খুলনা | শুক্রবার | ১৪ মার্চ ২০২৫ | ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১

ধর্ষণের প্রতিবাদে উত্তাল দেশ

|
১২:১৮ এ.এম | ১৩ মার্চ ২০২৫


মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে সারা দেশ। ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে শনিবার মধ্যরাত থেকেই শুরু হয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলন। সড়কে নেমে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। এছাড়া রোববার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সারা দেশেই বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নারী অধিকার কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি রাজধানীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি ও বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরাও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। এসব সমাবেশ থেকে মাগুরায় শিশু ধর্ষণে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে আলটিমেটাম দেওয়া হয়। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে তীব্র প্রতিবাদ। পাশাপাশি আইনজীবীরাও আসামির পক্ষে না দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।  
এদিকে মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় সারা দেশ যখন উত্তাল, এমন পরিস্থিতির মধ্যেও ঢাকায় ঘটেছে গণধর্ষণের ঘটনা। এর আগে শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক কলেজছাত্রী। আবার একই দিন নরসিংদী থানাতেও দায়ের করা হয়েছে আরেকটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা।  
দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণেই যে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গেছে, তা বলাই বাহুল্য। এছাড়া ধর্ষণের মতো ঘটনায় বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ হওয়ার পাশাপাশি অতীতে দোষীদের যথাযোগ্য শাস্তি নিশ্চিত না হওয়াও এ ধরনের অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। আশার কথা, ধর্ষণ মামলার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তদন্ত ও বিচারের সময়ও অর্ধেকে নামিয়ে আনা হচ্ছে। এর ফলে ৯০ দিনের মধ্যে ধর্ষণ মামলার বিচারকাজ শেষ করা সম্ভব হবে। সব অংশীজনের সঙ্গে পরামর্শ করে আগামী সাত দিনের মধ্যে আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হবে বলে আশা করছে সরকার।
নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে দেশে প্রচলিত যেসব আইন রয়েছে, তা বারবার সংশোধন হলেই যে অপরাধের হার ও মাত্রা হ্রাস পায়, এমনটি নয়। বরং অপরাধের উপর্যুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হলেই সমাজে নজির সৃষ্টি হয় এবং এমন অপরাধে জড়াতে কেউ সাহস পায় না। কাজেই নারী নির্যাতন কিংবা ধর্ষণের ক্ষেত্রেই শুধু নয়, যে কোনো অপরাধে যদি অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে প্রচলিত আইন মোতাবেক শাস্তি নিশ্চিত করা যায়, তাহলে সমাজে অপরাধের মাত্রা অনেকাংশেই হ্রাস পাবে বলে মনে করি আমরা। সেই সঙ্গে নারী নির্যাতন তো বটেই, সব ধরণের অপরাধ কমাতে ধর্মীয় অনুশাসনও নিশ্চিত করা জরুরি। সব ধরনের প্রভাব ও মোহমুক্ত হয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকেও অপরাধ দমনে কার্যকর ভূমিকা পালনে গুরুত্ব দিতে হবে। সরকার সমাজে শান্তি ফেরাতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, এটাই প্রত্যাশা।

্রিন্ট

আরও সংবদ