খুলনা | বুধবার | ০২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১

হাসপাতাল থেকে যে বার্তা তারকা ক্রিকেটারের

শঙ্কামুক্ত তামিম ইকবালকে ঢাকায় স্থানান্তর

ক্রীড়া প্রতিবেদক |
০১:৪৯ এ.এম | ২৬ মার্চ ২০২৫


অবশেষে এলো স্বস্তির খবর। এর আগে সোমবার সকালে হার্ট এ্যাটাক করে লাইফ সাপোর্ট পর্যন্ত যেতে হয়েছিল তামিম ইকবালকে। ডিপিএলের ম্যাচে খেলতে গিয়েছিলেন মাঠে আর দিন শেষ করেছিলেন হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে। হার্টে রিং পরানোর পর ডাক্তারদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত নন তিনি। যে কারণে তাকে রাখা হয়েছিল ডাক্তারদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে। অবশেষে মঙ্গলবার দুপুরে জানা গেল, শঙ্কা পেরিয়ে গেছেন তামিম ইকবাল। যে কোন সময় পরিবারের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে হাসপাতাল ছাড়তে পারবেন তিনি। 
সাভারের কেপিজে  হাসপাতালের পরিচালক ড. রাজীব হাসান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, একটা ক্রিটিক্যাল পিরিয়ডে তিনি ছিলেন। পুরোপুরি না হলেও এই ক্রিটিক্যাল পিরিয়ড পেরিয়ে এসেছি আমরা। উনি (তামিম) সুস্থ আছেন, খাওয়া দাওয়া করছেন। সবার সঙ্গে কথা বলছেন। আমরা খুব সুন্দর ভাবে উনাকে ছেড়ে দিতে পারব। কখন ছেড়ে দেব এটা উনাদের পারিবারিক সিদ্ধান্ত।
যদিও আপাতত মাঠে ফেরা হচ্ছে না তামিম ইকবালের। চিকিৎসকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে পরের তিন মাস পর্যবেক্ষণে থাকবেন তিনি, আগামী তিন মাস ওনাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। উনি নিজেই চেকআপে থাকবেন। ওনার হার্ট কি আরো ভালোর দিকে যাচ্ছে, নাকি খারাপের দিকে যাচ্ছে এসব পরীক্ষা নিরীক্ষায় উনি থাকবেন।
এদিকে গতকাল সকালে মোহামেডান ম্যানেজার সাজ্জাদ আহমেদ শিপন জানান, দুপুরে তামিম ইকবালের কিছু পরীক্ষা করানো হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে সন্ধ্যা বা রাতে বসুন্ধরায় অবস্থিত এভারকেয়ার হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হবে তাকে। 
ঢাকায় তামিম ইকবাল : শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও আগামী ৭২ ঘণ্টা তামিম ইকবাল চিকিৎসকদের তত্ত¡াবধানে থাকবেন বলে জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবু জাফর। একই সঙ্গে ওই সময়ের মধ্যে অন্য কোথাও তামিমকে স্থানান্তর করা ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলেও মন্তব্য করেছিলেন। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ই ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে এই ওপেনারকে। এর আগে সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে সাভার থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে রওনা হন তামিম। এরপর ৮.৩৭ মিনিটে তাকে বহনকারী এ্যাম্বুলেন্স এভারকেয়ার হাসপাতালে এসে পৌঁছায়। মূলত উন্নত চিকিৎসার জন্যই সাভার থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হলো তামিমকে।
ঢাকায় আনার পথে তামিমকে বহনকারী এ্যাম্বুলেন্সটিকে বেশ নিরাপত্তার বেষ্টনিতে রাখা হয়। এর আগে সাভারের কেপিজে হাসপাতালে তাকে এ্যাম্বুলেন্সে তোলার জন্য আনা হয় হুইলচেয়ারে করে। হার্ট এ্যাটাকের পর তখনই প্রথম প্রকাশ্যে দেখা যায় বাংলাদেশের সদ্য সাবেক এই তারকা ক্রিকেটারকে।
এর আগে বিকেলে তামিমকে দেখতে সাভারের কেপিজে হাসপাতালে গিয়েছিলেন মোহামেডানের পরিচালক মাসুদুজ্জামান। 
এ ছাড়া দুপুরে তামিম ইকবালের শারিরীক অবস্থার আপডেট জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ আবু জাফর বলেছিলেন, ‘তামিমের অবস্থা আগের চেয়ে অনেকটা ভালো। তামিম কথা বলছেন এবং খাওয়া-দাওয়া করছেন। হৃদরোগের ঝুঁকি থাকায় তাকে ৭২ ঘণ্টা হাসপাতালে চিকিৎসকদের তত্ত¡াবধানে থাকতে হবে। তামিমকে আগামী তিন মাস সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। এ সময় তিনি বাসায় অবস্থান করে স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারবেন। খেলায় ফেরার বিষয়ে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যাবে।’
যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তামিম : হাসপাতাল থেকে আজ নিজের শারিরীক অবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের পেজে একটি পোস্ট দিয়েছেন তামিম। সেখানে তামিম যা লিখেছেন তা হুবুহু তুলে ধরা হলো: 
দুই বছর আগে এই রোজার সময়েই অনুপের কাছে গিয়েছিলাম। সেদিন জানতে পারলাম, অনুপের বাবা ৪ বছরেও হার্টের অপারেশন করতে পারেননি। 
হৃদয়ের স্পন্দনই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। কিন্তু এই স্পন্দন যে কোন ঘোষণা না দিয়েই থেমে যেতে পারে, এই কথাটি আমরা বার বার ভুলে যাই। গতকাল দিনটি শুরু করার সময় কি আমি জানতাম, আমার সাথে কী হতে যাচ্ছে? 
আল­াহতা’আলার অশেষ রহমত আর সকলের দোয়ায় আমি ফিরে এসেছি। আমার সৌভাগ্য, এই বিপদের সময়ে আমি পাশে কিছু অসাধারণ মানুষকে পেয়েছিলাম, যাদের বিচক্ষণতা ও আপ্রাণ প্রচেষ্টায় আমি এই সংকট কাটিয়ে ফিরে এসেছি।
কিছু ঘটনা আমাদের বাস্তবতা মনে করিয়ে দেয়, জানিয়ে দেয় যে জীবন আসলে কতটা ছোট। আর এই ছোট জীবনে আর কিছু করতে না পারি, সবাই যেন একে অপরের বিপদে পাশে দাঁড়ায়, এটিই আমার অনুরোধ।
আপনাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা। সবাই আমার জন্য এবং আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন। আপনাদের ভালোবাসা ছাড়া আমি তামিম ইকবাল কিছুই না।
 

্রিন্ট

আরও সংবদ