খুলনা | সোমবার | ০৭ এপ্রিল ২০২৫ | ২৪ চৈত্র ১৪৩১

এআই টেকনিশিয়ানদের ৭ দফা দাবি

খুলনায় চলছে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি, বন্ধের পথে খামারের সরকারি কৃত্তিম প্রজনন কার্যক্রম

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০২:১৭ এ.এম | ০৭ এপ্রিল ২০২৫


একই ইউনিয়নে একধিক এআইটি নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল, কৃত্রিম প্রজনন কাজে টার্গেট পূরণে বাধ্যবাধকতা শিথিল, চাহিদা মোতাবেক সিমেন সরবরাহ নিশ্চিতসহ ৭ দফা দাবিতে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছে প্রাণিসম্পদ এআই টেকনিশিয়ানরা। গত ১০ ফেব্র“য়ারি থেকে এ কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। 
তাদের অন্যান্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে সরকারি সিমেনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার রোধ, বেসরকারি এআই কর্মীদের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে মাসিক রিপোর্ট প্রদান ও সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী যোগ্য এআইটিদের এফএ (এআই) পদে নিয়োগ প্রদান তরান্বিত করতে হবে। এ কর্মবিরতিতে খুলনা জেলায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন তারা। 
বাংলাদেশে আমিষের বড় একটি চাহিদা পূরণ করে খামরের গরু অথবা মহিষ। একই সাথে পাওয়া যায় দুধের যোগান। বর্তমানে গরু বা মহিষের প্রজননের জন্য বেশিরভাগ খামারিদের নির্ভর করতে হয় কৃত্রিম পদ্ধতির ওপর। তার জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর তৈরি করেছে কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র। যেখান থেকে গবেষণার মাধ্যমে উন্নত জাতের গরুর সিমেন বা বির্জ্য তৈরি করে গাভীর শরীরে দেওয়া হয়। এই কাজ করার জন্য ১৯৯৬ সালে শুরু করা হয় ‘কৃত্রিম প্রজনন ও ব্র“ন স্থানান্তর প্রকল্প’। এ প্রকল্পে সারাদেশের ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত অস্থায়ী স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়োগ দিয়েছে অধিদপ্তর। বর্তমানে খুলনা জেলার ৭১ জন সহ সারাদেশে রয়েছেন প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কর্মী। যারা এই ব্র“ন স্থানান্তরের কাজটি করে থাকে। বর্তমানে এসব সেচ্ছাসেবীদের এআই টেকনিশিয়ান বলা হয়। তবে প্রকল্পটি শেষ করা হয়েছে ২০২৪ এর জুনে। 
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ এআই টেকনিশিয়ান কল্যাণ সমিতির খুলনা জেলা শাখার আহবায়ক শেখ হাসিবুর রহমান। ২০০৮ সালে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে চুক্তিতে যান তিনি। প্রথম ৫ বছর কোনো ভাতা দেওয়া হয়নি তাকে। পরবর্তীতে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে বর্তমানে দেওয়া হয় ২০০০ টাকা মাসিক ভাতা। তবে প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে তাদের এই ভাতাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রায় ১ বছর ধরে ভাতা না পেলেও তাদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। 
এই এআই টেকনিশিয়ান শেখ হাসিবুর রহমান সময়ের খবরকে বলেন, তাদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সকল এআইটি’দের ভাতা ২৫-৩০ হাজার টাকা করা হবে বলে জানানো হচ্ছে কয়েকবছর ধরে। তবে তা বস্তবায়নে কোনো পদক্ষেপ নেই। বেশ কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে কৃত্রিম প্রজননের জন্য। তারা কোনো নিয়ম কানুন না মেনেই কাজ করে যাচ্ছে।  এছাড়াও সরকারি কৃত্রিম প্রজনন নিয়ে নানা রকম খারাপ মন্তব্য করছে তারা। অথচ তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তাই সব মিলিয়ে কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন তারা। দেওয়া হয়েছে ৭ দফা দাবি। এছাড়াও এআই টেকনিশিয়ানদের চাকুরি স্থায়ী করার দাবি জানান তিনি। দাবি না মানা পর্যন্ত প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কৃত্রিম প্রজনন বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারী দিয়েছেন তারা। 
এ বিষয়ে খুলনা জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার রায় জানান, এআই টেকনিশিয়ানদের ৭ দফা দাবির বেশির ভাগই মেনে নেওয়া হয়েছে, তবে চাকুরি স্থায়ীকরণের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধন্ত নেওয়া হয়নি। এছাড়াও শেষ হওয়া প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে বর্তমান এআই টেকনিশিয়ানরা তাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করছেন না বলে জানান তিনি। 

্রিন্ট

আরও সংবদ