যশোরের ঝিকরগাছায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক মহিলার মাথার চুল কেটে মধ্যযুগীয় কায়দায় মুখে কালি মাখিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শুধু চুল কেটেই তারা ক্ষ্যান্ত হননি এরপর বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক ভাবে মারপিট করেন। আর এমন অমানবিক কাজ করেছেন কিছু মহিলা। এই ঘটনায় নির্যাতিত মহিলা ৬ জনের নাম উলে­খ করে, অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই আসামি গ্রেফতারে পুলিশ অভিযানে নামে ঘটনার সাথে জড়িত ৪ জনকে গ্রেফতার করে। 
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঝিকরগাছা সদর ইউনিয়নের মৃত তোরাব মোড়লের মেয়ে ফজিলা খাতুনের (৪৫) ছেলে রায়হানের সাথে পার্শ্ববর্তী পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাসের মেয়ে বিথীর দুই বছর পূর্বে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে পারিবারিক ভাবে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। পরবর্তীতে একই উপজেলার গদখালি ইউনিয়নের বেনেয়ালি গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে শিমুলের সাথে বিথীর বিবাহ হয়। 
এর আগে গত রোববার আনুমানিক বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ফজিলা বেগম বেনেয়ালি গ্রামে তার সাবেক পুত্রবধূর সাথে দেখা করতে যান। ঐ সময় বেনেয়ালি কলাবাগান পাড়ার সিরাজুল ওরফে ছ্যারার নেতৃত্বে আবদুল হামিদের ছেলে শিমুল হোসেন (৩৪), পদ্মপুকুর গ্রামের ইব্রাহীম খলিলের স্ত্রী শারমিন আক্তার রুমি (৩০), বেনেয়ালি গ্রামের মফিজুর ড্রাইভারের স্ত্রী রনি বেগম (৪৬), তবিবর এর স্ত্রী মাজেদা বেগম (৪২), আব্দুল হামিদের স্ত্রী আছিরন বেগম (৪৮), পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাস এর স্ত্রী রহিমা (৪৮) সহ আরও ৫/৬ জন মহিলা মিলে ফজিলা বেগমের মাথার চুল কেটে, মুখে কালি লেপন করে দেন এবং বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারপিট করে শারীরিক ভাবে জখম করেন। ঘটনার সময় উপস্থিত অনেকে পুরো ঘটনা ভিডিও করে আনন্দ উল­াস করতে থাকেন।
শিমুলের বাড়ির পিলারের সাথে বেঁধে রেখে, সন্ধ্যার পর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করার চেষ্টা করে। ফজিলা বেগম কোথাও অভিযোগ করলে আরও বড় ধরনের ক্ষতি করার ভয় দেখান আসামিরা। পরে ফজিলা বেগম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ঘটনা জানার পরপরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভুপালী সরকার এবং ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ বাবলুর রহমান খান এর সার্বিক তত্ত¡াবধানে রাতেই এস আই মহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ৪ জনকে গ্রেফতার করেন।
ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ বাবলুর রহমান খান বলেন, সোমবার সকালে ৪ জনকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে এবং বাকী আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।