খুলনা | শুক্রবার | ০৯ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মোংলা-রামপালে বোরো আবাদে বাম্পার ফলন

মাহমুদ হাসান, মোংলা |
১১:৫৫ পি.এম | ২৩ এপ্রিল ২০২৫


নানান প্রতিকূলতায় ও তীব্র লবণাক্ততার মধ্যেও বোরো আবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সরকারি প্রণোদনার সহায়তা পাওয়ায় কৃষকরা বোরো আবাদে বেশ আগ্রহী হওয়ার ফলে ফলনও পেয়েছে ভাল।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে মোংলা উপজেলা ৬টি ইউনিয়নের কিছু কিছু জায়গায় এবং রামপাল উপজেলার ১০ টি ইউনিয়ে মোট ৪ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রীড জাতের আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৯৭০ হেক্টর এবং উফশী জাতের আবাদ হয়েছে ৮৫০ হেক্টর জমিতে। এতে চাল উৎপাদন হবে মোট ২২ হাজার ৬৮৩ মেট্রিক টন।
অপরদিকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ দুই উপজেলার আমন ধানের আবাদ হয়েছিল ৮ হাজার ৪১৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাইব্রীড জাতের ধান আবাদ করা হয় ৮১০ হেক্টর, উফশী জাতের ৬ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে ও স্থানীয় জাতের ধানের আবাদ করা হয় ১ হাজার ২৯৫ হেক্টর জমিতে। এতে মোট চাল উৎপান হয় ২৪ হাজার ৪০৩ মেট্রিক টন।
এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, এখানে খাদ্য চাহিদা মোট ৩৬ হাজার ৮৭০ মেট্রিক টন চাল। আমন উৎপাদন ও বোরো উৎপাদন মিলিয়ে মোট উৎপাদন ৩৪ হাজার ৪৭৯ মেট্রিক টন চাল। উৎপাদনের বিপরীতে খাদ্যের চাহিদা বেশী থাকায় এ উপজেলায় খাদ্য ঘাটতি রয়েছে মোট ২ হাজার ৩৯১ টন (চাল)। 
কৃষি অফিস ও স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ১০ বছর পূর্বে এ উপজেলায় খাদ্য ঘাটতির ছিল অনেক। এই খাদ্য ঘাটতি কমেছে মূলত বেশকিছু পদক্ষেপের কারণে। কৃষকদের সচেতনতার কারণে এখন এ ঘাটতি পুসিয়ে কিছুটা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। সরকারের প্রচেষ্টায় কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ, বিনামূল্য কৃষকদের মাঝে লবণ সহিষ্ণু বীজ-সার সরবরাহ, মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা, রোগবালাই দমনে ও যথা সময়ে সেচ নিশ্চিত করা, জমির গুণাগুণ বুঝে সঠিক জাত নির্বাচন করাসহ নানানভাবে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের ফলে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে। সরকারের সহায়তা পেলে আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ২/১ বছরের মধ্যে এ দুই উপজেলা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা সম্ভব হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ওয়ালিউল ইসলাম জানান, আমরা চেষ্টা করছি কৃষিতে বিশেষ করে আমন ও বোরো ধান আবাদে বিপ্লব ঘটাতে। এ জন্যে সরকারি বেসরকারিভাবে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের পাশাপাশি তাদের প্রণোদোনার আওতায় এনে চাষাবাদ বাড়াতে চেষ্টা করছি। এ দুই উপজেলায় প্রচুর জমি পতিত অবস্থায় রয়েছে। সেগুলোতে আবাদ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এখানে চাষের বড় বাঁধা মিষ্টি পানির অভাব। কোথাও কোথাও আবাদি জমি পতিত অবস্থায় পড়ে আছে। এসব জমিতে পুকুর খনন করে বা গভীর নলকূপ স্থাপন করা গেলে এবং মিষ্টি পানির সরবরাহ বাড়ানো গেলে এখানে দ্বিগুণ ধান উৎপাদন করা সম্ভব। এ জন্যে সচেতনমহল, স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিনিধি ও কৃষকদের নিয়ে একটি দীর্ঘ মেয়াদী কর্ম পরিকল্পনা করতে পারলে আমরা ধান ও কৃষি ফলনে সফলতা অর্জন করতে পারবো। 
সরকারের সহায়তা আর কৃষকদের প্রচেষ্টা থাকলে এ দুই উপজেলায় মাছের পাশাপাশি লবণ সহিষ্ণু ধান ও কৃষি ফলনে অবদান রাখতে পারবো। আমরা আমাদের বাংলাদেশের কৃষকদের জন্যে আরো ভালো কিছু করতে চাই এমন মন্তব্য করেন এই কৃষি কর্মকর্তা।

্রিন্ট

আরও সংবদ