খুলনা | বুধবার | ০২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১

‘অফিসার্স এ্যাড্রেস’, কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সেনাপ্রধান

ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলার পরামর্শ

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪৫ এ.এম | ২৬ মার্চ ২০২৫


সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিষ্ঠা, পেশাদারত্ব ও ধৈর্যের প্রশংসা করেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর পরিশ্রমের জন্য তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এ ছাড়া পবিত্র রমজান মাসে সেনা সদস্যদের অব্যাহত প্রচেষ্টায় সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি সবাইকে সতর্ক করে বলেন, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচারের আশঙ্কা রয়েছে। এই সংকটময় সময়ে সবাইকে শান্ত থাকতে হবে।
সোমবার সকালে সেনাবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক বক্তব্যে এসব বিষয় তুলে ধরেন সেনাপ্রধান। ঢাকা সেনানিবাসে ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’ নামের এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সেনাবাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অন্য সব সেনা স্থাপনায় কর্মরত কর্মকর্তারাও ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
সোমবার রাতে জানতে চাইলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সামি উদ দৌলা চৌধুরী বলেন, ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’ সেনাবাহিনীর একটি নিয়মিত বিষয়।
অফিসার্স অ্যাড্রেসে উপস্থিত একটি সূত্র জানায়, বৈঠকে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, রমজানে অনেক সদস্যই ক্যাম্পের বাইরে ইফতার করছেন; তবু তাঁদের দায়িত্ব পালনে কোনো শিথিলতা আসেনি। তিনি সেনাবাহিনীর ধৈর্যশীলতা ও পেশাদারত্বের প্রশংসা করেন; যা বিভিন্ন উসকানির মধ্যেও অব্যাহত রয়েছে।
সেনাপ্রধান বলেন, সেনাবাহিনী কোনো অস্ত্রের যুদ্ধ নয়, বরং নৈতিকতা, প্রজ্ঞা, সম্মান ও হিকমার ওপর নির্ভর করে কাজ করে চলেছে। সেনাবাহিনীর চূড়ান্ত লক্ষ্যের কথা উলে­খ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিজয় হবে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করে শান্তিপূর্ণভাবে সেনানিবাসে ফিরে যাওয়া।’ উসকানিতে প্রভাবিত না হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহŸান জানান তিনি।
সেনাপ্রধান বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষা মিশনে অসাধারণ কাজের প্রশংসা করেছেন। একই সঙ্গে ৫ আগস্টের পর দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সামলানোর দক্ষতারও স্বীকৃতি দিয়েছেন। সেনাবাহিনীর পেশাদারত্ব আন্তর্জাতিক পর্যায়েও প্রশংসিত হচ্ছে।
উগ্রপন্থার উত্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সেনাপ্রধান বলেন, উগ্রপন্থীরা যাতে কোনো অস্বাভাবিক কিছু করার চেষ্টা করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি জাতীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ‘আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, তবে দেশকে কোনো ক্ষতি স্পর্শ করতে পারবে না।’
জেনারেল ওয়াকার বলেন, ‘উসকানিমূলক বক্তব্যে কেউ কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না। এতে উসকানিদাতারাই লাভবান হবে। ভুল তথ্য, অপতথ্য ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হবে। গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না। সবাইকে ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।’
দেশের অপরাধ পরিস্থিতি সম্পর্কে সেনাপ্রধান বলেন, অপরাধের হার পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় প্রায় একই থাকলেও দৃশ্যমান অপরাধ জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। তাই এসব অপরাধ প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। যেকোনো ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই দৃঢ়তা বজায় রাখতে হবে।
জুলাই অভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে জেনারেল ওয়াকার বলেন, সেনাবাহিনী তাঁদের জন্য অনেক কিছু করছে, বিনা মূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ দিচ্ছে। আহত শিক্ষার্থীদের আর্থিক সুবিধাও করা হবে।
সেনাপ্রধান দশম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের প্রশংসা করে বলেন, তারা প্রায় ৭০ হাজার মানুষের জন্য বিশাল ইফতারের আয়োজন করেছে। এসবই করা হয়েছে মানুষের কল্যাণের জন্য।
অপরাধের হার পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় প্রায় একই থাকলেও দৃশ্যমান অপরাধ জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে বলে জানান সেনাপ্রধান। তাই এসব অপরাধ প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন। যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই দৃঢ়তা বজায় রাখার কথা বলেন তিনি।  
 

্রিন্ট

আরও সংবদ