খুলনা | বুধবার | ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | ২৩ মাঘ ১৪৩১

৮ ফেব্রুয়ারি ছয় সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ

খবর প্রতিবেদন |
১২:১২ এ.এম | ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫


রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতের সংস্কার প্রস্তাব তৈরির জন্য গঠিত ছয় কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, ওই দিন থেকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাজ শুরু করবে। একই সঙ্গে কমিশন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে পারে।

মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। এসময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম, উপ প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, আজ ছয়টি কমিশনের প্রধানরা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, বৈঠকে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ছয়টি কমিশনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট কমিশনগুলোর প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।

আসিফ নজরুল বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি একইসঙ্গে সংস্কার কমিশনের প্রধানরা সংস্কার কমিশনে আশু করণীয় কী, মধ্যম মেয়াদি কী আছে এবং দীর্ঘ মেয়াদি কী আছে সেগুলো পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তী করণীয় কী আছে সেগুলো পর্যালোচনা, কমিশনগুলো রিপোর্ট, সব রাজনৈতিক দল, জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলো যারা আছেন তাদের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

পরবর্তীতে জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে জাতীয় ঐক্য কমিশনের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আমরা আশা করছি ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে তারিখ নির্ধারণ করা হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন কমিশনের প্রধান এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।

সংবিধান বাতিল নাকি পুনরায় লেখা হবে জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, সংবিধান বাতিল সংশোধনী ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ছয়টি কমিশনের প্রধানদের কাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের যাত্রা শুরু হবে। এরপর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে যারা বসবেন তারা কমিশনের প্রধান নয় জাতীয় কমিশনের সদস্য হিসেবে বসবেন। সংবিধানের ব্যাপারে কোন পদ্ধতিতে ঐকমত্য পৌঁছানো হবে সেই বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত হবে।

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। শেখ হাসিনার পতনের তিন দিনের মাথায় গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সরকার গঠনের ১ মাস ৩ দিনের মাথায় গত ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বহুল আলোচিত ছয়টি প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে সুনির্দিষ্ট কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।

এর মধ্যে নির্বাচন কমিশনের প্রধান করা হয় সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারকে। পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সাবেক জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র সচিব সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কারে গঠিত কমিশনের প্রধান সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কারে গঠিত কমিশনের প্রধান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কারে গঠিত কমিশনের প্রধান সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হয় অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজকে।

এর মধ্যে চারটি কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। গত ১৫ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ এবং সংবিধান সংস্কারে গঠিত কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এখনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি। এই দুই কমিশন আগামীকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ