খুলনা | শনিবার | ১৫ মার্চ ২০২৫ | ১ চৈত্র ১৪৩১

নিজের ফেসবুক আইডিতে অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা : অনুমতি না নিয়ে কানাডায় চলে যান কূটনীতিক হারুন

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অমান্য করে রাষ্ট্রদূতের ফেসবুকে পোস্ট, পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত

খবর প্রতিবেদন |
০১:২২ এ.এম | ১৫ মার্চ ২০২৫


মরক্কোয় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল-রশিদ ফেসবুকে অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করেছেন। শুক্রবার তিনি নিজের ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ সমালোচনা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হারুন আল-রশিদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
শুক্রবার প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রলালয় জানায়, মরক্কোতে বাংলাদেশের সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রদূত হারুন আল রশিদ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক গত ১১ ডিসেম্বর দেশে প্রত্যাবর্তন ও অনতি বিলম্বে মন্ত্রণালয়ে যোগদানের জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছিল। তা সত্তে¡ও তিনি তার পদে বহাল থেকে গত ২৭ ফেব্র“য়ারি দায়িত্ব ত্যাগ করেন।
মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশে ফিরে আসার পরিবর্তে, তিনি বিভিন্ন অজুহাতে তার যাত্রা বিলম্বিত করেন। মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমোদন ছাড়াই তিনি মরক্কোর রাবাত থেকে কানাডার অটোয়ায় চলে গেছেন বলে জানা গেছে। গত ৬ মার্চ তার অটোয়া থেকে ঢাকায় ফিরে আসার কথা থাকলেও তিনি ফেরত আসেননি।
মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, শুক্রবার হারুন ফেসবুকে ‘অ চষবধ ভড়ৎ ইধহমষধফবংয-ধহফ ভড়ৎ গুংবষভ ঝঁনলবপঃ: ইধহমষধফবংয’ং উবংপবহঃ রহঃড় অহধৎপযু ঁহফবৎ ণঁহঁং-ঞযব ডড়ৎষফ’ং ঝরষবহপব রং ঢ়ধরহভঁষ’ শীর্ষক একটি লেখা পোস্ট করেন। যেখানে তিনি পূর্ববর্তী ‘নিপীড়ক ফ্যাসিবাদী সরকারের’ গুণকীর্তনের পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে গত ৫ আগস্ট ২০২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে পরিস্থিতি ক্রমশ নৈরাজ্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে চিত্রিত করার অপচেষ্টা করেছেন। তার পোস্টে হারুন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাসহ বাংলাদেশের সামগ্রিক ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বর্তমান বাংলাদেশে বিরাজমান পরিস্থিতি এবং বাস্তবতাকে সম্পূর্ণরূপে বিকৃত উপস্থাপন করে ফেসবুকে এ ধরনের লেখা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য এবং এর বিষয়বস্তু গভীরভাবে উদ্বেগজনক। এরূপ রচনা লেখকের গোপন উদ্দেশ্য বা অসৎ অভিসন্ধির ইঙ্গিত দেয়।
বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন ও মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পরিবর্তে তিনি কানাডায় চলে যান এবং সেখান থেকে ফেসবুকে লেখালেখি শুরু করেন। তিনি তার ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে নিজেকে ‘নির্যাতিত ক‚টনীতিক’, ‘নির্বাসিত ঔপন্যাসিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ হিসেবে উলে­খ করেছেন, যা মূলত বিদেশে সহানুভূতি অর্জনের অভিপ্রায়ে করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে তাঁর এবং তার পরিবারের পাসপোর্টসমূহ বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। মন্ত্রণালয় মোহাম্মদ হারুন আল রশিদের এহেন কর্মকাণ্ডের জন্য প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
মন্ত্রণালয় তার কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারীর এ ধরনের কর্মকাণ্ড কোনোভাবে প্রশ্রয় দেয় না এবং ভবিষ্যতেও যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।  
শুক্রবার নিজের ফেসবুকে ইংরেজিতে একটি পোস্ট করেছেন ক‚টনীতিক হারুন আল রশিদ। সেই পোস্টে নিপীড়ক ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার সরকারের গুণকীর্তনের পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে পরিস্থিতি ক্রমশ নৈরাজ্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে চিত্রিত করার অপচেষ্টা করেছেন।
বৈধ সরকারকে উৎখাত করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতা দখলের অভিযোগ করেছেন।
পোস্টে হারুন আল রশিদ প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাসহ বাংলাদেশের সামগ্রিক ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার অপচেষ্টা করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বর্তমান বাংলাদেশে বিরাজমান পরিস্থিতি এবং বাস্তবতাকে সম্পূর্ণরূপে বিকৃত উপস্থাপন করে ফেসবুকে এ ধরনের লেখা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য এবং এর বিষয়বস্তু গভীরভাবে উদ্বেগজনক। এরূপ রচনা লেখকের গোপন উদ্দেশ্য বা অসৎ অভিসন্ধির ইঙ্গিত দেয়।
বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করে মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পরিবর্তে তিনি কানাডায় চলে যান এবং সেখান থেকে ফেসবুকে লেখালেখি শুরু করেন। তিনি তার ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে নিজেকে ‘নির্যাতিত ক‚টনীতিক’, ‘নির্বাসিত ঔপন্যাসিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ হিসেবে উলে­খ করেছেন, যা মূলত বিদেশে সহানুভূতি অর্জনের অভিপ্রায়ে করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে তার এবং তার পরিবারের পাসপোর্টসমূহ বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। মন্ত্রণালয় হারুন আল রশিদের এহেন কর্মকাণ্ডের জন্য প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
মন্ত্রণালয় তার কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারীর এ ধরনের কর্মকাণ্ড কোনোভাবে প্রশ্রয় দেয় না এবং ভবিষ্যতেও যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
উলে­খ্য, ফেসবুক পোস্ট দেওয়ার পর এ রিপোর্ট তৈরির সময়ও হারুন আল-রশিদের প্রোফাইলে মরক্কোয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে পরিচয় দেওয়া ছিল। সর্বশেষ গত ৪ আগস্ট ২০২৪ সালে সর্বশেষ ফেসবুক পোস্ট দেওয়ার পর গত সাত মাস আর কোনো পোস্ট দেননি। গত বৃহস্পতিবার তিনি আবার ফেসবুকে সক্রিয় হন।
হারুন শেখ হাসিনার সরকারের সময় ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তদানীন্তন বহিঃপ্রচার (বর্তমান জনক‚টনীতি) অনুবিভাগের মহাপরিচালক ছিলেন। তখন তিনি ‘রেণুর আবির্ভাব’ নামে শেখ হাসিনার মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে কেন্দ্র করে একটি উপন্যাস রচনা করেন, যা বই হিসেবে প্রকাশিত হয়। এরপর তাঁকে উপ-হাইকমিশনার হিসেবে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশ মিশনে পদায়ন করা হয়।

্রিন্ট

আরও সংবদ