খুলনা | মঙ্গলবার | ২২ এপ্রিল ২০২৫ | ৯ বৈশাখ ১৪৩২

তালায় প্রভাষক বিপ্লব হত্যাকান্ডে এমপি-এসপি ও দু’ওসিসহ ২২ জনের নামে এজাহার গ্রহণের নির্দেশ

তালা প্রতিনিধি |
০১:৪১ এ.এম | ১৮ মার্চ ২০২৫


দীর্ঘ ১১ বছর পর তালার শালিকা ডিগ্রী কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক ও জালালপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এস এম বিপ্লব কবির হত্যা মামলা ২৩ মার্চের মধ্যে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য ওসি তালা থানাকে নির্দেশ প্রদান করেছে আদালত। সাতক্ষীরা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-৩ এর বিচারক মোঃ মহিদুল হাসান সিআর ৮৪/২৫ মামলাটি শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। সাবেক পুলিশ সুপার সাতক্ষীরা চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, সাবেক এমপি এড. মোস্তফা লুৎফুল­াহ, সাবেক ওসি ডিবি এ কে এম আজমল হুদা, সাবেক ওসি তালা থানা আবু বক্কর সিদ্দিকীসহ ২২ জনের নামে মামলা রেকর্ড করার নির্দেশ প্রদান করেছেন আদালত। তবে আদালতের আদেশের কপি এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তালা থানায় পৌঁছায়নি।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, তালা থানার জালালপুর ইউনিয়নের দোহার গ্রামের মৃত শের আলী শেখের পুত্র প্রভাষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৫০) শালিকা ডিগ্রী কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। তাকে গত ১৮/৭/২০১৪ তারিখ রাত ১২টার দিকে ছবেদ মোড়লের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে মারপিট করে আধা মরা অবস্থায় আটুলিয়া নিয়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেয়। পরে রাত দুইটার দিকে ইসলামকাটি ব্রিজের পাশে যাত্রী ছাউনির সামনে সময় ফাঁকা জায়গায় গাড়ি থেকে নামিয়ে চোখ বাধা অবস্থায় পরপর দু’টি গুলি করে হত্যা করে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এ বিষয়ে ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে সাহস পাননি। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর এ হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় আসামি করা হয়েছে, সাবেক পুলিশ সুপার সাতক্ষীরা  চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, সাতক্ষীরা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সাবেক (ডিবি) ওসি একেএম আজমল হুদা,  ডিবি পুলিশের কনস্টেবল হাসিবুর রহমান, কনস্টেবল ফারুক চৌধুরী, কনস্টেবল রাসেল মাহমুদ, কনস্টেবল শিকদার মনিরুজ্জামান, তালা থানার সাবেক ওসি আবু বকর সিদ্দিক, তালা থানার সাবেক এস আই আকরাম হোসেন, তালা থানার সাবেক এএসআই গোলাম সরোয়ার, জালালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম মুক্তি, তালার শিবপুর গ্রামের শেখ আবু জাফর, দোহার গ্রামের যুবলীগ নেতা শাহিন শেখ, জালালপুর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি জালালপুর গ্রামের আমিরুল শেখ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী দোহার গ্রামে রুহুল আমিন শেখ মিন্টু, আওয়ামী লীগ নেতা দোহার গ্রামের শেখ আমজাদ আলী, যুবলীগ নেতা দোহার গ্রামের ইদ্রিস সরদার, আওয়ামী লীগ নেতা দোহার গ্রামের  কামরুল সরদার, যুবলীগ নেতা দোহার গ্রামের আক্তারুল সরদার, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সেক্রেটারী শ্রীমন্তকাটি গ্রামের মহিবুল­াহ মোড়ল, উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ কানাইদিয়া গ্রামের শেখ আনারুল ইসলাম ও জালালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আটঘরা গ্রামের রাম প্রসাদ দাশ ২২ জন ও অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনকে। ২২৮ তাং ১৬/৩/২০২৫ স্মারকে আদালত তালা থানা ওসি বরাবর আদেশের কপি প্রেরণ করেছেন। তবে তালা থানা ওসি শেখ শাহিনুর রহমান জানান, আদালতের আদেশের কপি তিনি পাননি বা এ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।
বাদী প্রভাষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, এলাকাবাসী প্রভাষক বিপ্লবকে গুলি করে হত্যার বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি। জনগণ ফুঁসে উঠেছিল খুনিদের বিরুদ্ধে কিন্তু কিছু করার ছিল না তাদের। কলেজের গণিত বিভাগের জনপ্রিয় একজন শিক্ষককে যারা খুন করালো তাদের সকলের নাম তিনি জীবনের নিরপত্তার কারণে অভিযোগ পত্রে দিতে পারেননি। তবে অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনকে আসামী শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে। ওই সকল কুচক্রী খুনিরা অজ্ঞাতনামার মধ্যে অভিযুক্ত হবেন।

্রিন্ট

আরও সংবদ