খুলনা | রবিবার | ২৩ মার্চ ২০২৫ | ৯ চৈত্র ১৪৩১

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে মির্জা ফখরুল

ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার

খবর প্রতিবেদন |
১১:৪৬ পি.এম | ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫


চলতি বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিএনপি’র শীর্ষ তিন নেতা। মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমদ।
এর আগে গত ৭ ফেব্র“য়ারি দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপরই বিএনপি’র পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চাওয়া হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সঙ্গে যারা ছিলেন, তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, অতি দ্রুত তারা নির্বাচনের ব্যবস্থা করছেন। তিনি বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা করার জন্য কাজ করছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা আশা করব, জনগণের যে প্রত্যাশা আছে, একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।
তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টাসহ সেখানে যারা ছিলেন, তারা অতি দ্রুত একটি নির্বাচন দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেনও, ডিসেম্বরের মধ্যে একটি নির্বাচন দেওয়ার জন্য তারা কাজ করছেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি এবং জনগণও প্রত্যাশা করছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল-আমরা অতি দ্রুত প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে উদ্বেগের বিষয়গুলো তার সামনে তুলে ধরবো। দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে এটা আমাদের দায়িত্ব ছিল। আমরা সেই দায়িত্বটুকু পালন করেছি। আমরা তার সামনে তুলে ধরে বলেছি, যেসব ঘটনা ঘটেছে তার দায় সরকার এড়াতে পারেন না। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বাহিনীগুলোর সামনেই এই ঘটনাগুলো একের পর এক ঘটেছে। যা সার্বিক ভাবে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্থিতিশীলতাকে যথেষ্ট ভাবে বিপন্ন করেছে। ফ্যাসিবাদকে সুযোগ করে দিয়েছে এই সম্পর্কে কথা বলার।
তিনি বলেন, এই সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের জন্য তাগাদা দিয়েছি। ন্যূনতম যে সংস্কার সেই কাজগুলো করে, রিফর্ম কমিশনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে, একমত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার বিষয় নিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। এখনো প্রশাসনে যেসব ফ্যাসিবাদের দোসর রয়েছে এবং সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছেন তাদেরকে আইনের আওতায় আনা এবং প্রশাসন থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছি। যারা অর্থনীতির লুট করেছে, লুণ্ঠন করেছে তাদের টাকা ফিরিয়ে আনা এবং আইনের আওতায় আনার জন্য দাবি তুলেছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিগত ১৫ বছরে মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা হয়েছে। তাদের মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা বলেছি। তারা এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। আমরা দ্রব্যমূল্যের বিষয়ে অত্যন্ত জোরালোভাবে বলেছি, এই সরকারের অন্যতম ব্যর্থতা হচ্ছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারা। এ বিষয়ে তারা বলেছেন, এটি নিয়ে তারা কাজ করছেন।
অভিযান ডেভিল হান্টের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সবশেষে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে তাদেরকে বলেছি অতীতেও অনেক অভিযান হয়েছে। অতীতের মতো যেন ইনোসেন্ট যারা আছেন তাদের কিছু না হয়। এটা নিয়ে যেন সমস্যা না হয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন ইস্যুতে আমরা কোনোভাবেই একমত হব না। খুব পরিষ্কার করে আগেও বলেছি, এখনও বলছি-জাতীয় সরকারের আগে কোনো নির্বাচন হবে না।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বিএনপি’র প্রতিনিধিদল দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করে। এ ছাড়া নেতারা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ সারাদেশে ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে বিএনপি’র দলীয় অবস্থান তুলে ধরেন।  
সরকারের সহযোগিতার পাশাপাশি তারা দ্রুত নির্বাচনের কথাও তুলে ধরেন। এজন্য দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ জানতে চান বিএনপি নেতারা।
 

্রিন্ট

আরও সংবদ