 
সেনা কর্মকর্তা আমিন জানান, ১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) আসেন সেনাকুঞ্জে। ১০০০-১৫০০ কমান্ডো; কোয়ালিফাইড অফিসার। প্রত্যেকটা অফিসার কমান্ডো করা। উত্তেজিত অফিসার, রক্ত টগবগ করছে।  আমরা তখন জেনারেল হয়ে গেছি। আমাদের একটু রক্ত টগবগ কমে গেছে। মানে এই উত্তেজিত অফিসারকে ঠান্ডা করা- টগবগ করতেছে তাদের কী যে কষ্টের ব্যাপার ছিল এটা কল্পনাও করা যায় না। আমরা আর ঘুমাতে পারতাম না। এদের মধ্যে সাহারা খাতুন আসতে চান। অফিসাররা বললেন, সাহারা খাতুন থাকতে পারবেন না। এদের মধ্যে ফারুক খান আসতে চান। অফিসাররা বললেন না, উনি থাকতে পারবেন না। তারপর শুধু কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীকে এ্যালাউ করলেন অফিসাররা আর জেনারেল তারিক ছিলেন, আর কোনো সিভিলিয়ান ছিল না। কাউকে এ্যালাউ করা হয়নি, এগুলোকে ম্যানেজ করা খুবই কঠিন অবস্থা ছিল। 
ওইদিনের ঘটনা বর্ণনা করে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমিন আরো বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) আসলেন, বক্তৃতা শুরু করলেন। কিছুক্ষণ বলার পর অফিসাররা উত্তেজিত হয়ে গেলেন। পয়েন্টে পয়েন্টে বলা হচ্ছে। এক পর্যায়ে অফিসাররা উত্তেজিত হয়ে গেলেন। ১০০০ অফিসার; বিশাল বোর্ড অডিটোরিয়াম; সেনাকুঞ্জ; সব অফিসার এই পর্যন্ত চলে আসেন। এতটাই কাছাকাছি চলে গেলেন সবাই-সেই সময় যেকোনো অঘটন ঘটে যেতে পারত। এসএসএফ উনাকে ঘিরে ফেলেছে; উনাকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে; এসএসএফ’র কয়টা অফিসার- ২০টা অফিসার ৩০টা অফিসার; কী করতে পারবে ১০০০ কমান্ডো; কোয়ালিফায়েড মেজর এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল রক্ত তাদের টগবগ করছে। তারা চেয়ার ছুড়ে ছুড়ে মারছিল; জুতা ছুড়ে মারছিল প্রধানমন্ত্রীর সামনে। সেনাপ্রধান পেছনে একরকম মুখ লাগিয়ে ছিলেন।  শুধু বললেন-জেনারেলরা তোমরা এই অবস্থা টেকওভার করো-জেনারেলস টেকওভার। কেমন করে সামাল দেব; এরা তো কথা শুনতেছে না, কী করব; মুশকিল; একটা অঘটন তো ঘটে যেতে পারে যেকোনো সময়।  এটা ইতিহাস ভাই-আমাকে ইয়ে করেন না; আমি যেটা হয়েছে সেটাই বলছি। নির্মোহ ইতিহাস বলার চেষ্টা করতেছি আমি। যেটা দেখেছি-আমি নিজের সাক্ষীতে বলছি। 
তিনি বলেন, আমি যেটা দেখেছি সেটা বলেছি; বলতেছি। আশা করি, আমি সত্য বলার চেষ্টা করছি; যখন প্রথমে একদল জেনারেল ঘুরে আসলেন, মোটামুটি তারা শান্ত হলেন; শান্ত তারা হচ্ছেন না। আমি তখন দেখলাম-আমি এবং একজন না দু’জন আমরা জেনারেল দাঁড়ালাম; আবার ঘুরলাম; তারা যখন এখানে চলে আসছেন; সামনে মাঝামাঝি পথে দাঁড়িয়ে গেলাম; বললাম-না, তোমরা এখানে লাইন ক্রস করতে পারবা না। যাক আল­াহর কাছে অনেক শুকরিয়া আদায় করছি, কোনো অঘটন ঘটে নাই। অফিসাররা ঠান্ডা হলেন, কথা শুনলেন এবং তারপর দিন জানাজা হলো।  

্রিন্ট

আরও সংবদ