খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৩ মার্চ ২০২৫ | ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১

প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি

সুন্দরবন রক্ষার্থে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল দাবি কৃষি-শিল্প কমিটির

খবর বিজ্ঞপ্তি |
০২:১২ এ.এম | ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫


সুন্দরবন দিবস উপলক্ষ্যে কৃষি-শিল্প-পাট ও পরিবেশ রক্ষায় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে নাগরিক পদযাত্রা গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নগরীর শহিদ হাদিস পার্ক থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। এখানে কমিটির উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তৃতা করেন নাগরিক কমিটির সভাপতি এড. কুদরত-ই-খুদা ও সাধারণ সম্পাদক সুতপা বেদজ্ঞ।
সমাবেশ শেষে খুলনার জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলামের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা এবং খুলনার বন সংরক্ষক মিহির কুমার দোর মাধ্যমে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ২০২২ ও ২০২৩ সালে বহুল আলোচিত পরিবেশ বিধ্বংসী রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দু’টি ইউনিট চালু হওয়ার পর যান্ত্রিক ত্র“টি ও কয়লা সংকটে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫ বার বন্ধ হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, কয়েক বছর আগে মাছ থাকলেও বিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্জ্য পানিতে ছড়িয়ে পড়ায় নদীতে মাছ কমতে শুরু করেছে। এ ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের কারণে চারণভ‚মির পরিমান কমে গেছে, এতে গবাদি পশু পালন কঠিন হয়ে পড়েছে। জীবিকার একটি বড় ক্ষেত্র নষ্ট হয়ে গেছে, বাধ্য হয়ে দূর-দূরান্তে কাজে যেতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে। সিইজিআইএস এর গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়ী কয়লা পরিবহনে দূষিত হচ্ছে সুন্দরবন এলাকার নদী ও বন। শর্ত ভঙ্গ করে জেটি থেকে উন্মুক্তভাবে খালাস করা কয়লা সরাসরি পড়ছে নদীতে এবং নির্গত পানি পরিশোধন ছাড়াই মিশছে প্রকৃতিতে। এলাকায় বাড়ছে নাইট্রেট, ফসফেস, পারদসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিকের মাত্রা। এতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে জলজ ও বনজ জীববৈচিত্রের ওপর। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল করার পক্ষে বাংলাদেশে শক্তিশালী জনমত রয়েছে।
এই বাস্তবতায় সুন্দরবন বাঁচাতে আমরা দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের নাগরিকবৃন্দের পক্ষে ‘কৃষি-শিল্প-পাট ও পরিবেশ রক্ষায় নাগরিক কমিটি’ সুনির্দিষ্ট কিছু দাবি সুবিবেচনা ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পেশ করেছে।
দাবিনামা নিম্নরূপ : বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিকল্প আছে কিন্তু সুন্দরবনের কোনো বিকল্প নেই। তাই সুন্দরবন ধ্বংসকারী ‘রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র’ অবিলম্বে বন্ধ, বাংলাদেশের ফুসফুস সুন্দরবন রক্ষায় জাতীয় বাজেটে আলাদা বরাদ্দ রাখা, সুন্দরবন বাঁচাতে এখনই বনের ১০ কিঃমিঃ মধ্যে ভারী শিল্প স্থাপনা নিষিদ্ধসহ পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকার (ইসিএ) নীতিমালার বাস্তবায়ন, সুন্দরবনে যারা বিষ দিয়ে মাছ ধরছে দ্রুত তদন্ত করে সেই সকল অপরাধীদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা এবং খুলনায় একটি পরিবেশ আদালত স্থাপন, সুন্দরবন ও সুন্দরবনের প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করতে পরিবেশ বান্ধব পর্যটন নিশ্চিত করা, সুন্দরবন রক্ষায় যুগোপযোগী ও বাস্তবভিত্তিক ‘সুন্দরবন রক্ষায় বিশেষ আইন’ তৈরি এবং বিশ^ ঐতিহ্য সুন্দরবন রক্ষায় জাতীয় ভাবে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণা করা।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা বীরমুক্তিযোদ্ধা এড. আ ফ ম মহসীন, ডাঃ মনোজ দাশ, গাজী নওশের আলী, এড. তসলিমা খাতুন ছন্দা, সহ-সভাপতি এস এ রশীদ, মুনীর চৌধুরী সোহেল, মোঃ মোজাম্মেল হক খান, মাহফুজুর রহমান মুকুল, যুগ্ম-সম্পাদক এস এম চন্দন, কোষাধ্যক্ষ প্রাণী প্রেমী এস এম সোহরাব হোসেন, দপ্তর সম্পাদক আফজাল হোসেন রাজু, সদস্য মতিয়ার রহমান, সরদার আবু তাহের, ইকবাল হাসান তুহিন, সাংবাদিক এইচ এম আলাউদ্দীন, শরিফুল ইসলাম সেলিম, কাজী জাভেদ খালিদ পাশা, গাজী আফজাল হোসেন, কবি নাজমুল তারেক তুষার, মাজেদা খাতুন ও সামিমা আক্তার জুঁই প্রমুখ।
 

্রিন্ট

আরও সংবদ