খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৪ এপ্রিল ২০২৫ | ১১ বৈশাখ ১৪৩২

খুলনার শেখ বাড়ি ও সাবেক মেয়রের প্রভাবে আজাদ এখন কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:৪৩ এ.এম | ২৬ মার্চ ২০২৫


তৌহিদুল ইসলাম আজাদ শেখ বাড়ির ও সাবেক পলাতক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের প্রভাবে জমি কেনা, বালু ভরাট ও বিভিন্ন কাজে ব্যাপক অনিয়ম করে কোটি কোটি টাকা বাগিয়ে নিয়েছেন। খুলনা ও ঢাকায় রয়েছে তার আলিশান ফ্লাট, বাড়ি ও কয়েক একর জমি। গত ১৪ বছরে আজাদ সম্পদের পাহাড়ে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছেন। 
বিভিন্ন সূত্রের অভিযোগে জানা যায়, আজাদ খুলনার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য। তিনি যুবলীগ নেতা হাফিজের মাধ্যমে খুলনার বেসরকারি নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে জমি ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সুচতুর আজাদ উক্ত কমিটির অনেককে অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে নিয়েছে বলে অভিযোগে জানা গেছে। যার কারনে এখনো তা আলোর মুখ দেখেনি। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের লবিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সেখ মোঃ এনায়েতুল বাবরকে পুঁজি করে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমও ব্যাহত করছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের তালিকা করে খুলনা মেয়র অফিসে জমা দেবারও অভিযোগ রয়েছে। তার সহযোগী জেনারেল কম্পিউটারের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ ওবায়দুল­াহ ও পবিত্র কুমার সরকার।
আজাদ তার অবৈধ উপার্জনের অর্থের বিনিময়ে নগরীর সোনাডাঙ্গায় প্রতিষ্ঠা করেছেন খুলনা হেলথ কেয়ার হসপিটাল প্রাইভেট লিঃ নামের একটি বেসরকারি হাসপাতাল। যেখানে অভিজ্ঞতাহীন ডাক্তারদের দ্বারা অসহায় রোগীদের অপারেশন করিয়ে মোটা অংকের টাকা আয় করা অভিয়োগ রয়েছে। আজাদের রয়েছে একাধিক বাহিনী। সুচতুর আজাদ সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের প্রভাবে খুলনা ক্লাবেরও প্রভাবশালী সদস্য হয়েছেন। আজাদ ফ্যাসিস্ট সরকারের খুলনার প্রভাবশালীদের প্রভাবে নিজ ক্ষমতার দাপটে মাদক ব্যবসা ও নারী কেলেঙ্কারীর সাথে জড়িত ছিল বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। 
আজাদ রোড’স এন্ড হাইওয়ের একজন প্রভাবশালী ঠিকাদারও ছিলেন। শেখ বাড়ির ও পলাতক সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকর প্রভাব খাটিয়ে তিনি কোটি কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছে। আজাদ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার অপকর্ম ধরা পড়ার পর সেখান থেকে তিনি সরে আসেন। এর আগে তিনি রূপসা ঘাটে ফেরি ও নৌকা পারাপারের টাকা তুলতেন। কয়েক কোটি টাকা ব্যাংক লোন নিয়ে তা আত্মসাত করেছেন। খুনি এরশাদ শিকদারের পতন ও মৃত্যুর পরে আজাদ খুলনা ৪ ও ৫ নম্বর ঘাটের একক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় শেখ বাড়ি ও সাবেক মেয়রের প্রভাবে। তার বিরুদ্ধে খুলনা ঘাটে কার্গো বোঝাই সিমেন্ট লুটেরও অভিযোগ রয়েছে। অতি অল্প সময়ে সে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। খুলনা, ঢাকা মিলে আজাদের রয়েছে একাধিক বাড়ি ও অঢেল সম্পদ।  
নির্ভরযোগ্য কয়েকটি সূত্রের অভিযোগ জানা গেছে,  ঢাকার উত্তরা,  বসুন্ধরা ও ধানমন্ডিতে আজাদের অনেকগুলি বাড়ি, ও কয়েক একর জমির মালিক এই মোঃ তৌহিদুল ইসলাম আজাদ। আজাদের সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের আওয়ামী লীগ দলীয় প্রভাব থাকায় তখন তার এ সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেতো না। 
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আজাদ ঢাকায় কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকেন। বর্তমানে আজাদ বহাল তবিয়তে খুলনায় অবস্থান করলেও রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। 
সূত্র  জানায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যকে ম্যানেজ করে বুক ফুলিয়ে নির্বিঘেœ চলাচল করছে। আজাদ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরের শাসনামলে কেসিসির পলাতক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে টেন্ডারের মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকার রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণের নামে কোটি কোটি টাকা বাগিয়ে নিয়েছেন। তার মালিকানাধীন দি আজাদ ইঞ্জিনিয়ার্স, ৮৯, রেলওয়ে এপ্রোস রোড (স্টেশন রোড), খুলনা কে বর্তমানে  কালো তালিকায়ভুক্ত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। 
আজাদের ঢাকা অফিস ‘আলহামদুলিল­াহ’, ফ্লাট নং : এ-১, বাড়ি নং : ১৯, রোড নং : ৬/বি, সেক্টর : ১২, উত্তরা আবাসিক এলাকা, ঢাকা। এছাড়াও  তার রয়েছে বসুন্ধরা ও ধানমন্ডি এলাকায় আলিশান ফ্লাট ও বাড়ি। আজাদ খুলনা ও ঢাকায় অবৈধ উপার্জনের অর্থে কয়েক একর জমির মালিক বলে সূত্রের অভিযোগে জানা গেছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ