খুলনা | মঙ্গলবার | ০৭ জানুয়ারী ২০২৫ | ২৩ পৌষ ১৪৩১

ছয়তলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণে অগ্রগতি নেই

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে খুলনার মৃত্তিকার বিভাগীয় গবেষণাগার

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:৫৭ এ.এম | ০৫ জানুয়ারী ২০২৫


সাড়ে পাঁচ দশকের পুরাতন ভবনে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলছে খুলনার মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের বিভাগীয় গবেষণাগারের কার্যক্রম। ভবনের ছাদের রডে মরিচা ধরে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে দেয়াল, দরজা ও জানালা। অল্প বৃষ্টিতেই গবেষণাগারের মূল্যবান যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গবেষণাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর প্লাস্টার খসে নিয়মিতই ঘটছে দুর্ঘটনা। এমন অবস্থায় বিভাগীয় গবেষণাগারটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে অন্যত্র স্থানান্তর করার জন্য মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকের নিকট লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। এদিকে, গবেষণাগারের অদূরে নতুন করে ছয়তলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মানের কাজ শুরু হলে ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে অগ্রগতি হচ্ছে না। গেল দুই বছর ধরে কাজটি শুরু হলে দৃশ্যমান তেমন কিছুই হয়নি।
জানা গেছে, ১৯৬৮ সালে ৫০ একর জমির ওপর খুলনার দৌলতপুরে প্রতিষ্ঠিত মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের বিভাগীয় গবেষণাগারটি। প্রাথমিক ভাবে বিভাগের সকল জেলার কৃষকদের ফসল উৎপাদনের জন্য মাটি পরীক্ষাগার হিসেবে এটি ব্যবহৃত হতো। পর্যায়ক্রমে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ এবং যশোরে গবেষণাগার হলে বিভাগীয় গবেষণাগার হিসেবে এটার কার্যক্রম চলমান ছিল। গেল ছয় মাসে এক হাজারের বেশি কৃষক খুলনার গবেষণাগার থেকে সেবা নিয়েছে। গবেষণাগারে সরাসরি ছাড়াও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকরা খুলনার গবেষণাগার থেকে সেবা নিচ্ছে। পাশাপাশি রবি ও খরিপ মৌসুমে খুলনার বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান মৃত্তিকা পরীক্ষাগারের কার্যক্রমও চলছে। মাত্র ৫৮ থেকে ৬৩ টাকা সরকারিভাবে জমা দিয়েই কৃষকরা তাদের জমির মাটি পরীক্ষা করার সুযোগ পাচ্ছে।
কিন্তু দীর্ঘদিনের পুরাতন এই গবেষণাগারটির বেহাল দশার কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি গবেষণাগারের মূল্যবান যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে অল্প বৃষ্টিতেই ছাদ চুইয়ে চুইয়ে পানি পড়ছে। একাধিকবার পলেস্তার পড়ে দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মহাপরিচালকের নিকট ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষণার জন্য আবেদন করেন। এরপর টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। গণপূর্ত বিভাগের তত্ত¡াবধায়নে প্রতিষ্ঠানের অদূরেই ছয়তলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে কাজটি শুরু করেন মেসার্স খন্দকার শাহীন আহমেদ ও মেসার্স মধু টেড্রার্স  (জেভি)। মেয়াদ চলতি বছরের ৬ মে শেষ হয়ে গেলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে কাজে অগ্রগতি হয়নি। যার কারণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি কাজ শেষ করার জন্য পুনরায় গণপূর্ত থেকে সময় বৃদ্ধি করেছে।
বিভাগীয় গবেষণাগারের ভারপ্রাপ্ত মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রশিদ জানান, প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিনের পুরাতন হওয়ার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এই ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার জন্য চিঠি দিয়েছিলাম। আপাতত কোন রকম সংস্কার করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে আমরা কাজ চালাচ্ছি। নতুন ভবনের ঠিকাদারের কাজে গাফিলতির কারণে অগ্রগতি খুবই কম।
মেসার্স মধু ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, দেশের পরিস্থিতি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে কাজ গতি কম ছিল। আগামী জুলাই মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করব।
খুলনা গণপূর্ত বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসামাদুজ্জামান জানান, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করব। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য তাগিদ দেয়া হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ