খুলনা | শুক্রবার | ০৯ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

কেশবপুরে সুদ খোরের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব খ্রিস্টান পরিবার

কেশবপুর প্রতিনিধি |
১১:৫৯ পি.এম | ২০ মার্চ ২০২৫


কেশবপুরে এবার সুদখোরের নিশানায় পড়ে পথে বসেছে এক খ্রিস্টান পরিবার। সুদখোরের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এ পর্যন্ত আসল টাকার কয়েক গুণ বেশি টাকা পরিশোধ করেও পার পায়নি ওই পরিবারটি। ব্যাংক চেক হাতিয়ে নিয়ে ১৫ লাখ টাকা লিখে মামলা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রতারণার অভিযোগে প্রতিকারের আশায় যশোর আদালতে স্টিফেন বিশ্বাস একটি মামলা করেছেন। যার নং- সি আর ১০/২৪।
জানা গেছে, কেশবপুর শহরের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত বাবুরাম বিশ্বাসের ছেলে স্টিফেন বিশ্বাস দীর্ঘদিন ধরে ফাস্ট চয়েজ ফ্যাশান এন্ড গার্মেন্টস নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন। ব্যবসায়িক প্রয়োজনে স্টিফেন বিশ্বাস ২০২০ সালে ০১ জুন কেশবপুর শহরের পুরাতন গরুহাটা সংলগ্ন তৃষা প্লাজা মার্কেটের মহসীন বেডিং এর প্রোপাইটর মহসীন খানের নিকট থেকে লাখে ১০ হাজার টাকা সুদ হিসাবে ৪ মাসের মধ্যে পরিশোধের শর্তে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। ইতিমধ্যে তিনি আসল টাকা দিতে ব্যর্থ হলে প্রায় ১ বছর চক্রবৃদ্ধি হারে সুদের টাকা প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা মহসীন খানকে দিয়েছেন। ১ বছর পর থেকে সুদের টাকাও দিতে ব্যর্থ হলে মহসীন খান স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে স্টিফেন বিশ্বাসের নিকট থেকে জোরপূর্বক ৩শ’ টাকার সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও সোনালী ব্যাংক কেশবপুর শাখার স্টিফেন বিশ্বাসের নিজ নামীয় হিসাব নং- ০০১০১৮৫২৬ এর ৬৯৮০০১৫ থেকে ১৮ নং পর্যন্ত চারটি চেকের পাতায় স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এরপর ২০২০ সালের ৩০ মে মহসীন খানের দোকানে গিয়ে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন স্টিফেন বিশ্বাস। এসময় স্বাক্ষী হিসেবে ছিলেন আশরাফ উজ জামান খান, উৎপল দে ও কেশবপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রভাষক মশিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এসময় সুচতুর মহসীন চেক ও স্ট্যাম্প বাড়িতে রয়েছে পরে দিবে বলে জানিয়ে তালবাহানা করে ফেরৎ না দিয়ে পরবর্তীতে উক্ত চেকে ১৫ লাখ টাকা লিখে ব্যাংক থেকে ডিজঅনার করিয়ে ভুক্তভোগী স্টিফেন বিশ্বাসের বাড়িতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। এরপর আদালতে এই দরিদ্র পরিবারের বিরুদ্ধে মহসীন খান তার স্ত্রী শাহনাজ পারভীনকে বাদি বানিয়ে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর যশোর আদালতে ১৫ লাখ টাকার মামলা করেন। শাহনাজ মহসীনের তৃতীয় স্ত্রী। টাকা নেয়ার সময় মহসীনের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলো। তার মৃত্যু হলে শাহনাজকে বিয়ে করে মহসীন।
সরজমিন পরিদর্শনে গিয়ে জানা গেছে, লেপ-তোশকের ব্যবসার আড়ালে মহসীন খান প্রভাবশালীদের হাত করে লাখে ১০ হাজার টাকা লাভ নিয়ে এলাকায় রমরমা সুদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের বিষয়ে মহসীন খান বলেন, আমার থেকে টাকা নিয়ে ফেরৎ দিয়েছে। চেক ও স্ট্যাম্প আমি ফেরৎ দিয়েছি। পরবর্তীতে আমার স্ত্রীর নিকট থেকে টাকা নিয়ে ফেরৎ দেয়নি যে কারনেণ আমার স্ত্রী আইনের আশ্রয় নিয়েছেন ।
স্টিফেন বিশ্বাস অভিযোগ করেন, আমি ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে এ পর্যন্ত ১৪ লক্ষ টাকা বেশি দিয়েছি। সুদাসলসহ আরও সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিয়েছি, কিন্তু মহসীন আমার চেক ও স্ট্যাম্প ফেরৎ না দিয়ে উল্টো মামলা করেছে। মামলা আর মহসীনের ভয়ে আমি সর্বশান্ত হয়ে পড়েছি। আত্মহত্যা ছাড়া বিকল্প পথ নেই আমার। সুদে কারবারি মহসীনের হাত থেকে বাঁচতে তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
 

্রিন্ট

আরও সংবদ