পবিত্র ঈদুল ফিতরে টানা ৯ দিনের ছুটির তৃতীয় দিনেও সুন্দরবনে দর্শনীয় স্থানগুলোতে কানায় কানায় পূর্ণ পর্যটকে। বনের করমজলে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ভ্রমণ পিপাসু দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড়। এবারে আবহাওয়া অনুকূল আর রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় দীর্ঘদিন পর মন খুলে ঘুরতে পারছে দর্শনার্থীরা। গত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর পর্যটক বেড়েছে, রাজস্ব বেড়েছে কয়েক গুণ। আসছে বিদেশী পর্যটকও। 
সুন্দরবন করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, ঈদের ছুটিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছে হাজারও পর্যটক। এবারের ঈদে লম্বা ছুটিতে সুন্দরবনে এমনেই পর্যটকদের ঢল, তার মধ্যে সুন্দর এই সময়টা মনোরম পরিবেশে কাটানোর জন্য বনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র ঘুরতে আসছে দেশ-বিদেশী পর্যটকরাও। ঈদের দিন থেকে শুরু করে শুধু বনের করমজল পর্যটন স্পটেই নয়, সুন্দরবনের ৬টি স্থানই দেশ-বিদেশী পর্যটকে রয়েছে কানায় কানায় পূর্ণ। গত তিন দিনে করমজলেই ২০ হাজারের বেশী পর্যটকের আগমন ঘটেছে। 
দেশের যেকোনো জায়গা থেকে সবচেয়ে কাছের ও আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র হচ্ছে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র ও পর্যটক ষ্পট। আর এ স্থানটিই সবচেয়ে বেশি আগ্রহ ভ্রমণ পিপাসুদের। করমজল ছাড়াও বনের হাড়বাড়ীয়া, কটকা, কচিখালী, দুবলার আলোর কোল ও আন্ধারমানিকসহ অন্যান্য স্পটেও ঢল নেমেছে পর্যটকদের। করমজলে রয়েছে মায়াবি হরিণ, কুমির, বানর, কচ্ছপ, বিভিন্ন প্রজাতির পাখিসহ নানা প্রকারের বন্যপ্রাণী। বনের গহীনে এ প্রাণীদের কলকাকলীর ডাক শুনলে মন ভরে যায় দর্শনার্থীদের। তাই সুন্দরবনে সৌন্দর্য আর বন্যপ্রাণীর ডাক শোনার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মনোরম পরবেশে একটু সময় কাটানোর জন্য লাখো পর্যটক আসে সুন্দরবনে। কেউ আসছে সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে আবার কেউ আসছে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। বিশেষ করে করমজলে মায়াবি হরিণ, কুমির বানর, পাখিসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী দেখে মুগ্দ হয়েছে সুন্দরবনে আসা দর্শনার্থীরা। বনের গহীনের সৌন্দর্য দেখার জন্য টাওয়ারের ওপর থেকে ছাতার মতো বিস্তৃত বনের বিভিন্ন গাছপালা ঘুরে ঘুরে দেখেন তারা। 
পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, এবারের ঈদের ছুটিতে সুন্দরবনে পর্যটক আগমনের সংখ্যা বিগত সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ছুটির দিনেও পর্যটকদের নিরলস ভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন বনরক্ষীরা। টানা ৯ দিনের ছুটি ও বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত থাকায় পর্যটক আসা বেড়েছে বলে মনে করছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।