খুলনা | শনিবার | ১৫ মার্চ ২০২৫ | ১ চৈত্র ১৪৩১

মধ্যরাতে মহাসড়কে অভিযানে ৩৭ লাখ টাকা জব্দ

প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বির পালক ছেলে এলজিইডি প্রকৌশলী আটক

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪০ এ.এম | ১৫ মার্চ ২০২৫


গাইবান্ধার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ছাবিউল ইসলামকে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকাসহ আটক করে পুলিশ। শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের চলনবিল গেট এলাকায় তল­াশিচৌকিতে ছাবিউল ইসলামের প্রাইভেট কার তল­াশি করে এসব টাকা পাওয়া যায়। পরে টাকা ও গাড়িসহ তাঁকে পুলিশ আটক করে থানা হেফাজতে নেয়।
জব্দ টাকা জমি বিক্রির বলে পুলিশকে জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলাম। তিনি গাইবান্ধা থেকে রাজশাহী নগরীর নিজ বাসায় যাচ্ছিলেন। শুক্রবার দুপুরে নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একরামুল হক সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।
একরামুল হক জানান, অপারেশন ডেভিল হান্টের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সিংড়া উপজেলার চলনবিল গেটে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কে তল­াশিচৌকি বসায় পুলিশ। এ সময় বগুড়া থেকে নাটোরগামী একটি প্রাইভেট কার থামিয়ে তল­াশি চালিয়ে পেছনের অংশ থেকে ৩৬ লাখ ৯৪ টাকা জব্দ করে পুলিশ। পরে জানা যায়, গাড়িটি গাইবান্ধা এলজিইডি প্রকৌশলীর। তিনি ওই প্রাইভেট কারে ছিলেন। অস্বাভাবিক টাকা নিয়ে ভ্রমণ ও টাকার উৎস জানতে তাঁকে সিংড়া থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। ওই নির্বাহী প্রকৌশলী জমি বিক্রির টাকা নিয়ে গাইবান্ধা থেকে ভাড়া করা প্রাইভেট কারে রাজশাহীর নিজ বাসায় যাচ্ছিলেন বলে দাবি করেন। তবে তাঁর কথায় অস্পষ্টতা থাকায় বিষয়টি অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) খবর দেওয়া হয়।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের চলনবিল গেট এলাকায় পুলিশের নিয়মিত চেকপোস্ট বসানো হয়। এ সময় সন্দেহভাজন একটি প্রাইভেটকারে তল­াশি চালিয়ে কালো ব্যাগ ভর্তি টাকা দেখতে পায় পুলিশ। গাড়ির আরোহীর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে গাইবান্ধার এলজিইডির নিবার্হী প্রকৌশলী বলে পরিচয় দেন। পরে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম গাড়িতে থাকা ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকাসহ বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় ওই প্রকৌশলীকে থানা পুলিশের হেফাজতে নেয়। এ সময় প্রাইভেট কারটি জব্দ করা হয়। 
সিংড়ার ইউএনও মাজহারুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি থানার ওসি তাকে জানালে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তিনি ঘটনাস্থলে যান। পরে উদ্ধারকৃত টাকাসহ গাড়িটি জব্দ করে থানায় নেয়া হয়। পরবর্তীতে আর কোন কিছু তার জানা নেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গাইবান্ধা এলজিইডির কর্মচারী বলেন, স্যার বৃহস্পতিবার হলেই সাদা মাইক্রোবাসটি নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান। পাঁচ দিন অফিস করে ঠিকাদারের কাছ থেকে কমিশন নেন। সেগুলো গাড়িতে করে বাড়ি নিয়ে যান।
ছাবিউল ইসলামের সহকারী রিয়াজ বলেন, ‘স্যার কি এই বৃহস্পতিবারই বাড়িতে টাকা নিয়ে গেছেন। বৃহস্পতিবার আসলেই স্যার কিছু না কিছু টাকা নিয়ে যান। আর এই টাকাগুলো তো স্যার একাই খান না। রাজশাহীতে নেতা ও ঢাকা অফিসে কিছু পাঠাতে হয় স্যারকে। আমি এইটুকু জানি।’
ছাবিউল ইসলাম দীর্ঘ ২১ বছর ধরে গাইবান্ধায় কর্মরত। প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বির পালক ছেলে হিসেবেই আওয়ামী লীগের সবাই জানার কারণে তিনি অনিয়ম দুর্নীতি করলেও তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ সাহস পাননি।

্রিন্ট

আরও সংবদ