খুলনা | শুক্রবার | ১৪ মার্চ ২০২৫ | ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১

স্তন ক্যানসারে প্রতি মিনিটে বিশ্বে একজনের মৃত্যু, আক্রান্ত চার: ডব্লিউএইচও

খবর প্রতিবেদন |
০১:১১ পি.এম | ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নতুন একটি বিশ্লেষণে উঠে এসেছে বর্তমান বিশ্বে স্তন ক্যানসারের ভয়াবহতা। বিশ্বের প্রতি ২০ জন নারীর মধ্যে একজনের স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা জানিয়েছে সংস্থাটি। ডব্লিউএইচও জানায়, যদি বর্তমান নির্ণয়ের হার অব্যাহত থাকে, তবে ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতি বছর ৩২ লাখ নতুন স্তন ক্যানসার রোগী পাওয়া যাবে। আর মৃতের পরিমাণ দাঁড়াবে ১১ লাখে। প্রতি ৭০ জনের মধ্যে একজন মারা যাবে এই রোগে।

আন্তর্জাতিক ক্যানসার গবেষণা এজেন্সির (আইএআরসি) গ্লোবাল ক্যানসার অবজারভেটরি, ক্যানসার ইনসিডেন্স ইন ফাইভ কনটিনেন্টস ও ডব্লিউএইচও মর্টালিটি ডেটাবেইসের ওপর ভিত্তি করে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী প্রায় ২৩ লাখ স্তন ক্যানসারের নতুন রোগী এবং ৬ লাখ ৭০ হাজার নারীর স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়।

বিশ্লেষণ অনুযায়ী, স্তন ক্যানসারে আক্রান্তের হার অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি। এর পরে রয়েছে উত্তর আমেরিকা ও উত্তর ইউরোপ। সবচেয়ে কম স্তন ক্যানসার আক্রান্ত দক্ষিণ-মধ্য এশিয়া, মধ্য আফ্রিকা এবং পূর্ব আফ্রিকায়। মেলানেশিয়া, পলিনেশিয়া, পশ্চিম আফ্রিকাতে স্তন ক্যানসারে মৃত্যু সবচেয়ে বেশি। পূর্ব আফ্রিকা, কেন্দ্রীয় আমেরিকা ও উত্তর আমেরিকায় সবচেয়ে কম।

প্রতিবেদনটির সহলেখক আইএআরসির বিজ্ঞানী ড. জোয়ান কিম বলেন, ‘প্রতি মিনিটে বিশ্বের চারজন নারী স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং একজন নারী এই রোগে মারা যাচ্ছেন। এই পরিসংখ্যান আরও খারাপ হচ্ছে।’

স্তন ক্যানসারে আক্রান্তের হারের বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে নিম্ন মানব উন্নয়ন সূচক (এইচডিআই) যুক্ত দেশগুলোর ওপর। আইএআরসির ক্যানসার সার্ভিল্যান্স ব্রাঞ্চের ডেপুটি হেড ড. ইজাবেল সোজরমাটারাম বলেন, ‘এই প্রতিবেদনটি নিম্ন ও মাঝারি এইচডিআইযুক্ত দেশগুলোর জন্য উচ্চ-মানের ক্যানসার তথ্য এবং নতুন নির্ণয়ের সংখ্যা এবং ফলাফলের সঠিক রেকর্ড রাখার জরুরি প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে।’

স্তন ক্যানসারের উপসর্গ
স্তন ক্যানসারের সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে—স্তনে গুটির উপস্থিতি, স্তনের আকার বা রূপের পরিবর্তন, ত্বকে পরিবর্তন যেমন—দাগ, খোসা ওঠা, লালচে ভাব ও বগলে গুটি বা ফোলা।

স্তন ক্যানসার হয়েছে কি না পরীক্ষা করবেন যেভাবে
স্তন ক্যানসারের পরীক্ষা নিজেই করা যায়। স্তন পরীক্ষা করে দেখতে হবে, গুটি বা দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন হয়েছে কি না। এ ছাড়া ম্যামোগ্রাফি এক্স-রের মাধ্যমে স্তনের টিউমার বা অস্বাভাবিকতা শনাক্ত করা যায়। আলট্রাসাউন্ড স্তনের টিস্যুর ছবি তৈরি করে, যা ম্যামোগ্রাফি দ্বারা শনাক্ত করা নির্দিষ্ট অঞ্চলের পর্যালোচনা করতে সাহায্য করে।

এমআরআই স্ক্যান স্তনের বিস্তারিত ছবি তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। আরেকটি পদ্ধতি হলো বায়োপসি, যেখানে স্তনের টিস্যুর একটি ছোট নমুনা মাইক্রোস্কোপের অধীনে পরীক্ষা করা হয়।

এ ছাড়া, জেনেটিক পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারণ করা যায়, একজন ব্যক্তি স্তন ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি কি না।

জেনেটিক মিউটেশন ছাড়াও, ধূমপান, অতিরিক্ত মদ্যপান, স্থূলতাসহ বিভিন্ন কারণে স্তন ক্যানসার বিকাশ হতে পারে।

স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা
স্তন ক্যানসার নির্ণয়ের পর চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। এই পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে— কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি ও ইমিউনোথেরাপি।

্রিন্ট

আরও সংবদ