খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৩ মার্চ ২০২৫ | ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

আ.লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না: সালাহউদ্দিন

খবর প্রতিবেদন |
০২:৪৪ পি.এম | ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫


বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অন্তর্র্বতী সরকার অধ্যাদেশ এবং আইন সংশোধনের পদক্ষেপ নিয়েছিল, কিন্তু হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নিলেন এটা করা যাবে না। কিন্তু কেন? আপনারা চাইবেন একদিকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক, অন্যদিকে বিচার করবেন না। আবার পুলিশ দিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দেবেন। এত স্ববিরোধিতা ঠিক নয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করেছে। সেই আওয়ামী লীগ একই নামে বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না। সেই আওয়াজ এখন আমরা উঠাচ্ছি।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘জাতীয় ঐক্য ও বর্তমান বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আঞ্চলিক সম্পাদক পরিষদ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কে একদিকে চাবেন তারা রাজনীতিতে নিষিদ্ধ হউক আবার আপনারা তাদের বিচার করবেন না, পুলিশ দিয়ে তাদের কর্মসূচি বাধা দিবেন, এতো স্ববিরোধীতা ঠিক নয়। আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বৈপ্লবিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ কে প্রত্যাহার করেছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাদের বিতারণ করেছে।

আওয়ামী লীগ বিষয়ে অন্তর্র্বতী সরকারের অবস্থানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনারা আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের জন্য মাঠে নামতে দিবেন না। আমরা এটা সমর্থন করি, কিন্তু এইভাবে কতদিন রাজপথে পুলিশ দিয়ে ঠেকাবেন? আপনারা বলবেন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কে চাই না, আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে না কিন্তু কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন? আইনি কোন পদক্ষেপ কি এই সরকার নিচ্ছে?

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগের গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে বিচার দাবি করছি। বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হোক বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে কিনা, নির্বাচন করতে পারবে কিনা।

তিনি বলেন, অধস্তন আদালতের যে সকল বিচারকরা নিশিরাতে আদালত বসিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সাজা দিয়েছেন। আমি শিলং এ থাকা অবস্থায়ও আমার বিরুদ্ধে একটি মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। যাতে দেশে এসে কোনোমতে নির্বাচন করতে না পারি। হাসিনার অধীনে নির্বাচন করে কে? তারপরও নিশি রাতে আদালত বসিয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাজা নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা এখন কোথায় আছে আমরা সব জানি। কিন্তু কারো বিরুদ্ধে কি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? হয়নি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের যত নেতা কর্মী হত্যা কিংবা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার হচ্ছেন। শুনেছি পাঁচশ থেকে সাড়ে পাঁচশ গ্রেপ্তার হয়েছেন। সকলে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। কারা জামিন দিচ্ছেন ওই বিচারকরাই।

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বলেছিলাম, সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের ব্যবস্থা করা হউক। সে অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন সংশোধন করার দাবি জানিয়েছিলাম।

বিএনপির এই নেতা বলেন, কেউ কেউ বলতে শোনা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যাদের বিচার হচ্ছে সেই বিচারে হয়তো অবজারভেশন আসবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি বিষয়ে, সেটা অত্যন্ত দুর্বল অবজারভেশন হবে। তখনো আপনাদের কে প্রশাসনিক আদেশ দিতে হবে, আইন প্রণয়ন করতে হবে সেই অবজারভেশনের নিরিখে। এখন যদি আপনারা সোচ্চার হন বিচারের জন্য, বাংলাদেশের মানুষ চায় বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির একদম নির্মূল হয়ে যাক সেই ব্যবস্থা আপনারা নিতে পারেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, নির্বাচনমুখী সংস্কারের জন্য যে সমস্ত সংস্কার স্বল্প মেয়াদে সংস্কার করা দরকার সেগুলো চিহ্নিত করুন, সকল মহলের সঙ্গে আলোচনা করুন, সেগুলোর আইনি সংস্কার করুন। আইনি সংস্কারের পর যদি প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের প্রয়োজন হয় সেটা করবেন, সেজন্য কত সময় লাগবে সেটা আমরা জানি।

্রিন্ট

আরও সংবদ