খুলনা | বৃহস্পতিবার | ০৯ জানুয়ারী ২০২৫ | ২৫ পৌষ ১৪৩১

এইচএমপিভি ভাইরাস : বাংলাদেশের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ

|
১২:০৬ এ.এম | ০৮ জানুয়ারী ২০২৫


বিশ্বজুড়ে ভাইরাস সংক্রমণের তালিকায় নতুন এক নাম যোগ হয়েছে, হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস বা এইচএমপিভি। স¤প্রতি ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার কিছু দেশে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, যা বাংলাদেশেও উদ্বেগ তৈরি করেছে। 
শ্বাসযন্ত্রের এই ভাইরাসটি শিশু, বয়স্ক এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য বিশেষত ভয়ঙ্কর। কোভিড-১৯ মহামারির অভিজ্ঞতা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ভাইরাসজনিত যেকোনো সংকটকে সময়মতো প্রতিহত করতে না পারলে তা জনস্বাস্থ্য এবং অর্থনীতির ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রকৃতপক্ষে কোভিড-১৯এর প্রভাব এখনো আমরা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। এখনো আমাদের অর্থনৈতিক চাঙা হয়নি। এ অবস্থায় এইচএমপিভি আমাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে। এইচএমপিভি একটি শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস, যা সাধারণ ঠান্ডা-কাশি থেকে শুরু করে নিউমোনিয়ার মতো গুরুতর শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ ঘটাতে পারে। ২০০১ সালে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হয় এবং তখন থেকেই এটি বিশ্বব্যাপী শীত মৌসুমে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি করে আসছে। উপসর্গগুলো সাধারণত সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা, জ্বর এবং গুরুতর ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভাইরাসটি হাঁচি, কাশি বা সংক্রমিত পৃষ্ঠ স্পর্শ করার মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যারা রোগ প্রতিরোধে দুর্বল-যেমন শিশু, বয়স্ক এবং কো-মর্বিডিটি রয়েছে এমন ব্যক্তিরা, তাদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস আরও বেশি মারাত্মক হতে পারে। চীন, জাপান ও মালয়েশিয়ার পর ভারতেও তা ছড়িয়ে পড়ে। স¤প্রতি ভারতে বেঙ্গালুরু ও আহমেদাবাদে এইচএমপিভি শনাক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ এর সংক্রমণ রোধে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের মানুষের যাতায়াত অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হওয়ায় এই ভাইরাস আমাদের দেশেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে। জনগণকে এই ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বার্তা প্রচার করা উচিত। সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে যে, দেশের প্রতিটি অঞ্চলে সহজে ভাইরাস পরীক্ষা করার ব্যবস্থা রয়েছে। সরকারের পাশাপাশি জনগণের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক নাগরিককে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নিয়মিত হাত ধোঁয়া এবং মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। শিশু এবং বয়স্কদের জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিতে হবে। শরীর দুর্বল মনে হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। এইচএমপিভি ভাইরাস আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা আমাদের জন্য হুমকি হতে পারে, কারণ আমরা একটি বৈশ্বিক সমাজে বাস করি। বাংলাদেশকে এখনই এই ভাইরাস মোকাবিলায় পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। জনগণকে সচেতন এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। একে অপরকে সচেতন করে তোলার মাধ্যমে আমরা এই সংকট থেকে রক্ষা পেতে পারি।

্রিন্ট

আরও সংবদ