খুলনা | বুধবার | ১২ মার্চ ২০২৫ | ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

তদন্তে একই সংস্থা, ২৭ এপ্রিল তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ আদালতের

আওয়ামী সমর্থিত স্বাচিপ নেতা ডাঃ তারিমের মামলায় আসামি ঢাকা সিআইডি’র ৬ কর্মকর্তা ও দুই সাংবাদিক

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:৪৩ এ.এম | ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫


নগরীর মেডিকেল কোচিং সেন্টার থ্রি ডক্টরস-এর কর্ণধর ডাঃ মোঃ ইউনুচ উজ্জামান খাঁন তারিমসহ ৬ ডাক্তারকে অবৈধভাবে গ্রেফতার ও প্রাণনাশের চেষ্টার অভিযোগে ঢাকা সিআইডির ৬ কর্মকর্তা ও চ্যানেল ২৪-এর দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে।  
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-এর আমলী (খুলনা থানা) আদালতে ১২ ফেব্র“য়ারি আরজিটি দায়ের করেন ডাঃ মোঃ ইউনুচ উজ্জামান খাঁন তারিম। অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ আনিচুর রহমান আরজিটি আমলে নিয়ে আগামী ২৭ এপ্রিল সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপারকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন। 
উলে­খ্য, ডাঃ তারিম আওয়ামীপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) খুলনা জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অন্যদিকে মামলটি দায়ের ও গ্রেফতার হয়েছিলেন নিজ সমর্থিত দলের সময়। আর শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যাবার ৬ মাস পর আদালতে মামলাটি করেছেন ডাঃ মোঃ ইউনুচ উজ্জামান খাঁন তারিম।
আরজিতে উলে­খিত আসামিরা হলেন, সাইবার ইনভেস্টিগেশন এন্ড অপারেশানস সিআইডি কার্যালয়ের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা, সিআইডি’র এসআই মোঃ মেহেদী হাসান, এসআই মোঃ আতিকুর রহমান, এসআই মোঃ লালবুর রহমান, এসআই মিল্টন দেবনাথ, এসআই শিব্বির আহমেদ, চ্যানেল ২৪-এর সিনিয়র রিপোর্টার আব্দুল­াহ আল ইমরান ও চ্যানেল ২৪ এর রিপোর্টার মোঃ তানজীর।  
আরজি সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০২১ সালের ২১ মার্চ হতে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে আসামিরা চ্যানেল ২৪ এর সিনিয়র রিপোর্টার আব্দুল­াহ আল ইমরানের মাধ্যমে ডাঃ তারিমের নিকট চাঁদা দাবি করে এবং বলে চাঁদা না দিলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে কোচিং সেন্টার বন্ধ করে দিবে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে ২০২৩ সালের ১৮ আগস্ট ভোর ৬টার দিকে ডাঃ তারিমনহ ৬ জন চিকিৎসককে সিআইডি গ্রেফতার করে ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে তাদের ইলেকট্রিক শক ও হত্যার হুমকি দিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করে ভিডিও ধারণ করে টিভি চ্যানেলে প্রকার করে। আসামিরা বেআইনি ভাবে ১৮ সেপ্টেম্বর ৭ লাখ এবং ২১ সেপ্টেম্বর ৩ লাখ টাকাসহ মোট ১০ লাখ টাকা নিয়ে নেয় ডাঃ তারিমের কাছ থেকে। এছাড়া রিমান্ডে নিয়ে ডাঃ তারিমকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় নগরীর মেডিকেল কোচিং সেন্টার থ্রি ডক্টরস এর কর্ণধর ডাঃ মোঃ ইউনুচ উজ্জামান খাঁন তারিম বাদী হয়ে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-এর আমলী খুলনা থানা আদালতে আরজিটি দায়ের করেন (নং-সিআর ২০০/২৫)।  
উলে­খ্য, মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে খুলনার থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের মালিককে আটক করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তার নাম ডাঃ ইউনুস খান তারিম। ২০২৩ সালের ১৮ আগস্ট সকালে তাকে খুলনা থেকে আটক করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। ডাঃ তারিমের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন খুলনা সদর থানার তৎকালীন ওসি হাসান আল মামুন। 
এর আগে ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবরে অভিযান চালিয়ে খুলনায় মেডিকেল ভর্তি কোচিং ‘থ্রি ডক্টরস’ বন্ধ করে দেন জেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে কোচিংয়ের পরিচালক ইউনুস খান ওরফে তারিমকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দেন। এছাড়া অধিকতর তদন্তের জন্য তাঁকে ২৪ ঘণ্টার জন্য থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। এ সময় ইউনুস খান খুলনা থানায় আটক থাকবেন বলে ভ্রাম্যমাণ আদালত নির্দেশনা দেন। নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তৎকালীন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এ তথ্য জানান।  জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম মোঃ ইমরান খান ও মোঃ মিজানুর রহমান ওই অভিযান পরিচালনা করেন।  
 

্রিন্ট

আরও সংবদ