খুলনা | মঙ্গলবার | ০৬ মে ২০২৫ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

নিরাপত্তার চাদরে মোড়া থাকবে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ফিরোজা

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪৫ এ.এম | ০৬ মে ২০২৫


সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার পুত্রবধূ ডাঃ জুবাইদা রহমানের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। পাশাপাশি র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং বিশেষ শাখার (এসবি) সদস্যদেরও মোতায়েন করা হবে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএমপি সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশেষ সভা। সভায় র‌্যাব ও এসবি প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিলেন। 
এর আগে সকালে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভায় বিষয়টি উঠে আসে। সভা থেকে খালেদা-জুবাইদার জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএমপি কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
নিরাপত্তার পাশাপাশি যানজটের বিষয়টি মাথায় রেখে ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল এবং সিএনজি অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার গুলশানের এবং জুবাইদা রহমানের ধানমন্ডির বাসায় গাড়িবহর যাওয়ার জন্য ক্যান্টনমেন্টের রাস্তা ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হতে পারে। এছাড়া বিমানবন্দর-এক্সপ্রেসওয়ে এবং এক্সপ্রেসওয়ে-বিমানবন্দর রাস্তায় যানবাহনের চাপ কমাতে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় হালকা যানবাহন প্রবেশের জন্য বিশেষ অনুমতি চাইবে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। বাসভবনের পাশাপাশি বাইরে চলাফেরার ক্ষেত্রেও পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতা-কর্মীদের ঢল নামবে বলে জানা গেছে। এ বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীকে বিমানবন্দরে নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে নিরাপত্তার ছক তৈরি করেছে ডিএমপি। ডিএমপি জানিয়েছে, বিএনপি’র পক্ষ থেকে বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে যাবেন অনেকেই সেই বিষয়টি আমলে রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অপারেশন বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকেই পুলিশ বিমানবন্দরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। বিমানবন্দর ও চারপাশের সড়ক নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হবে। বিমানবন্দর ও আশপাশের ভবনগুলোর রুফটপে থাকবে পুলিশ মোতায়েন। এছাড়া ওই সব ভবনের সিসি ক্যামেরাই নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছে পুলিশ। এছাড়া পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক ওয়াকিটকিতে আশপাশের তথ্য ক্রাইম অ্যান্ড কন্ট্রোল বিভাগকে অবগত করবে।
সূত্র জানায়, বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে আশপাশে আগত নেতা-কর্মীদের সমবেত হতে দেবে না পুলিশ। তাদের মূল সড়কের একপাশে রাখা হবে। এছাড়া খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বিমানবন্দর থেকে ফিরোজা পর্যন্ত পুলিশ সড়ক কর্ডন (বেষ্টনী) করে রাখবে। গাড়িবহরের মধ্যে হঠাৎ করে যাতে কেউ প্রবেশ করতে না পারে সেদিকেও লক্ষ্য রাখবে পুলিশ।
গোয়েন্দা গুলশান-উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি করা হবে এবং মাঠেও ডিবির টিম কাজ করবে।
ট্রাফিক-উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোঃ আনোয়ার সাঈদ বলেন, সকাল ৭টা থেকে বিমানবন্দরে বিশেষ ডিউটি পালন করবে ট্রাফিক পুলিশ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া যে যে রুট ব্যবহার করবেন ওই রুটগুলো সাধারণের চলাচলে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। উৎসাহিত করা হয়েছে মানুষ যেন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করেন। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে পারে সে ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এছাড়া জরুরি কাজ ছাড়া উত্তরাতে সাধারণ মানুষ যেন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলাচল সীমিত করেন। অন্যদিকে, গাজীপুর থেকে যারা ঢাকায় আসবেন তারা যেন আব্দুল­াহপুর-গাবতলী সড়ক অথবা মেট্রোরেলে করে মিরপুরের সড়ক ব্যবহার করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জানতে চাইলে ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপ- কমিশনার (ডিসি) মোঃ মহিদুল ইসলাম বলেন, বিমানবন্দর থেকে আমাদের আওতাধীন এলাকায় উত্তরার সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদস্যসহ ২৭০ জন পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। শুধু বিমানবন্দরে থাকবে ৬০ জন পুলিশ সদস্য। বিভিন্ন ভবনের রুফটপে পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। নিরাপত্তার জন্য উত্তরায় বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট, পেট্রোলিং এবং সাদা পোশাকেও মোতায়েন থাকবে পুলিশ। এক কথায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। তারা যেন ব্যানার-ফেস্টুন যাই থাকুক না কেন মূল সড়কে না আসেন, ফুটপাতে থেকে যেন অভ্যর্থনা জানান।
জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার শেখ মোঃ সাজ্জাত আলী বলেন, খালেদা জিয়া এবং জুবাইদা রহমানের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।
তিনি বলেন, জুবাইদা রহমান অনেকদিন দেশের বাইরে (লন্ডন) আছেন। লন্ডনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিঃসন্দেহেই অনেক ভালো। তিনি দেশে ফেরার পর যেন ন্যূনতম নিরাপত্তাহীনতা বোধ না করেন সে অনুযায়ী নিরাপত্তা ছক প্রণয়ন করা হচ্ছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ