শেখ হাসিনাকে সব খুনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ বলে উলে­খ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে ফ্যাসিবাদ বিদায় নিয়েছে। ২ হাজার শহিদ ও ৪ হাজার আহতের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশ জন্ম দিয়েছে। তারা দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি দেখে যেতে পারেনি। নতুন বাংলাদেশ গড়ার মধ্য দিয়ে তাদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে। হাসিনা সরকার জোর করে সংবিধান থেকে তত্ত¡াবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করেছিলো। সে আইন, সংবিধানের তোয়াক্কা না করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিলো। এক পরিবার, একদল ও একব্যক্তির কথায় দেশ চলতো। সোমবার বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় পাটকেলঘাটা ফুটবল মাঠে বার্ষিক কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 
তালা উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওঃ মফিদুল­াহ’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইদ্রিস আলীর সঞ্চালনাায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মোঃ ইজ্জত উল­াহ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারী মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমীর উপাধ্যক্ষ সহিদুল ইসলাম মুকুল, জেলা নায়েবে আমীর ডাঃ শেখ মাহমুদুল হক, জেলা সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক গাজী সুজায়েত আলী।
সম্মেলনে বক্তৃতা করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় সুরা সদস্য অধ্যাপক রবিউল বাসার, জামায়াতের জেলা সেক্রেটারী মাওঃ আজিজুর রহমান, কেশবপুর উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মোক্তার আলী, কলারোয়া উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওঃ কামরুজ্জামান প্রমুখ।তিনি বলেন, দেশ থেকে দখলবাজ, লুটেরা, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীদের বিতাড়িত করে সকলে মিলে নতুন বাংলাদেশ  তৈরি করা জামায়াতে ইসলামের অঙ্গীকার। হাসিনা বিরোধীদের মত প্রকাশের কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি। সে কারণে দেশ থেকে তাকে পালাতে হয়েছে। আমরা বিএনপি জামায়াত এক হয়ে গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করেছি।
তিনি বলেন, সংখ্যানুপাতিক ভাবে প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য তত্ত¡াবাধয়ক সরকারের কাছে আবেদন করেছি। এই পদ্ধতি চালু হলে ইচ্ছা মতো ক্ষমতা জাহির করা যাবে না। দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসবে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ১৪, ১৮ ও ২৪ সালের নির্বাচনে আমরা ভোট দিতে পারিনি। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশ লীগ মিলে জনগণকে ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়া হয়েছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে গুম, খুন, হত্যা করেছে। বন্দি করে আয়না ঘরে রেখেছে। ২০০৬ সালে পল্টনে লগি বৈঠার দিয়ে মানুষ খুনের মাস্টার মাইন্ড ছিলো শেখ হাসিনা। মূলত সেদিন থেকেই বাংলাদেশে গণতন্ত্রের হত্যা হয়েছিলো। এর পর থেকে হাজার হাজার আলেম উলামাদের বন্দি, হত্যা, নির্যাতন করা হয়েছে। এই সাতক্ষীরাতেও ৪০ জন ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তালা-কলারোয়ায় শান্তিতে বসবাস করার জন্য আগামী সংসদ নির্বাচনে আপনাদের কাছে ত্যাগী, গুনী, সেরা ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য অধ্যক্ষ মোঃ ইজ্জত উল­াহকে রেখে গেলাম। জামায়াতে ইসলামীতে হিন্দু ভাইদেরও যোগ দেয়ার সুযোগ গঠনতন্ত্রে আছে। জামায়াতে ইসলামী শুধু মুসলমানদের দল নয়। হিন্দু, খ্রিস্টান, মুসলমান এক হয়ে এ দেশকে নতুন করে গড়তে হবে। ইসলামে অন্য ধর্মের লোক আমানত স্বরুপ। ইসলাম ধর্মে তাদেরও অধিকারের কথা বলা আছে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। কেউ কেউ আ’লীগের ভাষায় কথা বলছে। ফ্যাসিবাদের লোকেরা জামায়াতে ইসলামীকে যেভাবে নির্মূল করতে চেয়েছিল, তাদের মুখে এখন ফ্যাসিবাদের সেই গন্ধ পাওয়া যায়। এ পথ সর্বনাশার পথ।