খুলনা | শুক্রবার | ২৫ এপ্রিল ২০২৫ | ১২ বৈশাখ ১৪৩২

সীমান্তে সেনা বাড়াচ্ছে পাকিস্তান আনা হচ্ছে যুদ্ধবিমান!

উত্তপ্ত পাকিস্তান ও ভারত সম্পর্ক

খবর প্রতিবেদন |
০১:৫৭ এ.এম | ২৫ এপ্রিল ২০২৫


ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার ঘটনায় বদলার আগুনে ফুঁসছে নয়াদিল্লি। ধীরে ধীরে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছে ভারত।  অন্যদিকে যুদ্ধের আশঙ্কায় পাল্টা প্রস্তুতি চালাচ্ছে ইসলামাবাদ। সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই সীমান্ত লাগোয়া ঘাঁটিগুলিতে সেনা সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে পাকিস্তান। সমাজমাধ্যমে এই খবর ছড়িয়ে পড়লেও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর তরফে অবশ্য এই নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
ভয়াবহ জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে সশস্ত্র হামলায় পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়। এর জেরে বৃহস্পতিবার পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে পাকিস্তান।
সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় ইসলামাবাদের সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধির প্রমাণ মিলেছে বিমান ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ‘ফ্লাইটরাডার২৪’-এর স্ক্রিনশট থেকে। এক্স হ্যান্ডলে সেগুলিকে ছড়িয়ে দেন নেটাগরিকদের একাংশ। ওই স্ক্রিনশট অনুযায়ী, করাচি বিমানঘাঁটি থেকে একের পর এক বিমান লাহোর এবং রাওয়ালপিন্ডির কাছে মোতায়েন করেছে ইসলামাবাদ। 
উল্লেখ্য, করাচির ‘সাউথ এয়ার কমান্ড’ থেকেই গোটা দক্ষিণাঞ্চলের যাবতীয় অপারেশন পরিচালনা করে পাকিস্তান বিমানবাহিনী। উত্তরাঞ্চলে ভারতের সীমান্তের কাছে ইসলামাবাদের মোট চারটি বিমানঘাঁটি রয়েছে। সেগুলি হল, লাহোর সংলগ্ন সারগোধা ও মুরিদ এবং রাওয়ালপিন্ডি সংলগ্ন চাকলালা ও নুর খান। এই ঘাঁটিগুলিকে পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর শিরদাঁড়া বলে মনে করেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা।
উল্লেখ্য, ভারত লাগোয়া ঘাঁটিগুলির মধ্যে লাহোর সংলগ্ন মুরিদে আবার মোতায়েন রয়েছে নজরদারি এবং হামলাকারী ড্রোন। কয়েক বছর আগে তুরস্কের থেকে বাইরাক্তার টিবি-২ নামের মানববিহীন উডুক্কু যান কেনে ইসলামাবাদ। সেগুলির প্রায় সবক’টি ওই ঘাঁটিতে মোতায়েন রয়েছে। ২০২০ সালে আর্মেনিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে আজারবাইজানের জয়ের নেপথ্যে বড় ভূমিকা নিয়েছিল এই ডোন।
বিমানঘাঁটির পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় (লাইন অফ কন্ট্রোল বা এলওসি) উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। সেখানকার বাঙ্কারগুলিতেও সেনাসংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। বিশ্লেষকদের দাবি, ভারতের সঙ্গে সম্মুখসমরে যেতে যে ইসালামাবাদ প্রস্তুত, এই সব পদক্ষেপেই রয়েছে তার ইঙ্গিত।
বিশ্লেষকদের দাবি, ২০১৯ সালের মতো ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রত্যাঘাত শানাবে বলে একরকম ধরেই নিয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। সেই জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে রাখছে তারা।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজ নাগরিকদের পাকিস্তান থেকে ফেরার পরামর্শ দেওয়ায় ভারত শিগগিরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে, গত মঙ্গলবার কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৫ ভারতীয় ও এক নেপালি নাগরিকের প্রাণহানির ঘটনার পর ভারতের পক্ষ থেকে বুধবার বেশ কিছু কূটনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘‘সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদে’’ সহায়তার অভিযোগ এনে দেশটির সঙ্গে স্বাক্ষরিত দীর্ঘদিনের সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত এবং উভয় দেশের মধ্যকার প্রধান স্থল সীমান্তও বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। পাশাপাশি পাকিস্তানি কূটনীতিকদের বহিষ্কার এবং ইসলামাবাদ থেকে ভারতীয় সামরিক উপদেষ্টাকে প্রত্যাহার ও হাইকমিশনে নিযুক্ত কর্মীদের সংখ্যা কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে দিল্লি।
ভারতের আকস্মিক এমন পদক্ষেপের পর বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি) জরুরি  বৈঠকে ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
মঙ্গলবার কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ের বাইসারান এলাকায় হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। এই ঘটনায় পাকিস্তানের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে ভারত। এছাড়া পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে দেশটি। একে সা¤প্রতিক সময়ে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা বলে অভিহিত করেছে ভারত। এই ঘটনায় সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে ভারতে ফিরেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। 
এতে করে দুই দেশের সম্পর্কে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর আগে, হামলার পর ভারতের পক্ষ থেকে বুধবার বেশ কিছু কূটনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ভারত পাকিস্তানকে “সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদে” সহায়তার অভিযোগ এনে পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করে এবং উভয় দেশের মধ্যকার প্রধান স্থল সীমান্তও বন্ধ করে দেয়। এছাড়া পাকিস্তানি কূটনীতিকদের বহিষ্কার এবং ভারতে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদের কিছু ভিসা বাতিল ও দুই দিনের মধ্যে তাদের ভারত ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়।
অন্যদিকে ভারত-শাসিত কাশ্মিরে বন্দুকধারীদের হামলার পর বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি) জরুরি বৈঠক বসে। মূলত ভারতের কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ার জবাব দিতেই পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ এই বৈঠক ডাকা। বৈঠকে সামরিক ও বেসামরিক শীর্ষ কর্মকর্তারা ছিলেন। কারণ এই ঘটনায় পাকিস্তানের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে ভারত। 
এছাড়া পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে ভারত। এতে করে দুই দেশের সম্পর্কে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। 
খবর : আনন্দবাজার পত্রিকা, আলজাজিরা।

্রিন্ট

আরও সংবদ