খুলনা | সোমবার | ৩১ মার্চ ২০২৫ | ১৭ চৈত্র ১৪৩১

ফিতরার গুরুত্ব

মুফতি রবিউল ইসলাম রাফে |
০২:০৮ এ.এম | ২৩ মার্চ ২০২৫


আজ ২২ রমজান। রমজান মাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো ফিতরা অর্থাৎ সদকাতুল ফিতর। অভাবী, গরীব-দুঃখীরাও যাতে ঈদের আনন্দে শরীক হতে পারে সে কারণে ঈদুল ফিতরের নামাজের পূর্বেই ফিতরা দেওয়া জরুরি। ফিতরা আসলে রোজার যাকাত। যাকাত যেমন মালকে পবিত্র করে ঠিক তেমনি ফিতরাও রোযাকে পবিত্র করে অর্থাৎ রোজায় যে সকল ত্র“টি-বিচ্যুতি হয় ফিতরা তার ক্ষতিপূরণ করে এবং সহীহভাবে রোজা আল­াহর দরবারে কবুল হয়। এ প্রসঙ্গে ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) সদকায়ে ফিতর নির্ধারণ করেছেন রোযাকে অনর্থক কথা ও অশ্লীল ব্যবহার হতে পবিত্র করার এবং গরীবের মুখে অন্ন দেওয়ার জন্য  (মেশকাতঃ আবু দাউদ)। ফিতরা আদায় করা সামর্থবানদের উপর ওয়াজিব। শরিয়তের পরিভাষায়, ঈদুল ফিতরের দিন সোবেহ সাদেকের সময় যার নিকট যাকাত ওয়াজিব হওয়া পরিমাণ অর্থ-সম্পদ থাকে শুধু তার উপরেই সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব। তবে যাকাতের নেছাবের ক্ষেত্রে ঘরের আসবাবপত্র বা ঘরের মূল্য ইত্যাদি হিসেবে ধরা হয় না, কিন্তু ফিতরার ক্ষেত্রে অত্যাবশ্যকীয়  আসবাবপত্র ব্যতীত অন্যান্য আসবাবপত্র, সৌখিন দ্রব্যাদি, খালি ঘর বা ভাড়ার ঘর (যার ভাড়ার উপর তার জীবিকা নির্ভরশীল নয়) এমন কিছুর মূল্যও হিসেবে ধরা হয়। অর্থাৎ গরীবের সাহায্য, সহযোগিতার দিকটাই এক্ষেত্রে বেশী প্রাধান্য পায়। ফিতরা শুধু রোজার সঙ্গেই সম্পর্কিত এবং তা ঈদের জামাতের পূর্বেই আদায় করা উত্তম। কারণ হাদিসে হুজুর (সাঃ) ঈদের নামাজের পূর্বেই তা দিতে বলেছেন। এক হাদিসে ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একবার তিনি রমজানের শেষের দিকে বললেন, তোমরা তোমাদের রোজার যাকাত (ফিতরা) আদায় কর। নবী করীম (সাঃ) প্রত্যেক স্বাধীন ব্যক্তি ও কৃতদাস, পুরুষ ও নারী, ছোট ও বড় সকলের উপর এই যাকাত এক সাআ খেজুর ও যব অথবা আধা সাআ গম (প্রায় ১ কেজি ৬৬২ গ্রাম)  নির্ধারণ করেছেন  (মেশকাতঃ আবু দাউদ, নাসায়ী)। তবে এটা হলো ন্যূনতম পরিমাণ। কেই ইচ্ছা করলে এর বেশীও দিতে পারে। এটা তার জন্য বাড়তি ছওয়াবের কারণ হবে। ফিতরা গরীব-নিঃস্বদের হক। এজন্য তা গরীবের মাঝে বন্টন করতে হবে। সর্বোপরি এটা রোজার যাবতীয় ভুল-ত্র“টির জন্য কাফফারা স্বরুপ। 
লেখক: আরবী সাহিত্যিক ও মুহাদ্দিস, জামি’য়া ইসলামিয়া মারকাযুল উলূম, বাগমারা, খুলনা।

্রিন্ট