খুলনা | বৃহস্পতিবার | ০৯ জানুয়ারী ২০২৫ | ২৬ পৌষ ১৪৩১

বিদায়ী বছরে সাতক্ষীরায় ৫৩ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৫৮ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা |
০১:৩৬ এ.এম | ০৯ জানুয়ারী ২০২৫


বিদায়ী বছরে সাতক্ষীরায় ৫৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৫৮ জন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছে আরো কমপক্ষে ৬৩ জন। দুর্ঘটনাগুলোর অধিকাংশ ঘটেছে  ট্রাক ও মোটরসাইকেল সংঘর্ষ। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ২০২৪ সালের ফেব্র“য়ারি ও মে মাসে। বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন সাতক্ষীরা বিআরটিএ এর সহকারী পরিচালক কে এম মাহবুব কবির।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) সাতক্ষীরার পরিসংখ্যান মতে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৭টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৭ জন এবং আহত হয়েছেন ১৩ জন। তবে এই তিন মাসের মধ্যে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ফেব্রæয়ারি মাসে। এই মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৭টি, এতে নিহত হয়েছে ৭ জন এবং আহত হয়েছে ৮ জন। তবে বছরের প্রথম তিন মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যায় বেশি। এপ্রিল থেকে জুন মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৬টি। এতে নিহত হয়েছে ১৭ জন এবং আহত হয়েছেন ২৬ জন। তবে এই তিন মাসে আহতের সংখ্যা বেশি। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৭টি। এতে নিহত হয়েছে ৮ জন এবং আহত হয়েছে ১১ জন। তবে  সেপ্টেম্বর মাসে জেলায় কোনো সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটেনি। তাছাড়া এই তিন মাসে সব থেকে কম দুর্ঘটনার  ঘটনা ঘটেছে। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর তিন মাসে জেলায় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে মোট ১২ টি। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১৫ জন এবং আহত হয়েছে ১০ জন।
মানবাধিকার কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত বলেন, সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০ বছরের কম বয়সীদের মৃত্যুহার সব চেয়ে বেশি। এদের বেশির ভাগই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ সড়কের বিশৃঙ্খলা। উচ্চ গতিতে বাইক চালানো। দ্রুত গতিতে চালানোর ফলে বাইক তাদের কন্ট্রোলের বাইরে চলে গেলেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এছাড়া বর্তমানে দুই ও তিন চাকার গাড়ির দুর্ঘটনার সংখ্যাও  দিনদিন বাড়ছে।
সড়ক দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, সড়কে গাড়ি চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলে কে কাকে পেছনে ফেলে আগে যেতে পারবেন। এই প্রতিযোগিতা দিনশেষে তাদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আবার কোনো কোনো সড়কে বাঁক বেশি থাকে। যে কারণে সেই সব বাঁক পেরোতে গিয়ে গাড়ি চালকেরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। যারা গাড়ি চালান, তাদের অনেকেরই উপযুক্ত ও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ থাকে না। যে কারণে তারা ট্রাফিক আইন সম্পর্কেও ভালোভাবে জানেন না। সড়কে প্রায়ই ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল করে। এসব গাড়ি যে কোনো সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ফলে অকালে মৃত্যু বা পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে অসংখ্যা নিরীহ যাত্রী  ও পথচারীদের। 
এ বিষয়ে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বেগ বলেন, একটি সড়ক দুর্ঘটনা একটি পরিবারের জন্য সারাজীবনের কান্না। দেশে এরই মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ব্যাপক আন্দোলন ও জনমত গড়ে উঠেছে। তবে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সতর্কতা ও সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। সড়ক দুর্ঘটনা সর্ম্পকে উঠতি বয়সের যুবকদেরকে সচেতন করতে হবে। এক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারি সংস্থার তৎপরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ