খুলনা | বুধবার | ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | ২৩ মাঘ ১৪৩১

‘উন্নতি না হলে বিআরটিএ বন্ধের চিন্তা করা হবে’

ফিটনেস বিহীন বাসের কারণে দুর্ঘটনা হলে দায় বিআরটিএ’র : সড়ক উপদেষ্টা

খবর প্রতিবেদন |
০১:১১ এ.এম | ১২ জানুয়ারী ২০২৫


নিজেদের অবস্থার উন্নতি করতে না পারলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ’কে বন্ধের কথা চিন্তা করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। শনিবার দুপুরে বিআরটিএ ভবন পরিদর্শন ও কনফারেন্স রুমে রোড সেফটি বিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে এক আলোচনা সভা শেষে বিআরটিএ’কে নিজেদের অবস্থার উন্নতির জন্য এক মাস সময় বেঁধে দেন সড়ক উপদেষ্টা। যা প্রায় শেষের দিকে। তবে এই সময়ের মধ্যে বিআরটিএ কিছুটা উন্নতি করতে পারলেও গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে যেতে পারেনি বলে মনে করেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
তিনি বলেন, বিআরটিএ এর কর্মকর্তাদের স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে, তারা যে আচরণ করছে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমি তাদের এটাও বলেছি, সরকারি বিভিন্ন দফতর বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কাজের যদি উন্নতি না হয়, তাহলে আমরা বিআরটিএ বন্ধ করে দেওয়ার কথা চিন্তা করবো।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা বিআরটিএ’কে প্রতিনিয়ত মনিটরিংয়ের মধ্যে রাখবো। ফিটনেস বিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান চলমান আছে। এটাকে আরও বাড়ানো হবে।
সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধির দায় নিয়ে তিনি বলেন, গত বছর থেকে এ বছর ১২ শতাংশ বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে পারিনি, এর জন্য দায় নিচ্ছি।
ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, জীবনের কোনও মূল্য হয় না। কিন্তু অপরাধ স্বীকারের অংশ হিসেবে আমরা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছি।
এখন থেকে ফিটনেসবিহীন বাসের কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নিতে হবে বলে জানিয়েছেন মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, গত এক বছরে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় সাত হাজার নিহত এবং ১২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। অনেক জায়গায় দুর্ঘটনার দায় ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কারণে। এসব যানবাহন সড়কে কীভাবে চলে তার জবাব বিআরটিএকে দিতে হবে। ভবিষ্যতে ফিটনেসবিহীন কোনো যানবাহনের কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় বিআরটিএ’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, আমি বিআরটিএকে নির্দেশনা দিয়েছি, তারা যেন ফিটনেসবিহীন যানবাহন পুনঃপরীক্ষার জন্য মালিকদের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ফোন বা মেসেজ দেয়। এ মেসেজের লেখা থাকবে আপনার বাস ফের ফিটনেস পরীক্ষার সময় এসেছে। নির্দিষ্ট সময়ের আগে আপনি আপনার বাসের ফিটনেস পরীক্ষা করুন। এ সময়ের মধ্যে যদি কেউ ফিটনেস পরীক্ষা না করে তাহলে তার রুট পারমিট বাতিল করা হবে। একই ভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নে উদ্যোগ নিতে হবে।
গণপরিবহন চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা বলেন, আজকের সভায় গণপরিবহন চালকদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। একই সঙ্গে চালকরা মাদকাসক্ত কি না তা পরীক্ষা করা হবে। প্রতি বছরই সড়ক দুর্ঘটনার হার বাড়ছে। এটা আমরা কমাতে পারছি না। এটা আমাদের ব্যর্থতা।
সড়ক দুর্ঘটনায় যারা আহত এবং নিহত হয়েছেন, তাদের আর্থিক সহযোগিতা দ্রুত সময়ের মধ্যে দিতে বিআরটিএকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এবং নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। কিন্তু এ কাজ অনেক ধীরগতিতে চলছে। তা দ্রুত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এখনো বিআরটিএ’তে সাড়ে চার লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স আটকে আছে জানিয়ে সেতু উপদেষ্টা বলেন, এ সাড়ে চার লাখ লাইসেন্স দ্রুত সময়ে বিতরণ করতে বলা হয়েছে। আশাকরি আগামী মার্চের মধ্যে তা বিতরণ করা সম্ভব হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ