খুলনা | বুধবার | ০২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি : অপরাধ দমনে আরও তৎপর হওয়া প্রয়োজন

|
১২:৪২ এ.এম | ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫


রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। রোববার ছিনতাই-চাঁদাবাজির একাধিক খবর প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। শুধু সন্ধ্যা বা রাত নয়, দিনদুপুরেও ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন এলাকায় প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলিতে এখন বেপরোয়া ছিনতাইকারীদের অবাধ বিচরণ। এরা ছিনতাই করেই ক্ষ্যান্ত হচ্ছে না; শারীরিকভাবে ক্ষতিও করছে। স¤প্রতি রাজধানীর উত্তরায় রামদা দিয়ে দুই নরনারীকে কোপানোর ভয়াল দৃশ্যের জের কাটতে না কাটতেই দিনদুপুরে যাত্রীবাহী বাসে প্রকাশ্যে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। রাতেও দূরপাল­ার বাসে সর্বস্ব লুটের ঘটনা ঘটছে। চাঁদা না দেওয়ায় চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে কোপানোর ঘটনাও বুঝিয়ে দিচ্ছে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, কিশোর গ্যাংদের নৈরাজ্য কোথায় গিয়ে ঠেকেছে। কিশোর গ্যাংসহ নানা শ্রেণির অপরাধীরা যেভাবে দাপটের সঙ্গে অস্ত্র ব্যবহার করছে, তাতে দেশবাসীর নিরাপত্তা যে সংকটে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অবশ্য ‘ডেভিল হান্ট’সহ অপরাধীদের ধরতে কাজ করছে। বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অপরাধীদের গ্রেফতারও করছে; কিন্তু অপরাধ দমনে তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে কই! ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ফুটপাত দখল, আধিপত্য বিস্তার, রাজনৈতিক বিরোধ কিংবা সামান্য দ্ব›দ্ব-প্রায় সব ক্ষেত্রেই আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সাধারণ মানুষ। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্টদের মতে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্ত্রবাজির পেছনে বিগত জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্র লুটেরাদের ভূমিকা রয়েছে। জেল পালানো ও জামিন নিয়ে বেমালুম বের হয়ে যাওয়া বড় অপরাধীরাও তাদের পুরোনো কর্মে ফিরে গেছে। কাজেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি না পেলে যে এ পরিস্থিতি অবনতি  বৈ উন্নতি হবে না, তা বলাই বাহুল্য।
আমরা মনে করি, যে কোনো মূল্যে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার বিকল্প নেই। জুলাই বিপ্লবের পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে পুরোপুরি কার্যকর করা যাচ্ছে না কেন, তা খতিয়ে দেখতে হবে। প্রয়োজনে যৌথ বাহিনীর অভিযানের পরিধি বাড়াতে হবে। ঘটনা ঘটে গেলে নয়, অঘটনের আগেই তা ঠেকাতে গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে। ব্যর্থতার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের কঠোর জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। বিশেষ করে আইন-শৃঙ্খলার সঙ্গে জড়িত কেউ অপরাধীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে কি না কিংবা নিজেরাই জড়িয়ে পড়ছে কি না, সেদিকেও নজর দিতে হবে। রাজধানীসহ সারা দেশে হত্যা-খুনসহ সব ধরনের অপরাধ ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি নিরসনে অন্তর্র্বর্তী সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।

্রিন্ট

আরও সংবদ