খুলনা | রবিবার | ১১ মে ২০২৫ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

ভারতের হামলায় মাসউদ আজহারের পরিবারের ১০ সদস্য নিহত

খবর প্রতিবেদন |
০৪:৪৪ পি.এম | ০৭ মে ২০২৫


পাকিস্তানে ভারতের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন জইশ-ই-মোহাম্মদের (জেইএম) প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা মাসউদ আজহারের পরিবারের ১০ সদস্য এবং চার ঘনিষ্ঠ সহযোগী।

আজ বুধবার (০৭ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত পাকিস্তানের যেসব লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায় তার মধ্যে ছিল বাহাওয়ালপুরে সুবাহান আল্লাহ মসজিদ। এই মসজিদ ও মাদ্রাসায় হামলায় তার পরিবারের ১০ সদস্য এবং চার ঘনিষ্ঠ সহযোগী নিহত হয়েছেন স্বীকার করেছেন মাসউদ আজহার।

নিহতদের মধ্যে ছিলেন মাসউদ আজহারের বড় বোন ও তার স্বামী, তার ভাতিজা ও তার স্ত্রী, একজন ভাগ্নি এবং পরিবারের আরও পাঁচজন শিশু।

বিবিসি উর্দু জানাচ্ছে, জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম) নামে যে ‘জঙ্গি’ সংগঠনের নেতৃত্ব দেন মাসউদ আজহার, বুধবার এক বিবৃতিতে তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

হামলায় আজহারের তিনজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং তাদের একজনের মা’ও নিহত হয়েছেন।

পাকিস্তানে বসবাসরত মাওলানা মাসউদ আজহার জাতিসংঘ ঘোষিত সন্ত্রাসী তালিকায় রয়েছেন।

জেইএম ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতশাসিত কাশ্মীরে একটি আত্মঘাতী হামলা চালায়, যেখানে ৪০ জন সৈন্য নিহত হয়। এই হামলা দুই প্রতিবেশী দেশকে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল।

হামলায় স্বজন হারানোর প্রতিক্রিয়ায় মৌলভি আজহার বলেন, ‘আমার মনে কোনো অনুশোচনা নেই, হতাশাও নেই। বরং, বারবার মনে হচ্ছে আমিও যেন এই ১৪ জনের সুখী কাফেলায় শামিল হতাম।’

তিনি বলেন, ‘তাদের বিদায়ের সময় এসে গিয়েছিল, কিন্তু আল্লাহ তাদের শহীদ করেছেন।’ আজহার হামলায় নিহতদের জানাজায় অংশ নিতে জনগণকে আহ্বান জানান।

যদিও এটি ওপেন সিক্রেট যে আজহার পাকিস্তানে অবস্থান করছেন। তবে ইসলামাবাদ বারবার দাবি করে এসেছে যে তারা তার অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানে না।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতশাসিত কাশ্মীরে একটি আত্মঘাতী হামলায় ভারতের আধাসামরিক বাহিনীর ৪০ জন সৈন্য নিহত হয়। ভারতের জাতীয় নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে ওই হামলা হয়। হামলার দায় স্বীকার করে নেয় পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী জয়শ-ই-মুহাম্মদ।

ওই সময় তীব্র ক্ষোভের মধ্যে পড়ে পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী। হামলার পর নয়াদিল্লি দাবি করে, তারা ‘সন্ত্রাসীদের’ আস্তানায় আঘাত হেনেছে এবং কয়েক ডজন ব্যক্তিকে হত্যা করেছে। যদিও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভারতের যুদ্ধবিমান একটা বনাঞ্চলে আঘাত হেনেছে এবং এতে কারো মৃত্যু হয়নি।

এদিকে দিল্লির বিমান হামলার জবাবে সীমান্তে ভারী গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। অন্তত ১০ জন নিহত এবং ৩২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা বিবিসিকে জানিয়েছেন, গুলিবর্ষণ সবচেয়ে বেশি হয়েছে পুঞ্চ এবং মেন্ধার এলাকায়। বাড়ি এবং দোকানপাটসহ অনেক ভবন গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পুঞ্চের স্থানীয় সাংবাদিক জামরুদ মুঘল ফোনে বিবিসিকে বলেন, ‘বুধবার রাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমরা বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। মানুষ পুরো রাত ঘুমাতে পারেনি। সবাই ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় পালিয়ে গেছে। আমাদের স্থানীয় হাসপাতাল এখন আহত মানুষে ভরে গেছে। ’

এদিকে পাকিস্তানের দাবি, ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানে সাধারণ নাগরিক ও মসজিদকে লক্ষ্যবস্তু করেছে ভারত। এক সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, ‘পাকিস্তানের মসজিদগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে ভারত। এটি মোদী সরকারের আমলে বেড়ে ওঠা সংকীর্ণ মানসিকতার প্রতিফলন— যেখানে সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে মুসলমানদের টার্গেট করা হচ্ছে। ’

যদিও ভারতের দাবি, তারা পারিপার্শ্বিক ক্ষয়ক্ষতি যতটা কম রেখে শুধুমাত্র ‘সন্ত্রাসবাদী’ ঘাঁটি ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ শিবিরেই এই হামলা চালিয়েছে। এ হামলাকে তারা ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ বলে বর্ণনা করছে।

দিল্লিতে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বুধবার (৭ মে) সকালে এ কথা জানানো হয়।

এদিকে ভারতের পাঁচ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান। যার মধ্যে রয়েছে ভূপাতিত ভারতীয় যুদ্ধবিমানের মধ্যে তিনটি রাফায়েল জেট, একটি মিগ-২৯ এবং একটি এসইউ বিমান, পাশাপাশি একটি হেরন যুদ্ধ ড্রোন।

তবে পাঁচটি নয়, তিনটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে স্বীকার করেছে নয়াদিল্লি।

্রিন্ট

আরও সংবদ