খুলনা | বুধবার | ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | ২৩ মাঘ ১৪৩১

মোংলায় দিনব্যাপি জৈব পণ্যের পসরা সাজিয়ে ইকো মেলা অনুষ্ঠিত

মোংলা প্রতিনিধি |
১১:৪০ পি.এম | ২২ জানুয়ারী ২০২৫


বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (বিএএসডি) এর ক্লাইমেট চেঞ্জ রেজিলিয়েন্স এন্ড এডাপটেশন (সিসিআরএ) প্রকল্প ইকো মেলার আয়োজন করেছে এনজিও সংস্থা। বুধবার মোংলা উপজেলার দামের খন্ড মন্দির সংলগ্ন মাঠে জৈব সারের উৎপাদিত পণ্যের পসরা নিয়ে আনন্দ ঘন পরিবেশে দিনব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের মেলার প্রতিপাদ্য ছিল ‘জৈবপণ্য উৎপাদন করি পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করি’। 
এবারের ইকো মেলায় সুন্দরবন ও চিলা ইউনিয়নের ২৪টি পরিবেশবান্ধব দলের সদস্যগণ রাসায়নিক সার ও কীটনাশক মুক্ত এবং জৈব সার ও জৈব বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদিত সবজি, ফলমূল ও কৃষিপণ্য নিয়ে বিভিন্ন স্টলে পসরা সাজিয়ে প্রদর্শনির জন্য। প্রদর্শনীতে দুর্যোগ সহনশীল ঘরবাড়ি, জৈব সার, তৈরির কৌশল ও বিভিন্ন ডিজাইনের সবজি বেড স্টলে প্রদর্শন করেন। বেলা ১১টা থেকে নারী-পুরুষ-শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের উৎসুক মানুষ মেলার স্টলগুলো ঘুরে দেখেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত অতিথিরা বিভিন্ন প্রশ্ন করে তথ্য-উপাত্ত জেনে নেন এবং জৈব সারের উৎপাদিত পণ্য কিনেও নিয়ে যান। সুন্দর ও মনোরম পরিবেশের এ আয়োজন দেখে দর্শনার্থীরা খুবই খুশি এবং আনন্দিত।
বিএএসডি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রান্তিক উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ, বিশেষভাবে নারীদের দুর্যোগ সহনশীল উন্নত জীবনও সাবলম্বী করার ব্রতনিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ক্ষুদ্র দল গঠন করে দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলার উপযোগী দক্ষতা ও জীবিকায়ন প্রশিক্ষণ প্রদান, সঞ্চয় করার অভ্যাস ও ক্ষুদ্র প্রকল্পের মাধ্যমে আয় করার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। পরিবেশ সুরক্ষার জন্য পারমাকালচার ও ইকোভিলেজ প্রশিক্ষণও প্রদান করা হয় এ সংস্থার মাধ্যমে। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তৈরীকৃত সদস্যদের মাঝে পরিবেশের যতœ নেবার দক্ষতা ও আন্তরিকতা তৈরি করা হয়। প্রশিক্ষনপ্রাপ্তরা মাটি, পানি, বায়ু ও পরিবেশ দূষণ না করে জৈব সার, জৈব বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সবজি ও ফলমূল উৎপাদন করে। এতে পরিবেশও ভাল থাকে আবার স্বাস্থ্যও ভাল থাকে। তারা নিজেদের হাতে উৎপাদিত জৈব পণ্য বছরে ১ বার মেলায় প্রদর্শনের সুযোগ পায়।
প্রধান অতিথি হিসাবেই উপস্থিত থেকে এ মেলার শুভ উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফিয়া শারমিন। জ্যোতি হালদারের (বোর্ড মেম্বার-বিএএসডি)’র সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে পারমাকালচার ও পরিবেশ সুরক্ষা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেণ বিএএসডি’র নির্বাহী পরিচালক বনি ফেস সুব্রত গমেজ। তিনি বিএএসডি সম্পাদিত পারমাকালচার বিষয়ক ৫০০ পৃষ্ঠার একটি বই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হাতে তুলে দেন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা জুবাইর হোসেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ইশরৎ জাহান, বিএএসডি’র পিএমসি মেম্বার ও সময় টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার মাহমুদ হাসান ও উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাসুম বিল­াহ এসময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএএসডি-সিসিআর’র প্রজেক্ট ম্যানেজার পরিতোষ কুমার মৃধা এবং সঞ্চালনায় ছিলেন বিএএসডি-সিসিআরএ প্রজেক্ট এর প্রজেক্ট অফিসার সমীর কুমার দাস।
মেলার স্টল পরিদর্শন শেষে প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, লবণাক্ততার জন্য মোংলায় তেমন ফসল হয়না, যা হয় তাও রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদিত। এরকম বাস্তবতায় জৈব সার, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ, বিশেষভাবে নারীদের জৈব বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সবজি ও ফলমূল উৎপাদনের জন্য সহায়তা এবং তা সাধারণ জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেবার জন্য এ মেলার আয়োজন খুবই সময় উপযোগী কাজ। এজন্য আমাদের উচিত এর দিকে নজর দিয়ে রাসয়নিক সার বন্ধ করে জৈব সার দিয়ে ফসল ও সবজি উৎপাদন করা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা। দুর্যোগ মোকাবেলা ও জৈব কৃষি এ এলাকার জন্য খুবই দরকারি প্রকল্প, যেসব সংস্থা এ ধরণের প্রকল্প নিয়ে কাজ করবে উপজেলা প্রশাসন তাদের সর্বোচ্চভাবে সহায়তা দিবে বলে জানান তিনি। 

্রিন্ট

আরও সংবদ