খুলনা | বুধবার | ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১

বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠক, চূড়ান্ত হবে জুলাই ঘোষণাপত্র

খবর প্রতিবেদন |
১২:৪৯ এ.এম | ১৫ জানুয়ারী ২০২৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার আগে আরেক দফা রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে বসছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আগামী বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে চূড়ান্ত হবে জুলাই ঘোষণাপত্রে কী থাকবে।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এই তথ্য জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মাহফুজ আলম জানান, বৃহস্পতিবার এই বৈঠকে ঐক্যমতের ভিত্তিতে একটি দলিল প্রণীত হবে। সেদিনই স্পষ্ট হবে কবে ঘোষণাপত্রটি জারি করা হবে এবং সরকার কীভাবে ঘোষণাপত্র জারির বিষয়ে ভূমিকা রাখবে।

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, বিএনপি-জামায়াত ও অন্যান্য সব অভ্যুত্থানের শক্তি জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে একমত। কিন্ত ঘোষণাপত্রে কী থাকবে, তা নিয়ে একমত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আগামী বৃহস্পতিবার সব রাজনৈতিক দল ও পক্ষের সঙ্গে সরকারের সংলাপ হবে। সেখানে নিশ্চয় একমত হওয়া যাবে বলে আশা করি।

উপদেষ্টা জানান, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র যেদিন হবে সেখানে প্রধান উপদেষ্টা, সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থাকবেন। তিনি বলেন, ‘যদি ৫ আগস্ট বিকেলে আমরা ঘোষণাপত্র দিতাম বা দুই দিন পর দিতাম তখন সেখানে যে মোমেন্ট তৈরি হতো তেমন একটি মোমেন্ট তৈরি করতে চাচ্ছি আমরা।’

এই ঘোষণাপত্র প্রস্তুত ও ঘোষণা মতামতের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এত বড় একটা অভ্যুত্থানের দলিল। এটা করতে সবাইকে সংযমের দিকে যেতে হবে।’

জুলাই ঘোষণাপত্র সংবিধানে থাকবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে যদি জনগণ সরকারকে এই দায়িত্ব দেয় তাহলে। আর যদি না দেয় আমরা মনে করি আগামী নির্বাচনে যারাই জিতবেন তারা এই গণঅভ্যুত্থানের শক্তি হবেন এবং এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’

এ সময় জাতীয় পার্টি ও বাম দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে তিনি বলেন, রাজনীতির মাঠে জাতীয় পার্টির অবস্থান আমাদের কাছে পরিষ্কার। এখন পর্যন্ত কোনো বৈঠকে তাদের আমরা ডাকিনি। তাই ঘোষণাপত্র বিষয়েও তাদের সঙ্গে কথা বলা আমরা যৌক্তি মনে করছি না। আর বাম দলগুলোর মধ্যে অনেক সংগঠন আছে, তবে গণঅভ্যুত্থানে যেসব দল প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে, আরও হবে।

গত ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। তবে ৩০ ডিসেম্বর রাতে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

ওই রাতে বৈঠক করে ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা) কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। ওই কর্মসূচি থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এ লক্ষ্যে জনমত তৈরিতে প্রচারপত্র বিলি ও জনসংযোগ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।

তবে শিক্ষার্থীদের দেওয়া নির্ধারিত তারিখের মধ্যে ঘোষণাপত্র দিতে পারেনি সরকার। যদিও এই ঘোষণাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার বেশি সময় নেবে না বলে আগেই জানিয়েছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। 

্রিন্ট

আরও সংবদ