খুলনা | মঙ্গলবার | ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | ২২ মাঘ ১৪৩১

ডুমুরিয়ায় ৬টি ইট ভাটায় উচ্ছেদ অভিযান

১টির চিমনি ও চুলি­ ভাঙচুর এবং ৫টির কাঁচা ইট পানি ছিটিয়ে ও ট্রাক্টর দিয়ে পিষে বিনষ্ট

ডুমুরিয়া প্রতিনিধি |
১২:১৩ এ.এম | ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫


উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা এবং ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের দায়ে ডুমুরিয়ার ৬টি ইট ভাটায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ১টি ইট ভাটার চিমনি ও চুলি­ ভেঙে ফেলা এবং ৫টি ইটভাটার কাঁচা ইট পানি ছিটিয়ে ও ট্রাক্টর দিয়ে পিষে বিনষ্ট করা হয়। 
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন খুলনা বিভাগীয় পরিবেশ দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মমতাজ বেগম এবং ডুমুরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আসাদুর রহমান। অভিযানে ভদ্রা নদীর জায়গা দখল করে স্থাপিত খর্ণিয়া এলাকার মেরী ব্রিকস-এর চিমনি ও চুলি­ ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়। এছাড়া ওই এলাকার শাহাজান জমাদ্দারের মালিকানাধীন নুরজাহান ব্রিকস ও সান ব্রিকস, রানাই এলাকায় আব্দুল লতিফ জমাদ্দারের জে বি ব্রিকস, আমিনুল ইসলামের মালিকানাধীন লুইন ব্রিকস, চহেড়া এলাকায় অবস্থিত গাজী আব্দুল হকের মালিকানাধীন সেতু ব্রিকস-৪ এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় সরকারি নদীর জায়গা দখল করে প্রস্তুতকৃত কাঁচা ইটে পানি ছিটিয়ে এবং ট্রাক্টর দিয়ে পিষে বিনষ্ট করা হয় এবং ইটভাটা মালিক পক্ষের ইটভাটা আর পরিচালনা না করার মুচলেকা দেয়ার শর্তে অভিযান স্থাগিত করা হয়। 
এর আগে গত ৬ জানুয়ারি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে মেরী ব্রিকস, জে বি ব্রিকস, লুইন ব্রিকস, সেতু ব্রিকস, স্টোন ব্রিকস, গুটুদিয়া এলাকার জে সি ব্রিকস, শোলমারী নদী তীরবর্তী এন কে বি ব্রিক্সস, এস বি ব্রিক্সস এবং সেতু ব্রিক্সস-এ  অভিযান চালিয়ে মোট ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য্য করে আদায় করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া খর্ণিয়া, গুটুদিয়া ও রুদাঘরা ইউনিয়ের বিভিন্ন এলাকায় ভদ্রা ও হরি নদীর চর ভরাটিয়া জমির কিছু অংশ দখল করে গড়ে উঠে বেশ কয়েকটি ইট ভাটা। ইট ভাটাগুলোর লাইসেন্স এবং পরিবেশ দপ্তরের ছাড়পত্রের মেয়াদ ৩/৪ বছর পূর্বে উত্তীর্ণ হলেও অবৈধভাবে তা পরিচালিত হয়ে আসছে। আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন পরিবেশ দপ্তরের সহকারি পরিচালক পারভেজ আহম্মেদসহ এনফোর্সমেন্ট টীম, থানা পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা।
প্রসঙ্গত ডুমুরিয়া উপজেলার প্রবাহমান বিভিন্ন নদীর চর ভরাটিয়া জমি এলাকার কতিপয়  প্রভাবশালী ব্যক্তি দীর্ঘ দিন ধরে অবৈধভাবে দখল করে ইটভাটা পরিচালনা করে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ২২ ফেব্র“য়ারি মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)  হরি ও ভদ্রা নদীর জায়গা দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটা উচ্ছেদের জন্য জনস্বার্থে সংগঠনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়ার আইনজীবী মঞ্জিল মোরশেদ রীট পিটিশন দায়ের করেন। এক পর্যায়ে ওই বছরের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রীট পিটিশনটি শুনানীয়ান্তে পরবর্তি ৬০ দিনের মধ্যে ১৪টি ইটভাটার মধ্যে সরকারি জায়গায় স্থাপিত সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। বিচারপতি মোঃ মজিবর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্যার বেঞ্চ এই নির্দেশ দেন। উচ্ছেদের নির্দেশ দেয়া ইট ভাটা গুলো হচ্ছে ভদ্রা নদীর তীরবর্তী এসবি ব্রিকস ,  কে.পি.বি ব্রিকস,সেতু-১ ব্রিকস, নূরজাহান ব্রিকস,  কেবি-২ ব্রিকস,সান ব্রিকস, এফএমবি ব্রিকস, কেবি ব্রিকস, আল-মদিনা ব্রিকস, মেরি ব্রিকস জেবি ব্রিকস, লুইন ব্রিকস, হরি নদী তীরের সেতু-৪ ব্রিকস এবং টিএমবি ব্রিকস।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মমতাজ বেগম বলেন সিএস ম্যাপ অনুযায়ী ওই ১৪টি ইটভার্টার মধ্যে চলমান পাঁচটি ছিল। যার মধ্যে একটি চিমনি ভেঙে দেয়া হয়েছে। বাকি চারটাতে কাঁচা ইট ভেঙে পিষে বিনষ্ট করা হয় এবং মালিক পক্ষের অঙ্গীকার নেয়া হয়। তারা কেউই ইটভাটার কার্যক্রম আর চালাবে না। তিনি আরও বলেন উপজেলা প্রশাসন সেদিকে কঠোর নজরদারি রাখবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।

্রিন্ট

আরও সংবদ