খুলনা | বুধবার | ১২ মার্চ ২০২৫ | ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

গুলশানে বিলাসবহুল ভবনের বাসিন্দা টিউলিপ

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪২ এ.এম | ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫


বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি বিলাসবহুল ১০ তলা ভবনের বাসিন্দা হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম তালিকাভুক্ত ছিল। তার পরিবারের নামে ভবনটির নামকরণ হয়। এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ। টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের সাবেক দুর্নীতি বিরোধী মন্ত্রী। তিনি দেশটির ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি)। তার খালা শেখ হাসিনা।
ঢাকার কর্মকর্তাদের ধারণা, ২০১৪ সালে টিউলিপের ‘স্থায়ী ঠিকানা’ ছিল ‘সিদ্দিকস’ নামে ঢাকার এই এ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স। ওই সময় তিনি যুক্তরাজ্যের উত্তর লন্ডনের ক্যামডেনের কাউন্সিলর ছিলেন।
এ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সটির অবস্থান ঢাকার গুলশানে। এই এলাকায় বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের পাশাপাশি বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
আদালতের নথিপত্র বা সংবাদ প্রতিবেদনের তথ্যমতে, এ নিয়ে বাংলাদেশে টিউলিপের সঙ্গে সম্পর্কিত পঞ্চম সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গেল। যদিও যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশে টিউলিপের কোনো সম্পত্তি নেই। তাই এ নিয়ে কোনো প্রশ্নের জবাব দেওয়ারও দরকার নেই।
যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে টিউলিপ সিদ্দিক প্রায় এক মাস আগে পদত্যাগ করেন। কিন্তু তিনি এখনও সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়সহ বাংলাদেশে তার খালা শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের সঙ্গে যোগসূত্র নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন। 
টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভার সদস্যদের মানদণ্ড বিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাস তদন্ত করেন। তদন্তে তিনি দেখতে পান, শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক ব্যক্তির কাছ থেকে টিউলিপ উপহার পান একটি ফ্ল্যাট। এ নিয়ে তিনি অসাবধানতাবশত জনগণকে বিভ্রান্ত করেছেন। এই তদন্তের জেরে টিউলিপ পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।
অল্প সময়ের জন্য সিটি মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন টিউলিপ। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা ছিল তার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত বিষয়। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির লন্ডনের সম্পত্তি ব্যবহার করা নিয়ে কয়েক সপ্তাহের প্রশ্নের পরে টিউলিপ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের জন্য লাউরির প্রতি আহŸান জানিয়ে ছিলেন।
৭৭ বছর বয়সী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে এখন তিনি ভারতে আছেন। এ ঘটনায় দেড় হাজার মানুষ নিহত হন।
শেখ হাসিনার শাসনামলে বিরোধীদের ওপর হামলা, গ্রেফতার এবং গোপনে কারাগারে বন্দি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই সময় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল।
গাজীপুরের কানাইয়া এলাকায় ‘টিউলিপস টেরিটরি’ নামের প্লটসহ একটি পারিবারিক অবকাশ যাপনের বাগান বাড়ি নিয়ে তদন্ত করছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন। এ তথ্য সামনে আসার এক দিন পর গত শনিবার গুলশানের সম্পত্তির সঙ্গে টিউলিপের যোগসূত্রের তথ্য জানতে পারে দ্য টেলিগ্রাফ।
একটি আনুষ্ঠানিক নথিতে দেখা যায়, গুলশানের সম্পত্তিটি টিউলিপের ‘বর্তমান’ ও ‘স্থায়ী’ উভয় ঠিকানা হিসেবেই বিবেচিত হয়েছিল।
একটি অফিসিয়াল নথিতে দেখা যায়, সম্পত্তিটি তার ‘বর্তমান’ এবং ‘স্থায়ী’ ঠিকানা উভয়ই বিবেচনা করা হয়েছিল। নথিটি প্রকাশ হয় ২০১৪ সালের মে মাসে টিউলিপের ক্যামডেনের কাউন্সিলর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর তিন সপ্তাহ পর।
গুলশান এলাকার ১০ তলা এ্যাপার্টমেন্টটি ২০১০ সালের দিকে নির্মিত হয়। একটি প্রচারমূলক ভিডিওর তথ্য অনুসারে, ফ্ল্যাটে একাধিক বারান্দা ও তিনটি শয়নকক্ষ রয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর একটি ঢাকা। এ শহরে দুই কোটির বেশি মানুষ বসবাস করে। ঢাকার বেশির ভাগ অধিবাসী যে পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করেন, তার বিপরীত চিত্র এসব প্রশস্ত ফ্ল্যাট। ভবনটি টিউলিপের বাবা শফিক আহমেদ সিদ্দিক, টিউলিপের নানা কিংবা এই পরিবারের নামে কি না, তা-ও স্পষ্ট নয়।
সম্পত্তিটি সম্পর্কে জানা এক ব্যক্তির ধারণা, এই পরিবারের এক সদস্যের মালিকানাধীন জমিতে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু এই ভবনের কোনো ফ্ল্যাটের মালিক এই পরিবার কি না কিংবা বিশেষ ভাবে এটি কার নামে নামকরণ করা হয়েছে। সে সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টি।
টিউলিপের বাবা (শফিক আহমেদ সিদ্দিক) যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-সেখানকার একটি অনলাইন জীবনীর তথ্যানুসারে, সা¤প্রতিক সময়ে সেখানে বসবাসকারী হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন শফিক। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিক।

্রিন্ট

আরও সংবদ