খুলনা | মঙ্গলবার | ১৮ মার্চ ২০২৫ | ৩ চৈত্র ১৪৩১

আহলান ও সাহলান হে মাহে রমজান

তওবার মাধ্যমে বিপদ থেকে মুক্তি

মুফতি রবিউল ইসলাম রাফে |
০১:৫০ এ.এম | ১১ মার্চ ২০২৫


আজ ১০ রমজান। আজ শেষ হচ্ছে রহমত দশক। রমজান মাস তওবা, এস্তেগফার ও আল্লাহর কাছে গোনাহের জন্য মাফ চাওয়ার মাস। দুনিয়াতে যে সমস্ত বিপর্যয় ও আজাব আসে তা মানুষের দুই হাতের কামায়। আজ সমগ্র বিশ্ব করোনা ও ওমিক্রনের আঘাতে বিপর্যস্ত। এমতাবস্থায় আমাদের উচিত বেশী বেশী তওবা-এস্তেগফার করা ও মাফ চাওয়া। তওবা-এস্তেগফারের মাধ্যমেই কেবল এই মহামারি করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব। বনী আদম পাপ করবে এটাই স্বাভাবিক। বান্দা পাপ করতে ভালোবাসে আর আল্লাহ মাফ করতে ভালোবাসেন। এজন্য আমাদের অতীতের ভুল-ভ্রান্তির কথা স্মরণ করে আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে মাফ চাওয়া উচিত যাতে তিনি আমাদের সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেন। এই জন্য বেশী বেশী তওবা, এস্তেগফার এবং কান্নাকাটি করে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চাওয়া দরকার। আমরা যদি খাঁটি দিলে তওবা করি তাহলে আশা করা যায় পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ তায়ালা আমাদের গোনাহরাশি ক্ষমা করে দিবেন। আমরা মানুষ মাত্রই পাপ করবো, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আল্লাহ পাক এই পাপ মোচনেরও সুযোগ করে দিয়েছেন। পাপ মোচনের উপায় হলো তওবা করা। পেন্সিলের কালি যেমন ইরেজার দ্বারা মোছা যায় ঠিক তেমনি  তওবা দ্বারাও সমস্ত পাপ মোচন করা যায়। এই কারণেই আল্লাহ তায়ালা কুরআন শরীফে বেশী বেশী তওবার কথা বলেছেন। মহান আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, হে মানব সকল, তোমরা সকলেই আল­াহর কাছে তওবা কর (আল কুরআন)। অন্য এক আয়াতে মুমিনদের গুণাবলী বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা তওবাকারী, শুকরগোজার, দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্ত, রুকু- সেজদাহ আদায়কারী, সৎকাজের আদেশকারী, মন্দ কাজ থেকে নিষেধকারী এবং আল্লাহর দেয়া সীমাসমূহের হেফাজতকারী (সূরা তওবা: ১১২)। অন্যত্র আল­াহ তায়ালা মুমিনদেরকে উপদেশ দিচ্ছেন, তারা আল্লাহর কাছে কেন তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করে না? আল্লাহ যে ক্ষমাশীল, দয়ালু (আল মায়েদা: ৭৪)। আর এক আয়াতে আল্লাহ জাল্লা শানুহ এরশাদ করেন, যারা তওবা করেছে এবং নিজেদের অবস্থার সংশোধন করেছে এবং আল্লাহর পথকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে আল্লাহর আদেশ পালনকারী হয়েছে, তারা থাকবে মুসলমানদের সাথে। বস্তুত আল্লাহ তায়ালা শিগগিরই মুমিনদেরকে বড় প্রতিদান দেবেন (সূরা নিসা: ১৪৬)। হুজুর (সাঃ) এর অগ্র-পশ্চাৎ সমস্ত গোনাহ আল্লাহপাক মাফ করে দিয়েছিলেন। তারপরও তিনি উম্মতের শিক্ষার জন্য প্রতিদিন সত্তর থেকে একশ বার আল­াহর কাছে তওবা করতেন (মুসলিম)। আমাদেরও উচিত করোনা মহামারীর এই সময়ে বেশী বেশী তওবা-এস্তেগফার করা এবং সমস্ত উম্মতের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করা। 
লেখক : আরবী সাহিত্যিক ও মুহাদ্দিস, জামি’য়া ইসলামিয়া মারকাযুল উলূম, বাগমারা, খুলনা।

্রিন্ট