খুলনা | বুধবার | ৩০ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিলেন মোদি

‘হামলা চালানোর সবুজ সংকেত’

খবর ডেস্ক |
১১:১১ পি.এম | ২৯ এপ্রিল ২০২৫


জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে সামরিক পদক্ষেপের সবুজ সংকেত দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বন্দুকধারীদের হামলা ও এর সম্ভাব্য জবাব নিয়ে মঙ্গলবার দেশের তিন বাহিনীর প্রধান, চিফ অব ডিফেন্স অনীল চৌহান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদি। এ সময় এ স্বাধীনতা দেন। 
মোদির নয়াদিলি­র বাসভবনে সন্ধ্যায় বৈঠকটি হয়। আজ বুধবার মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির (সিসিএস) সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে তার। এর আগে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত ওই বৈঠকে মোদির বাসভবনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত সিং ও ক্ষমতাসীন বিজেপির আদর্শিক সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত।
ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানদের উদ্দেশ্যে মোদি বলেন, “সন্ত্রাসবাদের ধ্বংসাত্মক আঘাত ভারতের জাতীয় সংকল্প। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারত্বের সক্ষমতার ওপর তার পূর্ণ আস্থা আছে। তিনি সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানদের উদ্দেশ্যে বলেন, কবে-কখন লক্ষ্যে আঘাত হানতে হবে সে ব্যাপারে তাদের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।
একটি সূত্র এনডিটিভিকে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের ধ্বংসই ভারতের জাতীয় সংকল্প। এর মাধ্যমে মোদি জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সামরিক হামলা চালানোর ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে অপর একটি সূত্র।
সশস্ত্র বাহিনীর ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরই মোদির দিলি­র বাড়িতে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ওই হামলার পর পাকিস্তানকে দোষারোপ করে আসছে ভারত। যদিও পাকিস্তান এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। 
বুধবার বেলা ১১টায় মন্ত্রীসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির সঙ্গে বৈঠক করবেন মোদি। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সিসিএসের সঙ্গে বৈঠকের পর পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ, সিন্ধু নদের চুক্তি বাতিলসহ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। 
নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর রাজনীতি বিষয়ক কমিটির (সিসিপিএ) সঙ্গে আলোচনায় বসবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এই কমিটিতে আছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, যোগাযোগমন্ত্রী নিতিন গড়কড়ি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডা, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ এবং অন্যান্য জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীরা।
রাজনীতি বিষয়ক কমিটির বৈঠকের পর মোদি অর্থনীতি বিষয়ক কমিটির সঙ্গেও আলোচনায় যোগ দেবেন। 
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলা হয়। এতে ২৬ জন নিহত হয়। এ ঘটনায় পাকিস্তানকে দোষারোপ করে আসছে ভারত। যদিও পাকিস্তান এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
এর আগে ২০১৯ সালের ফেব্র“য়ারিতে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামাতে বন্দুকধারীদের হামলায় ৪০ ভারতীয় সেনা নিহত হয়। এরপর পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা চালানোর দাবি করে নয়াদিলি­। তারা বলেছিল, বালাকোটে জইস-ই মোহাম্মদ নামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর আস্তানা ছিল। যারা পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সহায়তায় নিজেদের পরিচালনা করে আসছিল এবং সেনাদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। 
সূত্র জানিয়েছে, ওই বৈঠকে মোদি পেহেলগামে বন্দুক হামলায় ২৬ পর্যটক নিহতের ঘটনায় সস্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নিতে সবুজ সংকেত দিয়েছেন। ২০১৯ সালের ফেব্র“য়ারিতে পুলওয়ামাতে হামলার পর কাশ্মীরের হামলাটি সবচেয়ে বড় ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
পুলওয়ামাতে হামলার পর ভারত পাকিস্তানের বালাকোটে সন্ত্রাসী ক্যাম্পে বিমান হামলা চালায়। ভারত দাবি করে, ওই ক্যাম্পটি নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের দ্বারা পরিচালিত ছিল এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের সহযোগিতা করেছে।
এ ঘটনার ঠিক ছয় বছর পর কাশ্মীরে হামলার ঘটনায় পাকিস্তান ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সংশ্লিষ্টতা আছে বলে তার একটি ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট হামলার দায় স্বীকার করেছে।
অন্যদিক নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বলেছে, কাশ্মীরে হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার একাধিক তথ্য রয়েছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ভারত।
পেহেলগামে হামলার পরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত। যার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানিদের ভারতীয় ভিসা বাতিল, তবে যেসব পাকিস্তানি হিন্দু দীর্ঘদিন ধরে ভারতে বসবাস করছে তাদের ক্ষেত্রে এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়নি। এছাড়া মেডিকেল ভিসাও বাতিল করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে সিন্ধু চুক্তি।
ভিসা বাতিলের পরই অনেক পাকিস্তানি আটারি ওয়াগা সীমান্ত দিয়ে নিজ দেশে চলে গেছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় এক হাজার পাকিস্তানি ভারত ছেড়েছে। এদিকে ভারতের পদক্ষেপের পর পাকিস্তানও ছেড়ে কথা বলেনি। তারাও ভারতীয় ভিসা বাতিল এবং আকাশ সীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে।
সংগঠনটির প্রধান আসিফ ফারুক বলেন, ভারতের নাগরিক হিসাবে কী দেশের যে কোনও জায়গায় গিয়ে কাজ করার বা ব্যবসা করার অধিকার নেই বাংলাভাষী আর মুসলমান বলে?

 সূত্র: এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, নিউজ নাউ।

্রিন্ট

আরও সংবদ