খুলনা | বুধবার | ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | ২৩ মাঘ ১৪৩১

‘শেখ হাসিনা ভারতে বসে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালালে দায় তাদের নিতে হবে’

খবর প্রতিবেদন |
০৬:২৭ পি.এম | ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫


ঢাকা: তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ভারত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে, এটা নিয়ে তাদের বক্তব্য রয়েছে। আমরা সেটা তাদের কাছ থেকে জানতে চাই। অন্যদিকে, শেখ হাসিনা যদি ভারতে বসে কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম চালায় তার দায় ভারতকে নিতে হবে। এবং অবশ্যই এই কর্মকাণ্ডের দায় হিসেবে আমরা ভারতের কাছে জবাবদিহিতা চাইব।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় বাংলা একাডেমির শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে ‘সংবাদপত্রে জুলাই অভ্যুত্থান’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও উপস্থিত ছিলেন।

ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে ছাত্র-জনতা মাঠে থাকবে উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, ‘তারা ভারতে ভয় আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। আমরা বলতে চাই, আতঙ্ক ছড়িয়ে লাভ নেই। ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে ছাত্র-জনতা মাঠে আছে, মাঠে থাকবে।’

আন্দোলনে গণমাধ্যমের ভূমিকা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনে সংবাদমাধ্যমগুলোর ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই ভূমিকাই ছিল। ১৪ তারিখ পর্যন্ত কোটা আন্দোলনই ছিল। ১৬ তারিখ থেকে সেটা সরকার পতনের আন্দোলনে দিকে ধাবিত হওয়া শুরু করে। এরপর পত্রিকাগুলো নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে শুরু করে। অনেকে অনলাইন থেকে তাদের রিপোর্ট সরিয়ে নিলেও পত্রিকাগুলো আমরা আর্কাইভ করার ব্যবস্থা করে রাখি।’

তিনি বলেন, ‘ডিজিএফআই পত্রিকাগুলোকে চালাতো, তারা আমাদের বিরুদ্ধে লিখতে বাধ্য করতো। সেসময় যেসব গণমাধ্যম সরকারের পক্ষে কাজ করেছে, সেটা বাধ্য হয়ে বা আদর্শিক কারণেই হোক সেই বক্তব্য তারা প্রকাশ করছে না। আমি মনে করি, নৈতিক কারণেই তাদের বক্তব্য প্রকাশ করা উচিত। এতে মানুষের হারানো বিশ্বাস হয়তো কিছুটা ফিরে আসবে। এখনো অনেক প্রতিষ্ঠান সরকারের বিরুদ্ধে অযৌক্তিক সমালোচনা করেই যাচ্ছে। আমি চাইব, আমরা ছোটখাটো বিষয়ে বিভেদ না করে আমাদের লড়াইকে পূর্ণভাব ব্যাখা করব।’

বইয়ের লেখক এবং প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব আহম্মদ ফয়েজ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে যখন পাখির মতো মানুষকে হত্যা করা হচ্ছিল, তখন আমি দেখছিলাম গণমাধ্যমের ভূমিকা কী। তখন সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা দেখে ভেবেছিলাম এটা আমাদের কাজ হতে পারে না। সেই তাগিদ থেকেই আমি গণমাধ্যমের ভূমিকাকে প্রকাশ করতে বই আকারে ছাপানোর চিন্তা করি। ভবিষ্যতে ইতিহাস আড়াল করতে যেন কেউ না পারে সেজন্য আমি এই কাজটা করি। ভবিষ্যতে ইতিহাস লেখা হলে অনেক সংবাদমাধ্যমকে মুখ লুকাতে হবে। আশা করি পাঠক অভ্যুত্থান কেন্দ্রিক গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে সত্য ইতিহাস জানতে পারবে।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘১৯৭২ সালের পরে আমাদের ডকুমেন্টেশনে অনেক খারাপ ছিল। ফলে সেসময় যারা ভিলেন ছিল তাদের অনেকে হিরো, আবার যারা হিরো ছিল তারা ভিলেন হয়ে গিয়েছিল। স্বাধীনতার ছয় মাস পরেই পত্রিকাগুলো মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলা বাদ দিয়েছিল। তখন এমন পরিস্থিতি ছিল মানুষ যুদ্ধ নিয়ে ভাবা তো পরে, পরের দিন কী খাবে তা নিয়েই ব্যস্ত ছিল।’

তিনি বলেন, ‘২৪-এর আন্দোলন মহৎ একটা আন্দোলন ছিল। যার ডকুমেন্টেশন ব্যপকভাবে হচ্ছে। বই লেখা হচ্ছে, অনলাইনে ডকুমেন্টেশন করা হচ্ছে। গ্রাফিতি আঁকা হচ্ছে, ভিডিওগুলো ডকুমেন্টেশন করা হচ্ছে। এই গণহত্যা কারা করেছে এগুলো ওয়েল ডকুমেন্ডেড। কারও পার পাবার সুযোগ নেই। আমরা জানি, এই আন্দোলনে কার কী ভূমিকা ছিল। আহম্মদ ফয়েজ অত্যন্ত চমৎকার একটি কাজ করেছে। আমি চাই বইটি সকলের হাতে হাতে পৌঁছে যাক। ভবিষ্যতে এই বইটি অনেক গুরুত্ব বহন করবে বলে প্রত্যাশা রাখি।’

উল্লেখ্য, জুলাই অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে ২৫টি শীর্ষ জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠার প্রতিবেদককে ডকুমেন্টস আকারে প্রকাশিত ‘সংবাদপত্রে জুলাই অভ্যুত্থান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। বইটির লেখক আহম্মদ ফয়েজ।

্রিন্ট

আরও সংবদ