খুলনা | শুক্রবার | ২৭ জুন ২০২৫ | ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

বাগেরহাটে ঐতিহ্যবাহী খানজাহান আলীর মাজারে মেলা শুরু, ভক্তদের ঢল

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট |
০২:০৮ এ.এম | ১২ এপ্রিল ২০২৫


বাগেরহাটের ঐতিহ্যবাহী খানজাহান আলীর (রঃ) মাজারে তিন দিনব্যাপী বাৎসরিক মেলা শুরু হয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও চৈত্র মাসের পূর্ণিমা তিথি অনুযায়ী শুক্রবার ফজরের নামাজের পর থেকে মেলা শুরু হয়। এ উপলক্ষে সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার নারী পুরুষ মাজারে জড়ো হয়েছেন। 
বিকেলে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড় দেখা গেছে মাজার ও আশপাশ এলাকায়। এসব ভক্তরা তিন দিন মাজার এলাকায় অবস্থান করবেন। নিজের মনোবাসনা পূরণের আশায় স্রষ্টার আরাধনায় মগ্ন থাকবেন তারা। এই তিন দিন বাদ্যযন্ত্র নিয়ে লালন, মুর্শিদী, ভাটিয়ালী ও বিভিন্ন আধ্যাত্মিক গান পরিবেশন করবেন ভক্তরা। রাতভর লোকে-লোকারন্য থাকবে মাজার প্রাঙ্গণ। এছাড়া সারাদিন হাজার হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থী রোগ ও পাপ মুক্তির আশায় মাজার সংলগ্ন দীঘিতে গোসল করে থাকেন। আগত ভক্তদের বিশ্বাস এখানে এসে দোয়া করলে যে কোনো সমস্যার সমাধান মেলে। 
প্রায় সাড়ে ৬শ’ বছর ধরে খানজাহানের (রঃ) মাজারে এই মেলা চলে আসছে। এবার মেলায় বিশৃঙ্খলা এড়াতে জেলা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় ফকিরদের স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করছেন। মেলা উপলক্ষে ৫ শতাধিক মৌসুমি ব্যবসায়ী বিভিন্ন ধরনের পণ্যের পশরা সাজিয়ে বসেছেন। মেলায় আগত ভক্ত দর্শনার্থীরা ধর্মীয় প্রার্থনার পাশাপাশি কেনাকাটাও করছেন। এ দোকান থেকে ওদোকন ঘুরে নিজেদের পছন্দের পণ্য খুঁজছেন।
পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া থেকে আসা রফিক নামের এক দর্শনার্থী বলেন, অনেক দিন ধরে মাজার মেলায় আসি। এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের সাথে দেখা হয়। খুবই ভালো লাগে, এখানে যে দীঘি রয়েছে, সেখানে গোসল করলে আমাদের শান্তি লাগে। নুরুন্নাহার নামের এক নারী বলেন, ভোরে আসছি। রবিবার রাতে যাব। এখানে ভাই-বোনদের সাথে গান করব, সবাই মিলে প্রার্থনা করবো। আশাকরি মনের চাওয়া পূরণ হবে।
রবিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিক ভাবে এই মেলা শেষ হলেও, অনানুষ্ঠানিকভাবে মেলা থাকবে আরও এক সপ্তাহ পর্যন্ত। এই সময়ে ভক্ত ও দর্শনার্থীরা যেমন আসবেন ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য বিক্রয় করবেন। 
মাজারের অন্যতম খাদেম ও ষাটগম্বুজ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফকির তারিকুল ইসলাম বলেন, চৌদ্দশ’ খ্রিস্টাব্দে হযরত খানজাহান (রঃ) পুণ্যভূমি বাগেরহাটে আসেন। পাঁচশ’ বছর আগে থেকেই চৈত্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার ভক্ত আশেকানদের মাজারে সমাগম ঘটে। সেই থেকে ধারাবাহিকভাবে এটি চলে আসছে। তারা এখানে এসে মাজার জিয়ারত ও দীঘিতে গোসল করেন। তারা মনোবাসনা পূরণের জন্য আল্লার দরবারে কান্নাকাটি করেন। ভক্তরা এখানে জড়ো হয়ে তাদের মনোবাসনা পূরণের আশায় মিলিত হন। এখানে ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়। দক্ষিণাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী মেলা। মেলায় যাতে কোন বিশৃঙ্খলা না ঘটে সেজন্য প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ