খুলনা | মঙ্গলবার | ১৮ মার্চ ২০২৫ | ৩ চৈত্র ১৪৩১

আহলান ও সাহলান হে মাহে রমজান

বরকতের খানা সেহরী

মুফতি রবিউল ইসলাম রাফে |
০১:৩৮ এ.এম | ০৯ মার্চ ২০২৫


আজ ৮ রমজান। রমজান মাস প্রভূত কল্যাণ ও বরকতের মাস। রমজানের একটি  গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সেহরী। রোজা পালনের উদ্দেশ্যে শেষ রাতের খানাকে সাহরী বা সেহরী বলা হয়। সেহরী খাওয়ার মধ্যে অনেক কল্যাণ নিহিত আছে। হাদিসে রাসুলে কারীম (সাঃ) এরশাদ করেন, তোমরা সেহরী খাবে কারণ সেহরীতে বরকত রয়েছে (বুখারী, মুসলিম)। সাহাবী হযরত ইরবায ইবনে সারিয়া (রাঃ) বলেন, একদা রমজানে হুজুর (সাঃ) আমাকে সেহরী খেতে ডাকলেন এবং বললেন, আস বরকতের খানার দিকে আস (আবু দাউদ, নাসায়ী)। মোল­া আলী ক্বারী (রহঃ) বলেন, অর্ধরাত থেকে সেহরীর সময় শুরু হয়। তবে কোন কোন প্রসিদ্ধ মুফাসসিরগণের মতে সেহরী রাতের ছয় ভাগের শেষ ভাগের নাম। অর্থাৎ যদি ১২ ঘন্টা রাত হয় তাহলে শেষের দুই ঘন্টা হবে সেহরীর সময়। তবে শেষের এই মতটিই হাদিসের সর্বাধিক অনুকূলে। এ প্রসঙ্গে জায়েদ বিন সাবেত (রাঃ) বলেন, আমরা হুজুর (সাঃ) এর সঙ্গে সেহরী খেয়েছি, অতঃপর নামাজের জন্য দন্ডায়মান হয়েছি। রাবি জিজ্ঞাসা করলেন, সেহরী ও ফজরের নামাজের মধ্যে কি পরিমাণ সময় ছিল? জায়েদ বিন সাবেত (রাঃ) উত্তর দিলেন, ৫০ আয়াত তেলাওয়াত পরিমাণ (বুখারী)। এই হাদিসের আলোকে ওলামায়ে কেরাম বলেছেন যে সুবহে সাদিকের ৫/৭ মিনিট আগেই সেহরী শেষ করা উচিত। ইফতার সময় হওয়ার সাথে সাথে এবং সেহরী বিলম্বে করা মোস্তাহাব বা উত্তম। যেহেতু সেহরী খাওয়ার মধ্যে অপরিসীম বরকত রয়েছে, সেহেতু সেহরীতে অবশ্যই কিছু না কিছু খাওয়া দরকার। একেবারে উপোস থাকা ঠিক নয়। যদি কিছু খাওয়ার সময় না থাকে তাহলে অন্তত এক গ্লাস পানি বা কয়েকটি খেজুর খেয়ে নিলেও সেহরীর বরকত হাসিল হবে এবং সুন্নতের উপর আমল হবে। কারণ হুজুর (সাঃ) এর সুন্নতের মধ্যেই হেদায়ত ও মুক্তি নিহিত রয়েছে। সেহরীর সময় উঠার আর একটি বাড়তি ফায়দা হল কিছু না  কিছু তাহাজ্জুদ নামাজের সুযোগ পাওয়া যায়। আল­াহর হাবীব (সাঃ) এরশাদ করেন, আমাদের রোজা আর আহলে কিতাবদের (ইহুদি ও খ্রিস্টান) রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সেহরী খাওয়া (মুসলিম)। তাই আসুন, আমরা সবাই মিলে নিয়মিত সেহরী করি এবং এর বরকত হাসিল করি। 
লেখক: আরবী সাহিত্যিক ও মুহাদ্দিস, জামি’য়া ইসলামিয়া মারকাযুল উলূম, বাগমারা, খুলনা।

্রিন্ট