খুলনা | মঙ্গলবার | ১৮ মার্চ ২০২৫ | ৩ চৈত্র ১৪৩১

তারকায় ঠাঁসা রংপুরকে উড়িয়ে কোয়ালিফায়ারে খুলনা

ক্রীড়া প্রতিবেদক |
০৪:২৯ পি.এম | ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫


স্বপ্নের মতো এক শুরু ছিল রংপুর রাইডার্সের। টানা ৮ ম্যাচ জিতে সবার আগে প্লে অফ নিশ্চিত করেছিল তারা। এমন শুরুর পর শেষের বাস্তবতা হয়তো কল্পনাও করেনি রাইডার্সরা! গ্রুপ পর্বের শেষ চার ম্যাচে টানা হারে এলিমিনেটরে জায়গা হয় তাদের। এলিমিনেটরে 'ডু অর ডাই' ম্যাচ হওয়ায় মাঠে নামার আগে স্কোয়াডের শক্তি বাড়ায় রংপুর। নতুন করে তিন বিদেশি তারকাকে উড়িয়ে আনা হয়। আন্দ্রে রাসেল-টিম ডেভিডদের অন্তর্ভুক্তিতে ফেভারিট তকমা নিয়েই আজ মাঠে নেমেছিল রাইডার্সরা। তবে মাঠের পারফরম্যান্সে সেটার কোনো ছাপই রাখতে পারল না তারা।

খুলনা টাইগার্সের স্পিন জালে ফেসে চোখে সর্ষে ফুল দেখেছেন রংপুরের ব্যাটাররা। নাসুম আহমেদ-মেহেদি হাসান মিরাজদের সামনে রীতিমতো ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা রাইডার্সদের! প্রথম সারির পাঁচ ব্যাটারের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। এমনকি পুরো ইনিংসে মাত্র দুই ব্যাটার তা করতে পেরেছেন। ব্যাটিং ব্যর্থতায় এলিমিনেটরেই থামতে হলো এক সময়ের টেবিল টপারদের। ৯ উইকেটের জয়ে কোয়ালিফায়ারে ওঠল খুলনা।

ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে খুলনার শুরুটাও অবশ্য ভালো হয়নি। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন খুলনার অধিনায়ক মিরাজ। তবে দলীয় ৩ রানে প্রথম উইকেট হারালেও জয় তুলে নিতে কোনো বেগই পেতে হয়নি দলটিকে। শেষ পর্যন্ত আর কোনো উইকেট না হারিয়েই জয় নিশ্চিত করেছে খুলনা।

মিরাজ ফেরার পর ক্রিজে আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাইমের সঙ্গী হন অ্যালেক্স রস। এ দুজন মিলে খুলনার জয় নিশ্চিত করেছেন। দুজন মিলে গড়েছিলেন ৮৭ রানের জুটি। দলকে জেতানোর পথে ৩৩ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত ছিলেন নাইম, অ্যালেক্স অপরাজিত ছিলেন ২৭ বলে ২৯ রানে। দারুণ এই জয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলা নিশ্চিত করেছে খুলনা। এ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ হবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে ফরচুন বরিশাল ও চিটাগং কিংসের ম্যাচের পরাজিত দল।

গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে তিন বিদেশি ক্রিকেটারকে দলে ভিড়িয়েছে রংপুর। আন্দ্রে রাসেল, টিম ডেভিড এবং জেমস ভিন্সকে দলে ভিড়িয়েছে দলটি, তিনজনই ছিলেন একাদশে। তবে মারকুটে তিন ব্যাটারকে দলে নিয়েও কাজের কাজ কিছুই করতে পারেনি দলটি। এই তিন বিদেশিই আজকের ম্যাচে ছিলেন ফ্লপ।  

এই তিন ক্রিকেটারই আজ সকালে ঢাকা পৌঁছেছেন। প্রত্যাশামতোই একাদশে জায়গা করে নিলেও মাঠে তার ছাপ দেখা যায়নি। আগে ব্যাট করতে নেমে সৌম্য সরকারের সঙ্গে ওপেনিংয়ে আসেন জেমস ভিন্স। 

ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই জেমস ভিন্সের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটে কাটা পড়েন সৌম্য। ফলে কোনো বল না খেলেই শুন্য হাতে ফিরে যান সৌম্য। এরপর ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ফিরে যান ভিন্সও। নাসুমের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে কট এন্ড বোল্ড হয়ে ফিরে যান ইংলিশ এই ওপেনার। ঘটা করে নিয়ে এসে সাত বলে এক রানে শেষ হয় ভিন্সের ইনিংস।  

এরপর নাসুম নিজের দ্বিতীয় ওভারে উইকেটে শেখ মেহেদীকে থিতু হওয়ার আগে প্যাভিলিয়নে পথ ধরান। পাঁচ বলে এক রান করেন এই অলরাউন্ডার। মাত্র সাত রান তুলতেই তিন ব্যাটারকে হারিয়ে চাপে পড়ে রংপুর। সেখান থেকে আরও দুই উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে সোহানের দল।

ইনিংসের পঞ্চম ওভারে দলীয় ১৩ রানে সাইফকে বিদায় করে মিরাজ। ১০ বলে চার রান করে এক্সট্রা ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি। এরপর পাওয়ার প্লেরে শেষ ওভারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের উইকেটও হারায় রংপুর। হাসান মাহমুদের বলে এলবিডব্লিউর ফাদে পড়ে ৮ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি।

এরপর দলীয় ৩২ রানে টিম ডেভিডও বিদায় নেন। ৯ বলে ৪ রান করে আউট হন আন্দ্রে রাসেল। এরপর রংপুরও আর বেশি দূর যেতে পারেনি। দলীয় ৫২ রানে নবম উইকেট হিসেবে নুরুল হাসান সোহান সাজঘরে ফিরলে রংপুর যে ৬০ রানের আগেই অল আউট হবে এমনটাই ধারণা করেছিলেন অনেকেই। তবে দলটি শেষ পর্যন্ত ৮৫ রান করতে পেরেছে দশম উইকেটে আকিফ জাভেদের ১৮ বলে ৩২ রানের ইনিংসে। এই বোলারের ৪ চার আর ২ ছয়ে খেলা ৩২ রানের সুবাদেই শেষ পর্যন্ত ১৬.৫ ওভারেই ৮৫ রানে অল আউট হয় রংপুর।

্রিন্ট

আরও সংবদ