খুলনা | শনিবার | ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২

কুয়েটের ভিসি ও প্রো-ভিসিকে অব্যাহতি, প্রজ্ঞাপন জারি

খবর প্রতিবেদন |
১২:১৩ এ.এম | ২৬ এপ্রিল ২০২৫


রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য ড. মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য ড. শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত পৃথক পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে সিনিয়র সহকারী সচিব এ এস এম কাসেম সই করেন।

ভিসিকে অব্যাহতি দেয়ার প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলেরর অনুমোদনক্রমে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৩-এর ধারা ১০ (২) অনুযায়ী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর পদে ইতঃপূর্বে নিয়োগকৃত অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে তার নিজ বিভাগে প্রত্যাবর্তনের নিমিত্ত ভাইস-চ্যান্সেলর পদের আদেশ প্রত্যাহারপূর্বক তাকে উক্ত পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।

অপর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৩-এর ধারা ১২ (২) অনুযায়ী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইসচ্যান্সেলর পদে ইতঃপূর্বে নিয়োগকৃত অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলমকে তার নিজ বিভাগে প্রত্যাবর্তনের নিমিত্ত প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর পদের আদেশ প্রত্যাহারপূর্বক তাকে উক্ত পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।

প্রজ্ঞাপন দুইটিতে উল্লেখ করা হয়, জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে।

এর আগে, গত বুধবার দিবাগত রাতে কুয়েটের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মামুন অর রশিদের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অনতিবিলম্বে একটি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ দুটি পদে নতুন নিয়োগ প্রদান করা হবে। অন্তর্বর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকগণের মধ্য থেকে একজনকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব অর্পণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় অর্ধ-শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

তারপর ২০ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সব রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনকে ‘না’ বলে দেন শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তারা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।

পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর আবাসিক হল খুলে দেয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন।

এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গত রোববার (২০ এপ্রিল) উপাচার্যের পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়া হয়। বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগের ঘোষণা না আসায় অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা।

এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সি আর আবরার বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে কুয়েট ক্যাম্পাসে পৌঁছান। তবে দীর্ঘ সময় বুঝিয়েও তিনি অনশন ভাঙাতে পারেননি। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন।

এরপর বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেয়ার পাশাপাশি সব হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ মে শুরু হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়। আমরণ অনশন কর্মসূচির তৃতীয় দিনে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন অনেক শিক্ষার্থী। তবে উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন তারা।

এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) গঠন করা কমিটির তিন সদস্য কুয়েট ক্যাম্পাসে যায়। রাতে উপাচার্য ও উপ উপাচার্যের অপসারণের বার্তা দিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান।

্রিন্ট

আরও সংবদ