খুলনা | শুক্রবার | ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | ২৫ মাঘ ১৪৩১

ভ্যাটের কারণে বাড়লো এলপিজির দাম, ১২ কেজিতে ৪ টাকা

খবর ডেস্ক |
০১:১৩ এ.এম | ১৫ জানুয়ারী ২০২৫


দেশে ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম টানা দুই মাস অপরিবর্তিত রেখেছিল বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। ভ্যাট সমন্বয় করায় প্রতি কেজি এলপিজির দাম ৩৭ পয়সা বাড়িয়েছে বিইআরসি। জানুয়ারি মাসের শুরুতে এলপি গ্যাসের দাম অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল বিইআরসি। কিন্তু স¤প্রতি মূল্য সংযোজন করের (মূসক) হার পরিবর্তনের কারণে মঙ্গলবার বেসরকারি কোম্পানির এলপিজির দাম প্রতি কেজি ১২১ টাকা ১৯ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১২১ টাকা ৫৬ পয়সা করা হয়েছে। এতে বহুল ব্যবহৃত ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪৫৫ থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৫৯ টাকা নির্ধারণ করেছে কমিশন। অর্থাৎ প্রতি সিলিন্ডারে দাম বেড়েছে ৪ টাকা। মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বিইআরসি এই তথ্য জানায়।
প্রসঙ্গত, এর আগে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে এলপিজির দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল।
গত ২ জানুয়ারি এলপিজির দাম অপরিবর্তিত রাখার ঘোষণা দেয় কমিশন। তবে অটোগ্যাসের মূসকসহ দাম ৩ পয়সা কমিয়ে প্রতি লিটার ৬৬ টাকা ৭৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এবার তা এক টাকা বাড়িয়ে ৬৭ টাকা ২৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ভ্যাটের হার পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি- বেসরকারি এলপিজির মূল্য সমন্বয় করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিইআরসি। গণমাধ্যমে পাঠানো সে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেসরকারি এলপিজির ভ্যাটসহ দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ১২১ টাকা ৫৬ পয়সা। এই হিসাবে বিভিন্ন আকারের এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারিত হয়। ভ্যাট পরিবর্তনের আগে প্রতি কেজির দাম ছিল ১২১ টাকা ১৯ পয়সা। আরোপিত মূল্য সংযোজন করের (মূসক) হার পরিবর্তনের ফলে জানুয়ারি মাসের জন্য সরকারি, বেসরকারি এলপিজি’র মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে।
গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজির (অটো গ্যাস) নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি লিটার ৬৭ টাকা ২৭ পয়সা, যা আগে ছিল ৬৬ টাকা ৭৮ পয়সা। আর সরকারি কোম্পানির সরবরাহ করা এলপিজির সাড়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৬৯০ টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
২০২১ সালের এপ্রিল থেকে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে আসছে বিইআরসি। এলপিজি তৈরির মূল উপাদান প্রোপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়।
প্রতি মাসে এলপিজির এই দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো। এটি সৌদি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে পরিচিত। এই সৌদি সিপিকে ভিত্তিমূল্য ধরে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে বিইআরসি। আমদানিকারক কোম্পানির চালান (ইনভয়েস) মূল্য থেকে গড় করে পুরো মাসের জন্য ডলারের দাম হিসাব করে বিইআরসি।
উলে­খ্য, ২০২৪ সালের জানুয়ারি, ফেব্র“য়ারি, মার্চ, জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে বাড়ানো হয়েছিল এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম। আর দাম কমেছিল এপ্রিল, মে, জুন ও নভেম্বরে।
এর আগে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) এলপি গ্যাস উৎপাদন পর্যায়ে সাড়ে ৭ শতাংশ অতিরিক্ত মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) প্রত্যাহার করার বিশেষ আদেশ জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এতে বলা হয়, এলপি গ্যাসের উৎপাদন ও ব্যবহার সহজলভ্য করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন অনুযায়ী উৎপাদন পর্যায়ে এলপি গ্যাসে সাড়ে ৭ শতাংশ অতিরিক্ত মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি দিয়েছে। 
এই ৭ শতাংশ অব্যাহতির পরেও এলপিজির দাম কেন বাড়ানো হলো জানতে চাইলে বিইআরসি’র চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, ‘এর আগে এলপিজিতে উৎপাদক পর্যায়ে ৫ শতাংশ এবং ভোক্তা পর্যায়ে আরও ২ শতাংশ মোট ৭ শতাংশ ভ্যাট ছিল। কিন্তু স¤প্রতি এই বিশেষ সুবিধা তুলে নিয়ে এলপিজির মোট ভ্যাট অন্য পণ্যের মতো ১৫ শতাংশ আরোপ করা হয়। এলপিজি উৎপাদনকারীরা ভ্যাট প্রত্যাহারের আবেদন করলে সরকার আগের মতো ভ্যাট কমিয়ে ৭ শতাংশ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এটি শুধু উৎপাদক পর্যায়ে। এ জন্যই এলপিজিতে ভ্যাট সমন্বয় করা হয়েছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ