খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৩ মার্চ ২০২৫ | ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১

পাঠ্যবই সংকটে শিক্ষার্থীরা মুদ্রণ দ্রুত সম্পন্ন করুন

|
১২:০১ এ.এম | ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫


শিক্ষাবর্ষের দেড় মাস চলে গেছে। ফেব্র“য়ারি মাসের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই তুলে দেওয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), তা সম্ভবত রক্ষা করা যাবে না। কারণ গণমাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এখনো প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি বই ছাপাই হয়নি। এর অর্থ এখন পর্যন্ত ৪০ কোটি বইয়ের একটি বড় অংশই ছাপা সম্পন্ন হয়নি।
সব বই মুদ্রণ শেষে কবে নাগাদ সারা দেশের শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো যাবে, তা-ও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। শিক্ষকরা বলছেন, বই ছাড়া স্কুলে শিক্ষাক্রম এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অথচ রোজা শুরু হতে বাকি রয়েছে মাত্র দুই সপ্তাহ। রোজা ও ঈদের ছুটির পর স্কুলে পুরোদমে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হতে এপ্রিলের মাঝামাঝি হয়ে যাবে।
আবার বছরের শেষ দিকে বা ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হলে নভেম্বরের মধ্যেই সব স্কুলে চূড়ান্ত পরীক্ষা নিয়ে নিতে হবে। ফলে চলতি শিক্ষাবর্ষে শিক্ষাক্রম সম্পন্ন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।
জানা যায়, এমন জটিল অবস্থার জন্য এখন এনসিটিবি ও প্রেস মালিকরা পরস্পরকে দুষছেন। এনসিটিবি বলছে, কয়েকজন প্রেসমালিক বা মুদ্রণকারী নিজেদের সক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি কাজ নিয়েছেন।
ফলে তাঁরা এখন সময়মতো বই সরবরাহ করতে পারছেন না। এ কারণে অনেক বই আটকে গেছে। অন্যদিকে মুদ্রণকারীদের অভিযোগ, গত বছরের শেষ দিকে একসঙ্গে সব ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে। আবার বাজারে কাগজেরও সংকট রয়েছে। ফলে এর চেয়ে বেশি গতি বাড়ানোর সুযোগ তাঁদের ছিল না।
সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলছেন, এনসিটিবি যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিতে পারেনি। ৪০ কোটি বই ছাপাতে কত হাজার টন কাগজ প্রয়োজন এবং দেশে কাগজের পর্যাপ্ততা আছে কি না সেসব তারা বিবেচনায় নেয়নি। প্রেসগুলোর কতটুকু সক্ষমতা আছে, তা-ও হিসাব করেনি। শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, স্কুল-কলেজে সব ধরনের ছুটিছাটা বাদ দিয়ে এক শিক্ষাবর্ষে সাধারণত ক্লাস-পরীক্ষা চলে ১৮৫ দিন। আর সেই অনুসারেই শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়। এ বছর শিক্ষাক্রম সম্পন্ন করার সুযোগ খুবই কম। শিক্ষকরা জোর করে পড়া চাপিয়ে দিলেও শিক্ষার্থীরা তা ঠিকমতো আয়ত্তে নিতে পারবে না। এতে এ বছর বড় ধরণের শিখন ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
অনেক বছর ধরেই বছরের প্রথম দিন বই উৎসব হতো, শিক্ষার্থীরা হাতে বই পেয়ে যেতো। নানা কারণে এ বছর সেই প্রথা ধরে রাখা যায়নি। আমরা আশা করি, যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে হবে এবং যতটা সম্ভব তাদের ক্ষতি কমিয়ে আনতে হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ